পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|২১৮|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
অপেক্ষা করিয়া অবশেষে এক নূতন অভিনেত্রীকে মনােরমার অংশ অভ্যাস করাইয়া লইল—তাহাতে তাহাদের অভিনয়ের সময় পিছাইয়া গেল।
S為bf গল্পগুচ্ছ

অপেক্ষা করিয়া অবশেষে এক নতন অভিনেত্রীকে মনোরমার অংশ অভ্যাস করাইয়া লইল— তাহাতে তাহাদেৱ-অভিনয়ের সময় পিছাইয়া গেল।
কিন্তু বিশেষ ক্ষতি হইল না। অভিনয়স্থলে দশক আর ধরে না। শত শত লোক বার হইতে ফিরিয়া যায়। কাগজেও প্রশংসার সীমা নাই।
{{gap}}কিন্তু বিশেষ ক্ষতি হইল না। অভিনয়স্থলে দর্শক আর ধরে না। শত শত লােক দ্বার হইতে ফিরিয়া যায়। কাগজেও প্রশংসার সীমা নাই॥

সে প্রশংসা দরদেশে গোপীনাথের কানে গেল। সে আর থাকিতে পারিল না। বিদ্বেষে এবং কৌতুহলে পণ্য হইয়া সে অভিনয় দেখিতে আসিল ।
{{gap}}সে প্রশংসা দূরদেশে গােপীনাথের কানে গেল। সে আর থাকিতে পারিল না। বিদ্বেষে এবং কৌতূহলে পূর্ণ হইয়া সে অভিনয় দেখিতে আসিল।
প্রথম পট-উৎক্ষেপে অভিনয়ের আরম্ভভাগে মনোরমা দীনহীনবেশে দাসীর মতো তাহার শবশরেবাড়িতে থাকে—প্রচ্ছন্ন বিনম্ন সংকুচিত-ভাবে সে আপনার কাজকর্ম করে—তাহার মুখে কথা নাই, এবং তাহার মখ ভালো করিয়া দেখাই যায় না।

অভিনয়ের শেষাংশে মনোরমাকে পিতৃগহে পঠাইয়া তাহার স্বামী অথলোভে কোনো-এক লক্ষপতির একমাত্র কন্যাকে বিবাহ করিতে উদ্যত হইয়াছে। বিবাহের পর বাসরঘরে যখন স্বামী নিরীক্ষণ করিয়া দেখিল তখন দেখিতে পাইল— এও সেই মনোরমা, কেবল সেই দাসীবেশ নাই-আজ সে রাজকন্যা সাজিয়াছে, তাহার নিরপেম সৌন্দয আভরণে ঐশ্ববষে মন্ডিত হইয়া দশ দিকে বিকীর্ণ হইয়া পড়িতেছে। শিশুকালে মনোরমা তাহার ধনী পিতৃগহ হইতে অপহত হইয়া দরিদ্রের গহে পালিত হইয়াছে। বহুকাল পরে সম্প্রতি তাহার পিতা সেই সন্ধান পাইয়া কন্যাকে ঘরে আনাইয়া তাহার স্বামীর সহিত পুনরায় নতন সমারোহে বিবাহ দিয়াছে।
{{gap}}প্রথম পট-উৎক্ষেপে অভিনয়ের আরম্ভভাগে মনােরমা দীনহীনবেশে দাসীর মতাে তাহার শ্বশুরবাড়িতে থাকে—প্রচ্ছন্ন বিনম্র সংকুচিত-ভাবে সে আপনার কাজকর্ম করে-তাহার মুখে কথা নাই, এবং তাহার মুখ ভালাে করিয়া দেখাই যায় না।
তাহার পরে বাসরঘরে মানভঞ্জনের পালা আরম্ভ হইল। কিন্তু ইতিমধ্যে দশকমণ্ডলীর মধ্যে ভারি এক গোলমাল বাধিয়া উঠিল। মনোরমা যতক্ষণ মলিন দাসীবেশে ঘোমটা টানিয়া ছিল ততক্ষণ গোপীনাথ নিস্তব্ধ হইয়া দেখিতেছিল। কিন্তু যখন সে আভরণে ঝলমল করিয়া, রক্টাবর পরিয়া, মাথার ঘোমটা ঘাচাইয়া, রাপের তরঙ্গ তুলিয়া বাসরঘরে দাঁড়াইল এবং এক অনিবাচনীয় গবে গৌরবে গ্রীবা বঙ্কিম করিয়া সমস্ত দশকমণ্ডলীর প্রতি এবং বিশেষ করিয়া সম্মুখবতী গোপীনাথের প্রতি চকিত বিদ্যতের ন্যায় অবজ্ঞাবজ্রপািণ তীক্ষ কটাক্ষ নিক্ষেপ করিল— যখন সমস্ত দশকমণ্ডলীর চিত্ত উদবেলিত হইয়া প্রশংসার করতালিতে নাট্যপথলী সদীঘকাল কপান্বিত করিয়া তুলিতে লাগিল— তখন গোপীনাথ সহসা উঠিয়া দাঁড়াইয়া "গিরিবালা” “গিরিবালা” করিয়া চীৎকার করিয়া উঠিল। ছটিয়া স্টেজের উপর লাফ দিয়া উঠিবার চেষ্টা করিল-বাদকগণ তাহাকে ধরিয়া

झर्गळ्ळी ।
{{gap}}অভিনয়ের শেষাংশে মনােরমাকে পিতৃগৃহে পাঠাইয়া তাহার স্বামী অর্থলােভে কোনাে-এক লক্ষপতির একমাত্র কন্যাকে বিবাহ করিতে উদ্যত হইয়াছে। বিবাহের পর বাসরঘরে যখন স্বামী নিরীক্ষণ করিয়া দেখিল তখন দেখিতে পাইল-এও সেই মনােরমা, কেবল সেই দাসীবেশ নাই—আজ সে রাজকন্যা সাজিয়াছে, তাহার নিরূপম সৌন্দর্য আভরণে ঐশ্বর্যে মন্ডিত হইয়া দশ দিকে বিকীর্ণ হইয়া পড়িতেছে। শিশুকালে মনােরমা তাহার ধনী পিতৃগহ হইতে অপহৃত হইয়া দরিদ্রের গৃহে পালিত হইয়াছে। বহুকাল পরে সম্প্রতি তাহার পিতা সেই সন্ধান পাইয়া কন্যাকে ঘরে আনাইয়া তাহার স্বামীর সহিত পুনরায় নূতন সমারােহে বিবাহ দিয়াছে।
এই অকস্মাৎ রসভঙ্গে মমান্তিক কন্ধ হইয়া দশকগণ ইংরাজিতে বাংলায় “দর করে দাও” “বের করে দাও" বলিয়া চীংকার করিতে লাগিল।

গোপীনাথ পাগলের মতো ভগ্নকণ্ঠে চীৎকার করিতে লাগিল, “আমি ওকে খন করব, ওকে খন করব।”
{{gap}}তাহার পরে বাসরঘরে মানভঞ্জনের পালা আরম্ভ হইল।
পলিস আসিয়া গোপীনাথকে ধরিয়া টানিয়া বাহির করিয়া লইয়া গেল। সমস্ত কলিকাতা শহরের দশক দুই চক্ষ ভরিয়া গিরিবালার অভিনয় দেখিতে লাগিল, কেবল গোপীনাথ সেখানে স্থান পাইল না।

বৈশাখ ১৩o২
{{gap}}কিন্তু ইতিমধ্যে দর্শকমণ্ডলীর মধ্যে ভারি এক গােলমাল বাধিয়া উঠিল। মনােরমা যতক্ষণ মলিন দাসীবেশে ঘােমটা টানিয়া ছিল ততক্ষণ গােপীনাথ নিস্তত্ব হইয়া দেখিতেছিল। কিন্তু যখন সে আভরণে ঝল্‌মল্ করিয়া, রক্তাম্বর পরিয়া, মাথার ঘােমটা ঘুচাইয়া, রূপের তরঙ্গ তুলিয়া বাসরঘরে দাঁড়াইল এবং এক অনির্বচনীয় গর্বে গৌরবে গ্রীবা বঙ্কিম করিয়া সমস্ত দর্শকমণ্ডলীর প্রতি এবং বিশেষ করিয়া সম্মুখবর্তী গােপীনাথের প্রতি চকিত বিদ্যুতের ন্যায় অবজ্ঞাবজ্রপর্ণ তীক্ষ্ণ কটাক্ষ নিক্ষেপ করিল—যখন সমস্ত দর্শকমণ্ডলীর চিত্ত উদ্‌বেলিত হইয়া প্রশংসার করতালিতে নাট্যস্থলী সুদীর্ঘকাল কম্পান্বিত করিয়া তুলিতে লাগিল—তখন গােপীনাথ সহসা উঠিয়া দাঁড়াইয়া “গিরিবালা” “গিরিবালা” করিয়া চীৎকার করিয়া উঠিল। ছুটিয়া স্টেজের উপর লাফ দিয়া উঠিবার চেষ্টা করিল—বাদকগণ তাহাকে ধরিয়া ফেলিল।

{{gap}}এই অকস্মাৎ রসভঙ্গে মর্মান্তিক ক্রুদ্ধ হইয়া দর্শকগণ ইংরাজিতে বাংলায় “দূর করে দাও” “বের করে দাও” বলিয়া চীৎকার করিতে লাগিল।

{{gap}}গােপীনাথ পাগলের মতাে ভগ্নকণ্ঠে চীৎকার করিতে লাগিল, “আমি ওকে খুন করব, ওকে খুন করব।”।

{{gap}}পুলিস আসিয়া গােপীনাথকে ধরিয়া টানিয়া বাহির করিয়া লইয়া গেল। সমস্ত কলিকাতা শহরের দর্শক দুই চক্ষু ভরিয়া গিরিবালার অভিনয় দেখিতে লাগিল, কেবল গােপীনাথ সেখানে স্থান পাইল না।

{{gap}}বৈশাখ ১৩০২
{{nop}}