|
|
| পাতার অবস্থা | পাতার অবস্থা |
| - | মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
| + | মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে |
| শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): | শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): |
| ১ নং লাইন: |
১ নং লাইন: |
|
|
{{rh|২৯২|গল্পগুচ্ছ|}} |
| পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): |
| ১ নং লাইন: |
১ নং লাইন: |
|
⚫ |
বেষ্টন করিয়া সেই দড়ি কুন্দদন্তপংক্তিতে দংশন করিয়া ধরে, দুই বাহু ঊর্ধ্বে তুলিয়া মস্তকের পশ্চাতে বেণীগুলিকে দৃঢ় আকর্ষণে কুণ্ডলায়িত করে চুল বাঁধা শেষ করিয়া হাতের সমস্ত কাজ ফুরাইয়া যায়—তখন সে আলস্যভরে কোমল বিছানার উপরে আপনাকে পত্রান্তরালচ্যুত একটি জ্যোৎস্নালেখার মতাে বিস্তীর্ণ করিয়া দেয়। |
|
象>之 গল্পগুচ্ছ |
|
|
|
|
| ⚫ |
বেস্টন করিয়া সেই দড়ি কুন্দদন্তপংক্তিতে দংশন করিয়া ধরে, দই বাহ উধের্ম তুলিয়া মস্তকের পশ্চাতে বেণীগুলিকে দঢ় আকর্ষণে কুণ্ডলায়িত করে , চুল বাঁধা শেষ করিয়া হাতের সমস্ত কাজ ফরাইয়া যায়— তখন সে আলস্যভরে কোমল বিছানার উপরে আপনাকে পত্রান্তরালচু্যত একটি জ্যোৎস্নালেখার মতো বিস্তীর্ণ করিয়া দেয়। |
|
|
তাহার সন্তানাদি নাই, ধনিগহে তাহার কোনো কাজকর্মও নাই—সে কেবল নিজনে প্রতিদিন আপনার মধ্যে আপনি সঞ্চিত হইয়া শেষকালে আপনাকে আর ধারণ করিয়া রাখিতে পারিতেছে না। স্বামী আছে, কিন্তু স্বামী তাহার আয়ত্তের মধ্যে নাই। গিরিবালা বাল্যকাল হইতে যৌবনে এমন পণবিকশিত হইয়া উঠিয়াও কেমন করিয়া তাহার স্বামীর চক্ষ এড়াইয়া গেছে। |
|
{{gap}}তাহার সন্তানাদি নাই, ধনিগৃহে তাহার কোনাে কাজকর্মও নাই—সে কেবল নির্জনে প্রতিদিন আপনার মধ্যে আপনি সঞ্চিত হইয়া শেষকালে আপনাকে আর ধারণ করিয়া রাখিতে পারিতেছে না। স্বামী আছে, কিন্তু স্বামী তাহার আয়ত্তের মধ্যে নাই। গিরিবালা বাল্যকাল হইতে যৌবনে এমন পূর্ণবিকশিত হইয়া উঠিয়াও কেমন করিয়া তাহার স্বামীর চক্ষু এড়াইয়া গেছে। |
|
|
|
|
বরঞ্চ বাল্যকালে সে তাহার স্বামীর আদর পাইয়াছিল। স্বামী তখন ইস্কুল পালাইয়া, তাহার সাপ্ত অভিভাবকদিগকে বঞ্চনা করিয়া, নিজন মধ্যাহ্নে তাহার বালিকা সীর সহিত প্রণয়ালাপ করিতে আসিত। এক বাড়িতে থাকিয়াও শৌখিন চিঠির কাগজে মন্ত্রীর সহিত চিঠিপত্র-লেখালেখি করিত। ইসকুলের বিশেষ বন্ধ দিগকে সেইসমস্ত চিঠি দেখাইয়া গব অনুভব করিত। তুচ্ছ এবং কল্পিত কারণে সীর সহিত মান-অভিমানেরও অসদ্ভাব ছিল না । |
|
{{gap}}বরঞ্চ বাল্যকালে সে তাহার স্বামীর আদর পাইয়াছিল। স্বামী তখন ইস্কুল পালাইয়া, তাহার সুপ্ত অভিভাবকদিগকে বঞ্চনা করিয়া, নির্জন মধ্যাহ্নে তাহার বালিকা স্ত্রীর সহিত প্রণয়ালাপ করিতে আসিত। এক বাড়িতে থাকিয়াও শৌখিন চিঠির কাগজে স্ত্রীর সহিত চিঠিপত্র-লেখালেখি করিত। ইস্কুলের বিশেষ বন্ধুদিগকে সেই সমস্ত চিঠি দেখাইয়া গর্ব অনুভব করিত। তুচ্ছ এবং কম্পিত কারণে স্ত্রীর সহিত মান-অভিমানেরও অসদ্ভাব ছিল না। |
| ⚫ |
এমন সময়ে বাপের মৃত্যুতে গোপীনাথ স্বয়ং বাড়ির কত হইয়া উঠিল। কাঁচা কাঠের তক্তায় শীঘ্ৰ পোকা ধরে— কাঁচা বয়সে গোপীনাথ যখন সবাধীন হইয়া উঠিল তখন অনেকগুলি জীবজন্তু তাহার কন্ধে বাসা করিল। তখন ক্ৰমে অন্তঃপরে তাহার গতিবিধি হ্রাস হইয়া অন্যত্র প্রসারিত হইতে লাগিল । |
|
|
|
|
| ⚫ |
দলপতিত্বের একটা উত্তেজনা আছে ; মানুষের কাছে মানুষের নেশাটা অত্যন্ত বেশি। অসংখ্য মনুষ্যজীবন এবং সবিস্তীর্ণ ইতিহাসের উপর আপন প্রভাব বিস্তার করিবার প্রতি নেপোলিয়নের যে-একটা প্রবল আকষণ ছিল— একটি ছোটো বৈঠকখানার ছোটো কতটিরও নিজের ক্ষুদ্র দলের নেশা অলপতর পরিমাণে সেই একজাতীয়। সামান্য ইয়াকি-বন্ধনে আপনার চারি দিকে একটা লক্ষীছাড়া ইয়ারমণ্ডলী সজন করিয়া তুলিলে তাহদের উপর আধিপত্য এবং তাহাদের নিকট হইতে বাহবা লাভ করা একটা প্রচণ্ড উত্তেজনার কারণ হইয়া দাঁড়ায় ; সেজন্য অনেক লোক বিষয়নাশ, ঋণ, কলঙ্ক, সমস্তই স্বীকার করিতে প্রস্তুত হয়। |
|
|
⚫ |
{{gap}}এমন সময়ে বাপের মত্যুতে গােপীনাথ স্বয়ং বাড়ির কর্তা হইয়া উঠিল। কাঁচা কাঠের তক্তায় শীঘ্র পােকা ধরে—কাঁচা বয়সে গােপীনাথ যখন স্বাধীন হইয়া উঠিল তখন অনেকগুলি জীবজন্তু তাহার স্কন্ধে বাসা করিল। তখন ক্রমে অন্তঃপুরে তাহার গতিবিধি হ্রাস হইয়া অন্যত্র প্রসারিত হইতে লাগিল। |
| ⚫ |
গোপীনাথ তাহার ইয়ার-সম্প্রদায়ের অধ্যক্ষ হইয়া ভারি মাতিয়া উঠিল। সে প্রতিদিন ইয়াকির নব নব কাঁতি, নব নব গৌরবলাভ করিতে লাগিল। তাহার দলের লোক বলিতে লাগিল— শ্যালকবগের মধ্যে ইয়াকিতে অদ্বিতীয় খ্যাতিলাভ করিল গোপীনাথ। সেই গবে, সেই উত্তেজনায় অন্যান্য সমস্ত সুখ দুঃখ কতব্যের প্রতি অন্ধ হইয়া হতভাগ্য ব্যক্তিটি রায়িদিন আবতের মতো পাক খাইয়া-খাইয়া बिज़ारैंड लाशिलं । |
|
|
|
|
| ⚫ |
এ দিকে জগজয়ী রাপ লইয়া আপন অন্তঃপরের প্রজাহীন রাজ্যে, শয়নগহের শন্য সিংহাসনে গিরিবালা অধিষ্ঠান করিতে লাগিল। সে নিজে জানিত, বিধাতা তাহার হতে রাজদণ্ড দিয়াছেন—সে জানিত, প্রাচীরের ছিদ্ৰ দিয়া যে বহৎ জগৎখানি দেখা যাইতেছে সেই জগৎটিকে সে কটাক্ষে জয় করিয়া আসিতে পারে-- অথচ বিশ্বসংসারের মধ্যে একটি মানুষকেও সে বন্দী করিতে পারে নাই। |
|
|
⚫ |
{{gap}}দলপতিত্বের একটা উত্তেজনা আছে; মানুষের কাছে মানুষের নেশাটা অত্যন্ত বেশি। অসংখ্য মনুষ্যজীবন এবং সুবিস্তীর্ণ ইতিহাসের উপর আপন প্রভাব বিস্তার করিবার প্রতি নেপােলিয়নের যে-একটা প্রবল আকর্ষণ ছিল—একটি ছােটো বৈঠক খানার ছােটো কর্তাটিরও নিজের ক্ষুদ্র দলের নেশা অল্পতর পরিমাণে সেই একজাতীয়। সামান্য ইয়ার্কি-বন্ধনে আপনার চারি দিকে একটা লক্ষীছাড়া ইয়ারমণ্ডলী সৃজন করিয়া তুলিলে তাহাদের উপর আধিপত্য এবং তাহাদের নিকট হইতে বাহবা লাভ করা একটা প্রচণ্ড উত্তেজনার কারণ হইয়া দাঁড়ায়; সেজন্য অনেক লােক বিষয়-নাশ, ঋণ, কলঙ্ক, সমস্তই স্বীকার করিতে প্রস্তুত হয়। |
|
|
|
|
⚫ |
{{gap}}গােপীনাথ তাহার ইয়ার-সম্প্রদায়ের অধ্যক্ষ হইয়া ভারি মাতিয়া উঠিল। সে প্রতিদিন ইয়ার্কির নব নব কীর্তি, নব নব গৌরবলাভ করিতে লাগিল। তাহার দলের লােক বলিতে লাগিল-শ্যালকবর্গের মধ্যে ইয়ার্কিতে অদ্বিতীয় খ্যাতিলাভ করিল গােপীনাথ। সেই গর্বে, সেই উত্তেজনায় অন্যান্য সমস্ত সুখ দুঃখ কর্তব্যের প্রতি অন্ধ হইয়া হতভাগ্য ব্যক্তিটি রাত্রিদিন আবর্তের মতাে পাক খাইয়া-খাইয়া বেড়াইতে লাগিল। |
|
|
|
|
⚫ |
{{gap}}এ দিকে জগজ্জয়ী রূপ লইয়া আপন অন্তঃপুরের প্রজাহীন রাজ্যে, শয়নগৃহের শূন্য সিংহাসনে গিরিবালা অধিষ্ঠান করিতে লাগিল। সে নিজে জানিত, বিধাতা তাহার হস্তে রাজদণ্ড দিয়াছেন—সে জানিত, প্রাচীরের ছিদ্র দিয়া যে বৃহৎ জগৎখানি দেখা যাইতেছে সেই জগৎটিকে সে কটাক্ষে জয় করিয়া আসিতে পারে—অথচ বিশ্বসংসারের মধ্যে একটি মানুষকেও সে বন্দী করিতে পারে নাই। |
|
|
{{nop}} |
