পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/৮৮: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||গল্পগুচ্ছ|২৯১}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||ঠাকুরদা|}}
গল্পগাছ 决>>

ঠাকুরদা
প্রথম পরিচ্ছেদ
{{rh||প্রথম পরিচ্ছেদ|}}

ময়নজোড়ের জমিদারেরা এক কালে বাব বলিয়া বিশেষ বিখ্যাত ছিলেন। তখনকার কালের বাবয়ানার আদশ বড়ো সহজ ছিল না। এখন যেমন রাজা-রায়বাহাদর খেতাব অজ’ন করিতে অনেক খানা নাচ ঘোড়দৌড় এবং সেলাম-সপোরিশের শ্রাদ্ধ করিতে হয়, তখনও সাধারণের নিকট হইতে বাবা উপাধি লাভ করিতে বিস্তর দুঃসাধ্য তপশ্চরণ করিতে হইত।
নয়নজোড়ের জমিদারেরা এক কালে বাবু বলিয়া বিশেষ বিখ্যাত ছিলেন। তখনকার কালের বাবুয়ানার আদর্শ বড়াে সহজ ছিল না। এখন যেমন রাজা-রায়বাহাদুর খেতাব অর্জন করিতে অনেক খানা নাচ ঘােড়দৌড় এবং সেলাম-সুপারিশের শ্রাদ্ধ করিতে হয়, তখনও সাধারণের নিকট হইতে বাবু উপাধি লাভ করিতে বিস্তর দুঃসাধ্য তপশ্চরণ করিতে হইত।
আমাদের নয়নজোড়ের বাবর পাড় ছিড়িয়া ফেলিয়া ঢাকাই কাপড় পরিতেন, কারণ পাড়ের ককশতায় তাঁহাদের সকোমল বাবয়ানা ব্যথিত হইত। তাঁহারা লক্ষ টাকা দিয়া বিড়ালশাবকের বিবাহ দিতেন এবং কথিত আছে, একবার কোনো উৎসব উপলক্ষে রাত্রিকে দিন করিবার প্রতিজ্ঞা করিয়া অসংখ্য দীপ জালাইয়া সমযকিরণের অনুকরণে তাঁহারা সাচচা রপার জরি উপর হইতে বর্ষণ করাইয়াছিলেন।

ইহা হইতেই সকলে বুঝিবেন, সেকালে বাবদের বাবয়ানা বংশানুক্ৰমে স্থায়ী হইতে পারিত না। বহ্বতিকাবিশিষ্ট প্রদীপের মতো নিজের তৈল নিজে অলপ কালের ধামধামেই নিঃশেষ করিয়া দিত।
{{gap}}আমাদের নয়নজোড়ের বাবুরা পাড় ছিঁড়িয়া ফেলিয়া ঢাকাই কাপড় পরিতেন, কারণ পাড়ের কর্কশতায় তাঁহাদের সুকোমল বাবুয়ানা ব্যথিত হইত। তাঁহারা লক্ষ টাকা দিয়া বিড়ালশাবকের বিবাহ দিতেন এবং কথিত আছে, একবার কোনাে উৎসব উপলক্ষে রাত্রিকে দিন করিবার প্রতিজ্ঞা করিয়া অসংখ্য দীপ জালাইয়া সূর্যকিরণের অনুকরণে তাঁহারা সাচ্চা রুপার জরি উপর হইতে বর্ষণ করাইয়াছিলেন।
আমাদের কৈলাসচন্দ্র রায়চৌধুরী সেই প্রখ্যাতযশ নয়নজোড়ের একটি নিবাপিত বাব। ইনি যখন জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন তৈল তখন প্রদীপের তলদেশে আসিয়া ঠেকিয়াছিল; ইহার পিতার মৃত্যু হইলে পর নয়নজোড়ের খাবয়ানা গোটাকতক অসাধারণ শ্রাহ্মধশান্তিতে অন্তিম দীপিত প্রকাশ করিয়া হঠাৎ নিবিয়া গেল। সমস্ত বিষয়-আশয় ঋণের দায়ে বিক্রয় হইল; যে অলপ অবশিষ্ট রহিল তাহাতে পাবপরীষের খ্যাতি রক্ষা করা অসম্পভব । -

সেইজন্য নয়নজোড় ত্যাগ করিয়া পত্রকে সঙ্গে লইয়া কৈলাসবাব কলিকাতায় আসিয়া বাস করিলেন—পত্রটিও একটি কন্যামাত্র রাখিয়া এই হতগৌরব সংসার পরিত্যাগ করিয়া পরলোকে গমন করিলেন।
{{gap}}ইহা হইতেই সকলে বুঝিবেন, সেকালে বাবুদের বাবুয়ানা বংশানুক্রমে স্থায়ী হইতে পারিত না। বহুবর্তিকাবিশিষ্ট প্রদীপের মতাে নিজের তৈল নিজে অল্প কালের ধুমধামেই নিঃশেষ করিয়া দিত।
আমরা তাঁহার কলিকাতার প্রতিবেশী। আমাদের ইতিহাসটা তাঁহাদের হইতে সপণে বিপরীত। আমার পিতা নিজের চেণ্টায় ধন উপাজন করিয়াছিলেন; তিনি কখনও হাঁটর নিনে কাপড় পরিতেন না, কড়াকাতির হিসাব রাখিতেন, এবং বাবা উপাধি -লাভের জন্য তাঁহার লালসা ছিল না। সেজন্য আমি তাঁহার একমাত্র পত্র তাঁহার নিকট কৃতজ্ঞ আছি। আমি যে লেখাপড়া শিখিয়াছি এবং নিজের প্রাণ ও মান -রক্ষার উপযোগী যথেষ্ট অর্থ বিনা চেষ্টায় প্রাপ্ত হইয়াছি, ইহাই আমি পরম গৌরবের বিষয় বলিয়া জ্ঞান করি– শান্যভাণ্ডারে পৈতৃক বাবয়ানার উন্জল ইতিহাসের অপেক্ষা লোহার সিন্দকের মধ্যে পৈতৃক কোম্পানির কাগজ আমার নিকট অনেক বেশি भुलावान गिलझा प्रत्न श्झ

বোধ করি সেই কারণেই কৈলাসবাব তাঁহাদের পবগৌরবের ফেল-করা ব্যাকের উপর যখন দেদার লম্বাচোঁড়া চেক চালাইতেন তখন তাহা আমার এত অসহ্য ঠেকিত । আমার মনে হইত, আমার পিতা স্বহস্তে অথ উপাজন করিয়াছেন বলিয়া কৈলাস
{{gap}}আমাদের কৈলাসচন্দ্র রায়চৌধুরী সেই প্রখ্যাতযশ নয়নজোড়ের একটি নির্বাপিত বাবু। ইনি যখন জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন তৈল তখন প্রদীপের তলদেশে আসিয়া ঠেকিয়াছিল; ইঁহার পিতার মৃত্যু হইলে পর নয়নজোড়ের বাবুয়না গােটাকতক অসাধারণ শ্রাদ্ধশান্তিতে অন্তিম দীপ্তি প্রকাশ করিয়া হঠাৎ নিবিয়া গেল। সমত বিষয়-আশয় ঋণের দায়ে বিক্রয় হইল; যে অল্প অবশিষ্ট রহিল তাহাতে পূর্বপুরুষের খ্যাতি রক্ষা করা অসম্ভব।

{{gap}}সেইজন্য নয়নজোড় ত্যাগ করিয়া পুত্রকে সঙ্গে লইয়া কৈলাসবাবু কলিকাতায় আসিয়া বাস করিলেন-পুত্রটিও একটি কন্যামাত্র রাখিয়া এই হতগৌরব সংসার পরিত্যাগ করিয়া পরলােকে গমন করিলেন।

{{gap}}আমরা তাঁহার কলিকাতার প্রতিবেশী। আমাদের ইতিহাসটা তাঁহাদের হইতে সম্পূর্ণ বিপরীত। আমার পিতা নিজের চেষ্টায় ধন উপার্জন করিয়াছিলেন; তিনি কখনও হাঁটুর নিম্নে কাপড় পরিতেন না, কড়াক্রান্তির হিসাব রাখিতেন, এবং বাবু উপাধি লাভের জন্য তাঁহার লালসা ছিল না। সেজন্য আমি তাঁহার একমাত্র পুত্র তাঁহার নিকট কৃতজ্ঞ আছি। আমি যে লেখাপড়া শিখিয়াছি এবং নিজের প্রাণ ও মান -রক্ষার উপযােগী যথেষ্ট অর্থ বিনা চেষ্টায় প্রাপ্ত হইয়াছি, ইহাই আমি পরম গৌরবের বিষয় বলিয়া জ্ঞান করি—শূন্যভাণ্ডারে পৈতৃক বাবুয়ানার উজ্জ্বল ইতিহাসের অপেক্ষা লােহার সিন্দুকের মধ্যে পৈতৃক কোম্পানির কাগজ আমার নিকট অনেক বেশি মূল্যবান বলিয়া মনে হয়।

{{gap}}বােধ করি সেই কারণেই কৈলাসবাবু তাহাদের পূর্বগৌরবের ফেল্-করা ব্যাঙ্কের উপর যখন দেদার লম্বাচৌড়া চেক চালাইতেন তখন তাহা আমার এত অসহ্য ঠেকিত। আমার মনে হইত, আমার পিতা স্বহস্তে অর্থ উপার্জন করিয়াছেন বলিয়া কৈলাস-