পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮২: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা |
|||
পাতার অবস্থা | পাতার অবস্থা | ||
- | + | মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে | |
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): | শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): | ||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
{{rh||মানভঞ্জন|২৯৩}} |
|||
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | ||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
⚫ | {{gap}}গিরিবালার একটি সুরসিকা দাসী আছে, তাহার নাম সুধাে, অর্থাৎ সুধামুখী; সে গান গাহিত, নাচিত, ছড়া কাটিত, প্রভুপত্নীর রূপের ব্যাখ্যা করিত; এবং অরসিকের হস্তে এমন রূপ নিস্ফল হইল বলিয়া আক্ষেপ করিত। গিরিবালার যখন-তখন এই সুধােকে নহিলে চলিত না। উল্টিয়া পাল্টিয়া সে নিজের মুখের শ্রী, দেহের গঠন, বর্ণের উজ্জলতা সম্বন্ধে বিস্তৃত সমালােচনা শুনিত; মাঝে মাঝে তাহার প্রতিবাদ করিত এবং পরমপুলকিতচিত্তে সুধােকে মিথ্যাবাদিনী চাটুভাষিণী বলিয়া গঞ্জনা করিতে ছাড়িত না—সুধাে তখন শত শত শপথ-সহকারে নিজের মতের অকৃত্রিমতা প্রমাণ করিতে বসিত, গিরিবালার পক্ষে তাহা বিশ্বাস করা নিতান্ত কঠিন হইত না। |
||
মানভঞ্জন ఫిషిళి |
|||
⚫ | গিরিবালার একটি |
||
{{gap}}সুধাে গিরিবালাকে গান শুনাইত—‘দাসখত দিলাম লিখে শ্রীচরণে’; এই গানের মধ্যে গিরিবালা নিজের অলক্তাঙ্কিত অনিন্দ্যসুন্দর চরণপল্লবের স্তব শুনিতে পাইত এবং একটি পদলুণ্ঠিত দাসের ছবি তাহার কল্পনায় উদিত হইত। কিন্তু হায়, দুটি শ্রীচরণ মলের শব্দে শূন্য ছাতের উপরে আপন জয়গান ঝংকৃত করিয়া বেড়ায়, তবু কোনাে স্বেচ্ছাবিক্রীত ভক্ত আসিয়া দাসখত লিখিয়া দিয়া যায় না। |
|||
{{gap}}গােপীনাথ যাহাকে দাসখত লিখিয়া দিয়াছে তাহার নাম লবঙ্গ-সে থিয়েটারে অভিনয় করে—সে স্টেজের উপর চমৎকার মূর্ছা যাইতে পারে—সে যখন সানুনাসিক কৃত্রিম কাঁদুনির স্বরে হাঁপাইয়া-হাঁপাইয়া টানিয়া-টানিয়া আধ-আধ উচ্চারণে “প্রাণনাথ” “প্রাণেশ্বর” করিয়া ডাক ছাড়িতে থাকে তখন পাৎলা ধুতির উপর ওয়েস্ট্কোট-পরা, ফুল্মোজামণ্ডিত দর্শকমণ্ডলী “এক্সেলেন্ট্” “এক্সেলেন্ট্” করিয়া উচ্ছ্বসিত হইয়া উঠে। |
|||
⚫ | এই অভিনেত্রী লবঙ্গের অত্যাশ্চর্য ক্ষমতার বর্ণনা গিরিবালা |
||
⚫ | অবশেষে সে একদিন টাকা দিয়া |
||
⚫ | {{gap}}এই অভিনেত্রী লবঙ্গের অত্যাশ্চর্য ক্ষমতার বর্ণনা গিরিবালা ইতিপূর্বে অনেকবার তাহার স্বামীর মুখেই শুনিয়াছে। তখনও তাহার স্বামী সম্পূর্ণরূপে পলাতক হয় নাই। তখন সে তাহার স্বামীর মােহাবস্থা না জানিয়াও মনে মনে অসূয়া অনুভব করিত। আর কোনাে নারীর এমন কোনাে মনােরঞ্জিনী বিদ্যা আছে যাহা তাহার নাই ইহা সে সহ্য করিতে পারিত না। সাসূয় কৌতূহলে সে অনেকবার থিয়েটার দেখিতে যাইবার ইচ্ছা প্রকাশ করিত, কিন্তু কিছুতেই স্বামীর মত করিতে পারিত না। |
||
⚫ | কিন্তু যখন তাহার স্বামী বন্ধন ছিন্ন করিয়া গেল তখন তাহার মনে সংশয় উপস্থিত হইল। |
||
⚫ | |||
⚫ | {{gap}}অবশেষে সে একদিন টাকা দিয়া সুধােকে থিয়েটার দেখিতে পাঠাইয়া দিল; সুধো আসিয়া নাসা ভ্রূ কুঞ্চিত করিয়া রামনাম উচ্চারণ-পূর্বক অভিনেত্রীদিগের ললাটদেশে সম্মার্জনীর ব্যবস্থা করিল—এবং তাহাদের কদর্য মূর্তি ও কৃত্রিম ভঙ্গীতে যে-সমস্ত পুরুষের অভিরুচি জন্মে, তাহাদের সম্বন্ধেও সেই একই রূপ বিধান স্থির করিল। শুনিয়া গিরিবালা বিশেষ আশ্বস্ত হইল। |
||
⚫ | {{gap}}কিন্তু যখন তাহার স্বামী বন্ধন ছিন্ন করিয়া গেল তখন তাহার মনে সংশয় উপস্থিত হইল। সুধাের কথায় অবিশ্বাস প্রকাশ করিলে সুধো গিরির গা ছুঁইয়া বারম্বার কহিল, বস্ত্রখণ্ডাবৃত দগ্ধকাষ্ঠের মতাে তাহার নীরস এবং কুৎসিত চেহারা। গিরি তাহার আকর্ষণী শক্তির কোনাে কারণ নির্ণয় করিতে পারিল না এবং নিজের অভিমানে সাংঘাতিক আঘাত প্রাপ্ত হইয়া জ্বলিতে লাগিল। |
||
⚫ |