পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৫: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|৩৩৬|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
উপর লাফাইয়া মাড়াইয়া সেটাকে নির্দয়ভাবে ভাঙিতে লাগিল।
●●● 。 গল্পগছে

উপর লাফাইয়া মাড়াইয়া সেটাকে নিদয়ভাবে ভাঙিতে লাগিল।
চার যখন প্রচণ্ড আবেগে এই বংশিধংসকাষে নিযন্তে আছে এমন সময় তারাপদ আসিয়া ঘরে প্রবেশ করিল। সে বালিকার এই প্রলয়মতি দেখিয়া আশ্চর্য হইয়া গেল। কহিল, “চার, আমার বাঁশিটা ভাঙছ কেন।” চার রক্তনেত্রে রঙ্কিমমখে “বেশ করছি, খাব করছি” বলিয়া আরও বার দুই-চার বিদীণ বাঁশির উপর অনাবশ্যক পদাঘাত করিয়া উচ্ছসিত কণ্ঠে কাঁদিয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল। তারাপদ বাঁশিটি তুলিয়া উলটিয়া পালটিয়া দেখিল, তাহাতে আর পদার্থ নাই। অকারণে তাহার পরাতন নিরপরাধ বাঁশিটার এই আকস্মিক দগণত দেখিয়া সে আর হাস্য সবরণ করিতে পারিল না। চার শশী প্রতিদিনই তাহার পক্ষে পরম কৌতুহলের বিষয় হইয়া উঠিল।
{{gap}}চারু যখন প্রচণ্ড আবেগে এই বংশিধ্বংসকার্যে নিযুক্ত আছে এমন সময় তারাপদ আসিয়া ঘরে প্রবেশ করিল। সে বালিকার এই প্রলয়মতি দেখিয়া আশ্চর্য হইয়া গেল। কহিল, “চারু আমার বাঁশিটা ডাঙছ কেন। চারু রক্তনেত্রে রক্তিমমুখে “বেশ করছি, খুব করছি” বলিয়া আরও বার দুই-চার বিদীর্ণ বাঁশির উপর অনাবশ্যক পদাঘাত করিয়া উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে কাঁদিয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া গেল। তারাপদ বাঁশিটি তুলিয়া উলটিয়া পালটিয়া দেখিল, তাহাতে আর পদার্থ নাই। অকারণে তাহার পুরাতন নিরপরাধ বাঁশিটার এই আকস্মিক দূর্গতি দেখিয়া সে আর হাস্য সম্বরণ করিতে পারিল না। চারুশশী প্রতিদিনই তাহার পক্ষে পরম কৌতূহলের বিষয় হইয়া উঠিল।

তাহার আর একটি কৌতুহলের ক্ষেত্র ছিল মতিলালবাবরে লাইব্রেরিতে ইংরাজি ছবির বইগুলি। বাহিরের সংসারের সহিত তাহার যথেষ্ট পরিচয় হইয়াছে, কিন্তু এই ছবির জগতে সে কিছুতেই ভালো করিয়া প্রবেশ করিতে পারে না। কল্পনার বারা আপনার মনে অনেকটা পরণ করিয়া লইত কিন্তু তাহাতে মন কিছতেই তৃপ্তি মানিত না।
{{gap}}তাহার আর একটি কৌতূহলের ক্ষেত্র ছিল মতিলালবাবুর লাইব্রেরিতে ইংরাজি ছবির বইগুলি। বাহিরের সংসারের সহিত তাহার যথেষ্ট পরিচয় হইয়াছে, কিন্তু এই ছবির জগতে সে কিছুতেই ভালাে করিয়া প্রবেশ করিতে পারে না। কল্পনার দ্বারা আপনার মনে অনেকটা পূরণ করিয়া লইত কিন্তু তাহাতে মন কিছুতেই তৃপ্তি মানিত না।
ছবির বহির প্রতি তারাপদর এই আগ্রহ দেখিয়া একদিন মতিলালবাব বলিলেন, “ইংরেজি শিখবে? তা হলে এ-সমস্ত ছবির মানে বুঝতে পারবে।” তারাপদ তৎক্ষণাৎ বলিল, “শিখব।”

মতিবাব খাব খুশি হইয়া গ্রামের এনট্রেস স্কুলের হেডমাস্টার রামরতনবাবকে প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় এই বালকের ইংরাজি-অধ্যাপনকাষে নিযুক্ত করিয়া দিলেন।
{{gap}}ছবির বহির প্রতি তারাপদর এই আগ্রহ দেখিয়া একদিন মতিলালবাবু বলিলেন, “ইংরিজি শিখবে? তা হলে এ-সমস্ত ছবির মানে বুঝতে পারবে।” তারাপদ তৎক্ষণাৎ বলিল, “শিখব।”
পঞ্চম পরিচ্ছেদ

তারাপদ তাহার প্রখর স্মরণশক্তি এবং অখণ্ড মনোযোগ লইয়া ইংরাজি-শিক্ষায় প্রবত্ত হইল। সে যেন এক নতন দগম রাজ্যের মধ্যে ভ্রমণে বাহির হইল, পরাতন সংসারের সহিত কোনো সম্পক রাখিল না; পাড়ার লোকেরা আর তাহাকে দেখিতে পাইল না; যখন সে সন্ধ্যার পাবে নিজান নদীতীরে দ্রুতবেগে পদচারণ করিতে করিতে পড়া মখস্থ করিত তখন তাহার উপাসক বালকসম্প্রদায় দরে হইতে ক্ষয়চিত্তে সসম্প্রমে তাহাকে নিরীক্ষণ করিত, তাহার পাঠে ব্যাঘাত করিতে সাহস করিত না।
{{gap}}মতিবাবু খুব খুশি হইয়া গ্রামের এন্‌ট্রেন্স্ স্কুলের হেড্‌মাস্টার রামরতনবাবুকে প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় এই বালকের ইংরাজি-অধ্যাপনকার্যে নিযুক্ত করিয়া দিলেন।
চার ও আজকাল তাহাকে বড়ো একটা দেখিতে পাইত না। পবে তারাপদ অন্তঃপরে গিয়া অন্নপণার স্নেহদটির সম্মখে বসিয়া আহার করিত—কিন্তু তদুপলক্ষে প্রায় মাঝে মাঝে কিছ বিলম্ব হইয়া বাইত বলিয়া সে মতিবাবকে অনুরোধ করিয়া বাহিরে আহারের বন্দোবস্ত করিয়া লইল। ইহাতে আর্থশা ব্যথিত হইয়া আপত্তি প্রকাশ করিয়াছিলেন, কিন্তু মতবাব বালকের অধ্যয়নের উৎসাহে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হইয়া এই নতন ব্যবস্থার অনুমোদন করিলেন।

এমন সময় চার ও হঠাৎ জিদ ধরিয়া বসিল, “আমিও ইংরাজি শিখিব।” তাহার পিতামাতা তাঁহাদের খামখেয়ালি কন্যার এই প্রস্তাবটিকে প্রথমে পরিহাসের বিষয় জ্ঞান করিয়া স্নেহমিশ্রিত হাস্য করিলেন–কিন্তু কন্যাটি এই প্রস্তাবের পরিহাস্য
{{rh||পঞ্চম পরিচ্ছেদ|}}

তারাপদ তাহার প্রখর স্মরণশক্তি এবং অখণ্ড মনোেযােগ লইয়া ইংরাজি-শিক্ষায় প্রবৃত্ত হইল। সে যেন এক নূতন দুর্গম রাজ্যের মধ্যে ভ্রমণে বাহির হইল, পুরাতন সংসারের সহিত কোনাে সম্পর্ক রাখিল না; পাড়ার লােকেরা আর তাহাকে দেখিতে পাইল না; যখন সে সন্ধ্যার পূর্বে নির্জন নদীতীরে দ্রুতবেগে পদচারণ করিতে করিতে পড়া মুখস্থ করিত তখন তাহার উপাসক বালকসম্প্রদায় দূর হইতে ক্ষুণ্নচিত্তে সসম্ভ্রমে তাহাকে নিরীক্ষণ করিত, তাহার পাঠে ব্যাঘাত করিতে সাহস করিত না।

{{gap}}চারুও আজকাল তাহাকে বড়াে একটা দেখিতে পাইত না। পূর্বে তারাপদ অন্তঃপুরে গিয়া অন্নপূর্ণার স্নেহদৃষ্টির সম্মুখে বসিয়া আহার করিত—কিন্তু তদুপলক্ষে প্রায় মাঝে মাঝে কিছু বিলম্ব হইয়া যাইত বলিয়া সে মতিবাবুকে অনুরােধ করিয়া বাহিরে আহারের বন্দোবস্ত করিয়া লইল। ইহাতে অন্নপূর্ণা ব্যথিত হইয়া আপত্তি প্রকাশ করিয়াছিলেন, কিন্তু মতিবাবু বালকের অধ্যয়নের উৎসাহে অত্যন্ত সন্তুষ্ট হইয়া এই নূতন ব্যবস্থার অনুমােদন করিলেন।

{{gap}}এমন সময় চারুও হঠাৎ জিদ ধরিয়া বসিল, “আমিও ইংরাজি শিখিব।” তাহার পিতামাতা তাঁহাদের খামখেয়ালি কন্যার এই প্রস্তাবটিকে প্রথমে পরিহাসের বিষয় জ্ঞান করিয়া স্নেহমিশ্রিত হাস্য করিলেন—কিন্তু কন্যাটি এই প্রস্তাবের পরিহাস্য-