পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৭১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|২৮২|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||দিদি|}}
Հե Հ গল্পগুচ্ছ

ग्निग्नि
প্রথম পরিচ্ছেদ
{{rh||প্রথম পরিচ্ছেদ|}}
পল্লীবাসিনী কোনো-এক হতভাগিনীর অন্যায়কারী অত্যাচারী স্বামীর দশকুতিসকল সবিস্তারে বর্ণনপবেক প্রতিবেশিনী তারা অত্যন্ত সংক্ষেপে নিজের রায় প্রকাশ করিয়া কহিল, এমন স্বামীর মুখে আগন।
পল্লীবাসিনী কোনাে-এক হতভাগিনীর অন্যায়কারী অত্যাচারী স্বামীর দুস্কৃতিসকল সবিস্তারে বর্ণনপূর্বক প্রতিবেশিনী তারা অত্যন্ত সংক্ষেপে নিজের রায় প্রকাশ করিয়া কহিল, এমন স্বামীর মুখে আগুন।

শনিয়া জয়গোপালবাবরে সন্ত্ৰী শশী অত্যন্ত পীড়া অনুভব করিল— স্বামীজাতির মুখে চুরাটের আগন ছাড়া অন্য কোনোপ্রকার আগন কোনো অবস্থাতেই কামনা করা সীজাতিকে শোভা পায় না।
{{gap}}শুনিয়া জয়গােপালবাবুর স্ত্রী শশী অত্যন্ত পীড়া অনুভব করিল—স্বামী-জাতির মুখে চুরুটের আগুন ছাড়া অন্য কোনােপ্রকার আগুন কোনাে অবস্থাতেই কামনা করা স্ত্রীজাতিকে শােভা পায় না।
অতএব এ সম্বন্ধে তিনি কিঞ্চিং সংকোচ প্রকাশ করাতে কঠিনহাদয় তারা বিগণ উৎসাহের সহিত কহিল, এমন স্বামী থাকার চেয়ে সাত-জন্ম বিধবা হওয়া ভালো। এই বলিয়া সে সভাভঙ্গ করিয়া চলিয়া গেল।

শশী মনে মনে কহিল, ‘স্বামীর এমন কোনো অপরাধ কলপনা করিতে পারি না, যাহাতে তাঁহার প্রতি মনের ভাব এত কঠিন হইয়া উঠিতে পারে।” এই কথা মনের মধ্যে জালোচনা করিতে করিতেই তাহার কোমল হৃদয়ের সমস্ত প্রীতিরস তাহার প্রবাসী স্বামীর অভিমুখে উচ্ছসিত হইয়া উঠিল ; শয্যাতলে তাহার স্বামী ষে অংশে শয়ন করিত সেই অংশের উপর বাহ প্রসারণ করিয়া পড়িয়া শান্য বালিশকে চুম্বন করিল, বালিশের মধ্যে স্বামীর মাথার আঘ্রাণ অনুভব করিল এবং বার রন্থ করিয়া কাঠের বাক্স হইতে স্বামীর একখানি বহনকালের লপ্তেপ্রায় ফোটোগ্রাফ এবং হাতের লেখা চিঠিগুলি বাহির করিয়া বসিল। সেদিনকার নিমন্তব্ধ মধ্যাহ্ন এইরপে নিভৃত কক্ষে নিজন চিন্তায় পরাতন মতিতে এবং বিষাদের আশ্রজেলে কাটিয়া গেল ।
{{gap}}অতএব এ সম্বন্ধে তিনি কিঞ্চিৎ সংকোচ প্রকাশ করাতে কঠিনহৃদয় তারা দ্বিগুণ উৎসাহের সহিত কহিল, এমন স্বামী থাকার চেয়ে সাত-জন্ম বিধবা হওয়া ভালাে। এই বলিয়া সে সভাভঙ্গ করিয়া চলিয়া গেল।
শশিকলা এবং জয়গোপালের যে নবদাপত্য তাহা নহে। বাল্যকালে বিবাহ হইয়াছিল, ইতিমধ্যে সন্তানাদিও হইয়াছে। উভয়ে বহুকাল একত্রে অবস্থান করিয়া, নিতান্ত সহজ সাধারণ ভাবেই দিন কাটিয়াছে। কোনো পক্ষেই অপরিমিত প্রেমোচ্ছাসের কোনো লক্ষণ দেখা যায় নাই। প্রায় ষোলো বৎসর একাদিক্ৰমে অবিচ্ছেদে যাপন করিয়া হঠাৎ কমবশে তাহার স্বামী বিদেশে চলিয়া যাওয়ার পর শশীর মনে একটা প্রবল প্রেমাবেগ জাগ্রত হইয়া উঠিল । বিরহের বারা বন্ধনে যতই টান পড়িল কোমল হৃদয়ে প্রেমের ফাঁস ততই শক্ত করিয়া আটিয়া ধরিল : ঢিলা অবস্থায় যাহার অস্তিত্ব অনুভব করিতে পারে নাই এখন তাহার বেদনা টন টন করিতে লাগিল। তাই আজ এত দিন পরে এত বয়সে, ছেলের মা হইয়া, শশী বসন্তমধ্যাহ্নে নিজান ঘরে বিরহশয্যায় উন্মেষিতযৌবনা নববধর সংখস্বপন দেখিতে লাগিল। যে প্রেম অজ্ঞাতভাবে জীবনের সম্মখে দিয়া প্রবাহিত হইয়া গিয়াছে সহসা আজ তাহারই কলগীতিশব্দে জাগ্রত হইয়া মনে মনে তাহারই উজান বাহিয়া দুই তীরে বহন দরে অনেক সোনার পরী অনেক কুঞ্জবন দেখিতে লাগিল—কিন্তু সেই অতীত সখসম্ভাবনার মধ্যে এখন আর পদাপশ করিবার স্থান নাই। মনে করিতে লাগিল, "এইবার যখন স্বামীকে নিকটে পাইব তখন জীবনকে নীরস এবং বসন্তকে নিম্ফল

{{gap}}শশী মনে মনে কহিল, ‘স্বামীর এমন কোনাে অপরাধ কল্পনা করিতে পারি না, যাহাতে তাঁহার প্রতি মনের ভাব এত কঠিন হইয়া উঠিতে পারে।' এই কথা মনের মধ্যে আলােচনা করিতে করিতেই তাহার কোমল হৃদয়ের সমস্ত প্রীতিরস তাহার প্রবাসী স্বামীর অভিমুখে উচ্ছ্বসিত হইয়া উঠিল; শয্যাতলে তাহার স্বামী যে অংশে শয়ন করিত সেই অংশের উপর বাহু প্রসারণ করিয়া পড়িয়া শূন্য বালিশকে চুম্বন করিল, বালিশের মধ্যে স্বামীর মাথার আঘ্রাণ অনুভব করিল এবং দ্বার রুদ্ধ করিয়া কাঠের বাক্স হইতে স্বামীর একখানি বহুকালের লুপ্তপ্রায় ফোটোগ্রাফ এবং হাতের লেখা চিঠিগলি বাহির করিয়া বসিল। সেদিনকার নিস্তব্ধ মধ্যাহ্ন এইরূপে নিভৃত কক্ষে নির্জন চিন্তায় পুরাতন স্মৃতিতে এবং বিষাদের অশ্রুজলে কাটিয়া গেল।

{{gap}}শশিকলা এবং জয়গােপালের যে নবদাম্পত্য তাহা নহে। বাল্যকালে বিবাহ হইয়াছিল, ইতিমধ্যে সন্তানাদিও হইয়াছে। উভয়ে বহুকাল একত্রে অবস্থান করিয়া, নিতান্ত সহজ সাধারণ ভাবেই দিন কাটিয়াছে। কোনাে পক্ষেই অপরিমিত প্রেমােচ্ছাসের কোনাে লক্ষণ দেখা যায় নাই। প্রায় ষােলাে বৎসর একাদিক্রমে অবিচ্ছেদে যাপন করিয়া হঠাৎ কর্মবশে তাহার স্বামী বিদেশে চলিয়া যাওয়ার পর শশীর মনে একটা প্রবল প্রেমাবেগ জাগ্রত হইয়া উঠিল। বিরহের দ্বারা বন্ধনে যতই টান পড়িল কোমল হৃদয়ে প্রেমের ফাঁস ততই শক্ত করিয়া আঁটিয়া ধরিল; ঢিলা অবস্থায় যাহার অস্তিত্ব অনুভব করিতে পারে নাই এখন তাহার বেদনা টন্ টন্ করিতে লাগিল।

{{gap}}তাই আজ এত দিন পরে এত বয়সে, ছেলের মা হইয়া, শশী বসন্তমধ্যাহ্নে নির্জন ঘরে বিরহশয্যায় উন্মেষিতযৌবনা নববধূর সুখস্বপ্ন দেখিতে লাগিল। যে প্রেম অজ্ঞাতভাবে জীবনের সম্মুখ দিয়া প্রবাহিত হইয়া গিয়াছে সহসা আজ তাহারই কলগীতিশব্দে জাগ্রত হইয়া মনে মনে তাহারই উজান বাহিয়া দুই তীরে বহু দূরে অনেক সােনার পুরী অনেক কুঞ্জবন দেখিতে লাগিল—কিন্তু সেই অতীত সুখসম্ভাবনার মধ্যে এখন আর পদার্পণ করিবার স্থান নাই। মনে করিতে লাগিল, ‘এইবার যখন স্বামীকে নিকটে পাইব তখন জীবনকে নীরস এবং বসন্তকে নিস্ফল