পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২২: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||অতিথি|৩৩৩}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}সজলনয়না অন্নপূর্ণার ইচ্ছা করিতে লাগিল, ছেলেটিকে কোলে বসাইয়া বক্ষে চাপিয়া তাহার মস্তক আঘ্রাণ করেন। মতিলালবাবু ভাবিতে লাগিলেন, এই ছেলেটিকে যদি কোনােমতে কাছে রাখিতে পারি তবে পুত্রের অভাব পূর্ণ হয়। কেবল ক্ষুদ্র বালিকা চারুশশীর অন্তঃকরণ ঈর্ষাবিদ্বেষে পরিপূর্ণ হইয়া উঠিল।
उर्पास्नीक्ष භුළුළු

সজলনয়না অন্নপ্রণার ইচ্ছা করিতে লাগিল, ছেলেটিকে কোলে বসাইয়া বক্ষে চাপিয়া তাহার মস্তক আদ্রাণ করেন। মতিলালবাব ভাবিতে লাগিলেন, ‘এই ছেলেটিকে যদি কোনোমতে কাছে রাখিতে পারি তবে পত্রের অভাব পণ হয়। কেবল ক্ষুদ্র বালিকা চারশশীর অন্তঃকরণ ঈষাবিদ্বেযে পরিপণ হইয়া উঠিল।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ
{{rh||তৃতীয় পরিচ্ছেদ|}}

চার শশী তাহার পিতামাতার একমাত্র সন্তান, তাঁহাদের পিতৃমাতৃস্নেহের একমাত্র অধিকারিণী। তাহার খেয়াল এবং জেদের অন্ত ছিল না। খাওয়া, কাপড় পরা, চুল বাঁধা সম্বন্ধে তাহার নিজের স্বাধীন মত ছিল, কিন্তু সে মতের কিছুমাত্র স্থিরতা ছিল না। যেদিন কোথাও নিমন্ত্রণ থাকিত সেদিন তাহার মায়ের ভয় হইত, পাছে মেয়েটি সাজসজ্জা সম্প্রবন্ধে একটা অসম্ভব জেদ ধরিয়া বসে। যদি দৈবাৎ একবার চুলবাধাটা তাহার মনের মতো না হইল, তবে সেদিন যতবার চুল খালিয়া যতরকম করিয়া বধিয়া দেওয়া যাক কিছুতেই তাহার মন পাওয়া যাইবে না, অবশেষে মহা কামাকাটির পালা পড়িয়া যাইবে। সকল বিষয়েই এইরুপ। আবার এক-এক সময় চিত্ত যখন প্রসন্ন থাকে তখন কিছুতেই তাহার কোনো আপত্তি থাকে না। তখন সে অতিমাত্রায় ভালোবাসা প্রকাশ করিয়া তাহার মাকে জড়াইয়া ধরিয়া চুম্ববন করিয়া হাসিয়া বকিয়া একেবারে অস্থির করিয়া তোলে। এই ক্ষুদ্র মেয়েটি একটি দাভেদ্য প্রহেলিকা
চারুশশী তাহার পিতামাতার একমাত্র সন্তান, তাঁহাদের পিতৃমাতৃস্নেহের একমাত্র অধিকারিণী। তাহার খেয়াল এবং জেদের অন্ত ছিল না। খাওয়া, কাপড় পরা, চুল বাঁধা সম্বন্ধে তাহার নিজের স্বাধীন মত ছিল, কিন্তু সে মতের কিছুমাত্র স্থিরতা ছিল না। যেদিন কোথাও নিমন্ত্রণ থাকিত সেদিন তাহার মায়ের ভয় হইত, পাছে মেয়েটি সাজসজ্জা সম্বন্ধে একটা অসম্ভব জেদ ধরিয়া বসে। যদি দৈবাৎ একবার চুলবাঁধাটা তাহার মনের মতাে না হইল, তবে সেদিন যতবার চুল খুলিয়া যতরকম করিয়া বাঁধিয়া দেওয়া যাক কিছুতেই তাহার মন পাওয়া যাইবে না, অবশেষে মহা কান্নাকাটির পালা পড়িয়া যাইবে। সকল বিষয়েই এইরূপ। আবার এক-এক সময় চিত্ত যখন প্রসন্ন থাকে তখন কিছুতেই তাহার কোনাে আপত্তি থাকে না। তখন সে অতিমাত্রায় ভালােবাসা প্রকাশ করিয়া তাহার মাকে জড়াইয়া ধরিয়া চুম্বন করিয়া হাসিয়া বকিয়া একেবারে অস্থির করিয়া তােলে। এই ক্ষুদ্র মেয়েটি একটি দুর্ভেদ্য প্রহেলিকা।
এই বালিকা তাহার দ্বাধ্য হাদয়ের সমস্ত বেগ প্রয়োগ করিয়া মনে মনে তারাপদকে সতীব্র বিদ্বেষে তাড়না করিতে লাগিল। পিতামাতাকেও সবাতোভাবে উদবেজিত করিয়া তুলিল। আহারের সময় রোদনোন্মুখী হইয়া ভোজনের পাত্র ঠেলিয়া ফেলিয়া দেয়, রন্ধন তাহার রুচিকর বোধ হয় না, দাসীকে মারে, সকল বিষয়েই অকারণ অভিযোগ করিতে থাকে। তারাপদর বিদ্যাগুলি যতই তাহার এবং অন্যসকলের মনোরঞ্জন করিতে লাগিল, ততই যেন তাহার রাগ বাড়িয়া উঠিল । তারাপদর যে কোনো গণে আছে ইহা স্বীকার করিতে তাহার মন বিমুখ হইল, অথচ তাহার প্রমাণ যখন প্রবল হইতে লাগিল, তাহার অসন্তোষের মাত্রাও উচ্চে উঠিল। তারাপদ যেদিন কুশলবের গান করিল সেদিন অন্নপণ মনে করিলেন, সংগীতে বনের পণ্য বশ হয়, আজ বোধ হয় আমার মেয়ের মন গলিয়াছে।’ তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “চার, কেমন লাগল।” সে কোনো উত্তর না দিয়া অত্যন্ত প্রবল বেগে মাথা নাড়িয়া দিল । এই ভঙ্গিটিকে ভাষায় তজমা করিলে এইরুপ দাঁড়ায়, কিছুমাত্র ভালো লাগে নাই এবং কোনোকালে ভালো লাগিবে না।

চারার মনে ঈষার উদয় হইয়াছে ববিয়া তাহার মাতা চারীর সম্মুখে তারাপদর প্রতি স্নেহ প্রকাশ করিতে বিরত হইলেন। সন্ধ্যার পরে যখন সকাল- খাইয়া চার শয়ন করিত তখন অন্নপ্রণা নৌকাকক্ষের বারের নিকট আসিয়া বসিতেন এবং মতিবাব ও তারাপদ বাহিরে বসিত এবং অন্নপ্রণার অনুরোধে তারাপদ গান আরম্ভ করত: তাহার গানে যখন নদীতীরের বিশ্রামনিরতা গ্রামী সন্ধ্যার বিপলে অন্ধকারে মধে নিস্তদ্ধ হইয়া রহিত এবং অন্নপর্ণর কোমল হৃদয়খনি নেহেসৌন্দৰ্যরসে
{{gap}}এই বালিকা তাহার দুর্বোধ্য হৃদয়ের সমস্ত বেগ প্রয়ােগ করিয়া মনে মনে তারাপদকে সুতীব্র বিদ্বেষে তাড়না করিতে লাগিল। পিতামাতাকেও সর্বতােভাবে উদ্‌বেজিত করিয়া তুলিল। আহারের সময় রােদনােম্মুখী হইয়া ভােজনের পাত্র ঠেলিয়া ফেলিয়া দেয়, রন্ধন তাহার রুচিকর বােধ হয় না, দাসীকে মারে, সকল বিষয়েই অকারণ অভিযােগ করিতে থাকে। তারাপদর বিদ্যাগুলি যতই তাহার এবং অন্যসকলের মনােরঞ্জন করিতে লাগিল, ততই যেন তাহার রাগ বাড়িয়া উঠিল। তারাপদর যে কোন গুণ আছে ইহা স্বীকার করিতে তাহার মন বিমুখ হইল, অথচ তাহার প্রমাণ যখন প্রবল হইতে লাগিল, তাহার অসন্তোষের মাত্রাও উচ্চে উঠিল। তারাপদ যেদিন কুশলবের গান করিল সেদিন অপর্ণা মনে করিলেন, ‘সংগীতে বনের পশু বশ হয়, আজ বােধ হয় আমার মেয়ের মন গলিয়াছে। তাহাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “চারু, কেমন লাগল।” সে কোনাে উত্তর না দিয়া অত্যন্ত প্রবল বেগে মাথা নাড়িয়া দিল। এই ভঙ্গিটিকে ভাষায় তর্জমা করিলে এইরূপ দাঁড়ায়, কিছুমাত্র ভালাে লাগে নাই এবং কোনােকালে ভালাে লাগিবে না।
ર ર

{{gap}}চারুর মনে ঈর্ষার উদয় হইয়াছে বুঝিয়া তাহার মাতা চারুর সম্মুখে তারাপদর প্রতি স্নেহ প্রকাশ করিতে বিরত হইলেন। সন্ধ্যার পরে যখন সকাল-সকাল খাইয়া চারু শয়ন করিত তখন অন্নপূর্ণা নৌকাকক্ষের দ্বারের নিকট আসিয়া বসিতেন এবং মতিবাবু ও তারাপদ বাহিরে বসিত এবং অন্নপূর্ণার অনুরােধে তারপদ গান আরম্ভ করিত; তাহার গানে যখন নদীতীরের বিশ্রামনিরতা গ্রামশ্রী সন্ধ্যার বিপুল অন্ধকারে মুগ্ধ নিস্তব্ধ হইয়া রহিত এবং অন্নপূর্ণার কোমল হৃদয়খানি স্নেহেসৌন্দর্যরসে

{{gap}}২২