পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৫৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||নিশীথে|২৬৫}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
ছায়াঙ্কিত জ্যোৎস্না তাঁহার শীর্ণ মুখের উপর আসিয়া পড়িল। চারি দিক শান্ত নিস্তব্ধ; সেই ঘনগন্ধপূর্ণ ছায়ান্ধকারে এক পার্শ্বে নীরবে বসিয়া তাঁহার মুখের দিকে চাহিয়া আমার চোখে জল আসিল।
ৗনশীথে ૨છd:

ছায়াকিত জ্যোৎসনা তাঁহার শীর্ণ মাখের উপর আসিয়া পড়িল। চারি দিক শান্ত নিস্তখ; সেই ঘনগন্ধপণ ছায়ান্ধকারে এক পাবে নীরবে বসিয়া তাঁহার মাখের দিকে চাহিয়া আমার চোখে জল আসিল ।
আমি ধীরে ধীরে কাছের গোড়ায় আসিয়া দই হস্তে তাঁহার একটা উত্তপ্ত শীণ হাত তুলিয়া লইলাম। তিনি তাহাতে কোনো আপত্তি করিলেন না। কিছু ক্ষণ এইরুপ চুপ করিয়া বসিয়া থাকিয়া আমার হদয় কেমন উদবেলিত হইয়া উঠিল ; আমি বলিয়া উঠিলাম, "তোমার ভালোবাসা আমি কোনো কালে ভুলিব না।”
{{gap}}আমি ধীরে ধীরে কাছের গােড়ায় আসিয়া দুই হস্তে তাঁহার একটা উত্তপ্ত শীর্ণ হাত তুলিয়া লইলাম। তিনি তাহাতে কোনাে আপত্তি করিলেন না। কিছুক্ষণ এইরূপ চুপ করিয়া বসিয়া থাকিয়া আমার হদয় কেমন উদ্‌বেলিত হইয়া উঠিল; আমি বলিয়া উঠিলাম, “তােমার ভালােবাসা আমি কোনাে কালে ভুলিব না।”

তখনি কঝিলাম, কথাটা বলিবার কোনো আবশ্যক ছিল না। আমার দী হাসিয়া উঠিলেন। সে হাসিতে লন্জা ছিল, সুখ ছিল এবং কিঞ্চিৎ অবিশ্বাস ছিল, এবং উহার মধ্যে অনেকটা পরিমাণে পরিহাসের তীব্রতাও ছিল। প্রতিবাদস্বরপে একটি কথামাত্র না বলিয়া কেবল তাঁহার সেই হাসির বারা জানাইলেন, “কোনো কালে ভুলিবে না, ইহা কখনো সম্ভব নহে এবং আমি তাহা প্রত্যাশাও করি না।”
{{gap}}তখনি বুঝিলাম, কথাটা বলিবার কোনাে আবশ্যক ছিল না। আমার স্ত্রী হাসিয়া উঠিলেন। সে হাসিতে লজ্জা ছিল, সুখ ছিল এবং কিঞ্চিৎ অবিশ্বাস ছিল, এবং উহার মধ্যে অনেকটা পরিমাণে পরিহাসের তীব্রতাও ছিল। প্রতিবাদস্বরূপে একটি কথামাত্র না বলিয়া কেবল তাঁহার সেই হাসির দ্বারা জানাইলেন, “কোনাে কালে ভুলিবে না, ইহা কখনাে সম্ভব নহে এবং আমি তাহা প্রত্যাশাও করি না।”
সমিষ্ট সতীক্ষ হাসির ভয়েই আমি কখনো আমার স্মীর সঙ্গে রীতিমত প্রেমালাপ করিতে সাহস করি নাই। অসাক্ষাতে যে-সকল কথা মনে উদয় হইত, তাঁহার সম্মখে গেলেই সেগলাকে নিতান্ত বাজে কথা বলিয়া বোধ হইত। ছাপার অক্ষরে যে-সব কথা পড়িলে দুই চক্ষ বাহিয়া দর-দর ধারায় জল পড়িতে থাকে সেইগলো মখে বলিতে গেলে কেন যে হাস্যের উদ্রেক করে, এ পর্যন্ত বুঝিতে পারিলাম না।

বাদপ্রতিবাদ কথায় চলে কিন্তু হাসির উপরে তক চলে না, কাজেই চুপ করিয়া যাইতে হইল। জ্যোৎস্না উজ্জলতর হইয়া উঠিল, একটা কোকিল ক্ৰমাগতই কুহু কুহ ডাকিয়া অস্থির হইয়া গেল। আমি বসিয়া বসিয়া ভাবিতে লাগিলাম, এমন জ্যোৎস্নারাত্রেও কি পিকবধ বধির হইয়া আছে।
{{gap}}সুমিষ্ট সুতীক্ষ্ণ হাসির ভয়েই আমি কখনাে আমার স্ত্রীর সঙ্গে রীতিমত প্রেমালাপ করিতে সাহস করি নাই। অসাক্ষাতে যে-সকল কথা মনে উদয় হইত, তাঁহার সম্মুখে গেলেই সেগুলােকে নিতান্ত বাজে কথা বলিয়া বােধ হইত। ছাপার অক্ষরে যে-সব কথা পড়িলে দুই চক্ষু বাহিয়া দর-দর ধারায় জল পড়িতে থাকে সেইগুলা মুখে বলিতে গেলে কেন যে হাস্যের উদ্রেক করে, এ পর্যন্ত বুঝিতে পারিলাম না।
বহ চিকিৎসায় আমার স্ত্রীর রোগ-উপশমের কোনো লক্ষণ দেখা গেল না। ডাকার বলিল, “একবার বায় পরিবতন করিয়া দেখিলে ভালো হয়।” আমি সাঁকে লইয়া এলাহাবাদে গেলাম।

এইখানে দক্ষিণাবাব হঠাৎ থমকিয়া চুপ করিলেন। সন্দিগ্ধভাবে আমার মাখের দিকে চাহিলেন, তাহার পর দুই হাতের মধ্যে মাথা রাখিয়া ভাবিতে লাগিলেন। আমিও চুপ করিয়া রহিলাম। কুলুঙ্গিতে কেরোসিন মিট মিট করিয়া জনলিতে লাগিল এবং নিস্তবধ ঘরে মশার ভন ভন শব্দ সম্পেষ্ট হইয়া উঠিল। হঠাৎ মৌন ভঙ্গ করিয়া দক্ষিণাবাব বলিতে আরম্ভ করিলেন—
{{gap}}বাদপ্রতিবাদ কথায় চলে কিন্তু হাসির উপরে তর্ক চলে না, কাজেই চুপ করিয়া যাইতে হইল। জ্যোৎস্না উজ্জ্বলতর হইয়া উঠিল, একটা কোকিল ক্রমাগতই কুহু কুহ, ডাকিয়া অস্থির হইয়া গেল। আমি বসিয়া বসিয়া ভাবিতে লাগিলাম, এমন জ্যোৎস্নারাত্রেও কি পিকবধূ বধির হইয়া আছে।
সেখানে হারান ডাক্তার আমার সাঁকে চিকিৎসা করিতে লাগিলেন।

অবশেষে অনেককাল একভাবে কাটাইয়া ডাক্তারও বলিলেন, আমিও কঝিলাম এবং আমার স্মীও বঝিলেন যে, তাঁহার ব্যামো সারিবার নহে। তাঁহাকে চিররগণ হইয়াই কাটাইতে হইবে।
{{gap}}বহু চিকিৎসায় আমার স্ত্রীর রােগ-উপশমের কোনাে লক্ষণ দেখা গেল না। ডাক্তার বলিল, “একবার বায়ুপরিবর্তন করিয়া দেখিলে ভালাে হয়।” আমি স্ত্রীকে লইয়া এলাহাবাদে গেলাম।
তখন একদিন আমার স্মী আমাকে বলিলেন, “যখন ব্যামোও সারিবে না এবং শীঘ্ন আমার মরিবার আশাও নাই, তখন আর-কতদিন এই জীবনমতকে লইয়া কাটাইবে। তুমি আর-একটা বিবাহ করো।”


{{gap}}এইখানে দক্ষিণাবাবু হঠাৎ থমকিয়া চুপ করিলেন। সন্দিগ্ধভাবে আমার মুখের দিকে চাহিলেন, তাহার পর দুই হাতের মধ্যে মাথা রাখিয়া ভাবিতে লাগিলেন। আমিও চুপ করিয়া রহিলাম। কুলুঙ্গিতে কেরােসিন মিট্ মিট্ করিয়া জ্বলিতে লাগিল এবং নিস্তব্ধ ঘরে মশার ভন্ ভন্ শব্দ সুস্পষ্ট হইয়া উঠিল। হঠাৎ মৌন ভঙ্গ করিয়া দক্ষিণাবাবু বলিতে আরম্ভ করিলেন-

{{gap}}সেখানে হারান ডাক্তার আমার স্ত্রীকে চিকিৎসা করিতে লাগিলেন।

{{gap}}অবশেষে অনেককাল একভাবে কাটাইয়া ডাক্তারও বলিলেন, আমিও বুঝিলাম এবং আমার স্ত্রীও বুঝিলেন যে, তাঁহার ব্যামো সারিবার নহে। তাঁহাকে চিররুগ্‌ণ হইয়াই কাটাইতে হইবে।

{{gap}}তখন একদিন আমার স্ত্রী আমাকে বলিলেন, “যখন ব্যামােও সারিবে না এবং শীঘ্র আমার মরিবার আশাও নাই, তখন আর-কতদিন এই জীবন্‌মৃতকে লইয়া কাটাইবে। তুমি আর-একটা বিবাহ করাে।”
{{nop}}