পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১২৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|৩৩৮|গল্পগুচ্ছ|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
eéy গল্পগুচ্ছ
কোমরে ব্যথা বলে দেখতে আসতে পারে না।”
কোমরে ব্যথা বলে দেখতে আসতে পারে না।”

এমন সময় হয়তো হঠাৎ চার আসিয়া উপস্থিত। সোনামণি শশব্যস্ত। সে যেন গোপনে তাহার সখীর সম্পত্তি চুরি করিতে আসিয়াছিল। চার কণ্ঠস্বর সপ্তমে চড়াইয়া চোখ মাখ ঘরাইয়া বলিত, “অ্যাঁ সোনা। তুই পড়ার সময় গোল করতে এসেছিস, আমি এখনই বাবাকে গিয়ে বলে দেব।” যেন তিনি নিজে তারাপদর একটি প্রবীণা অভিভাবিকা; তাহার পড়াশনায় লেশমাত্র ব্যাঘাত না ঘটে রাত্রিদিন ইহার প্রতিই তাহার একমাত্র দটি। কিন্তু সে নিজে কী অভিপ্রায়ে এই অসময়ে তারাপদর পাঠগহে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছিল তাহা অন্তষামীর অগোচর ছিল না এবং তারাপদও তাহা ভালোয়পে জানিত। কিন্তু সোনামণি বেচারা ভীত হইয়া তৎক্ষণাৎ একরাশ মিথ্যা কৈফিয়ত সজন করিত; অবশেষে চার যখন ঘণাভরে তাহাকে মিথ্যাবাদী বলিয়া সম্ভাষণ করিত তখন সে লডিজত শঙ্কিত পরাজিত হইয়া ব্যথিতচিত্তে ফিরিয়া যাইত। দয়ার্দ্র তারাপদ তাহাকে ডাকিয়া বলিত, “সোনা, আজ সন্ধ্যাবেলায় আমি তোদের বাড়ি যাব এখন।” চার সপিণীর মতো ফোঁস করিয়া উঠিয়া বলিত, “ষাবে বইকি। তোমার পড়া করতে হবে না ? আমি মাস্টারমশায়কে বলে দেব না ?”
{{gap}}এমন সময় হয়তাে হঠাৎ চারু আসিয়া উপস্থিত। সােনামণি শশব্যস্ত। সে যেন গােপনে তাহার সখীর সম্পত্তি চুরি করিতে আসিয়াছিল। চারু কণ্ঠস্বর সপ্তমে চড়াইয়া চোখ মুখ ঘুরাইয়া বলিত, “অ্যাঁ সােনা। তুই পড়ার সময় গােল করতে এসেছিস, আমি এখনই বাবাকে গিয়ে বলে দেব।” যেন তিনি নিজে তারাপদর একটি প্রবীণা অভিভাবিকা; তাহার পড়াশুনায় লেশমাত্র ব্যাঘাত না ঘটে রাত্রিদিন ইহার প্রতিই তাহার একমাত্র দৃষ্টি। কিন্তু সে নিজে কী অভিপ্রায়ে এই অসময়ে তারাপদর পাঠগৃহে আসিয়া উপস্থিত হইয়াছিল তাহা অন্তর্যামীর অগােচর ছিল না এবং তারাপদও তাহা ভালোরূপে জানিত। কিন্তু সােনামণি বেচারা ভীত হইয়া তৎক্ষণাৎ একরাশ মিথ্যা কৈফিয়ত সৃজন করিত; অবশেষে চারু যখন ঘৃণাভরে তাহাকে মিথ্যাবাদী বলিয়া সম্ভাষণ করিত তখন সে লজ্জিত শঙ্কিত পরাজিত হইয়া ব্যথিতচিত্তে ফিরিয়া যাইত। দয়ার্দ্র তারাপদ তাহাকে ডাকিয়া বলিত, “সােনা, আজ সন্ধ্যাবেলায় আমি তােদের বাড়ি যাব এখন।” চারু সপিণীর মতাে ফোঁস করিয়া উঠিয়া বলিত, “যাবে বইকি। তােমার পড়া করতে হবে না? আমি মাস্টারমশায়কে বলে দেব না?”
চারার এই শাসনে ভীত না হইয়া তারাপদ দই-একদিন সন্ধ্যার পর বামনঠাকরনের বাড়ি গিয়াছিল। তৃতীয় বা চতুৰ্থ বারে চার ফাঁকা শাসন না করিয়া আন্তে আস্তে এক সময় বাহির হইতে তারাপদর ঘরের দবারে শিকল আটিয়া দিয়া মার মসলার বাক্সের চাবিতালা আনিয়া তালা লাগাইয়া দিল । সমস্ত সন্ধ্যাবেলা তারাপদকে এইরুপ বন্দী অবস্থায় রাখিয়া আহারের সময় বার খালিয়া দিল। তারাপদ রাগ করিয়া কথা কহিল না এবং না খাইয়া চলিয়া যাইবার উপক্ৰম করিল। তখন অনন্তপত ব্যাকুল বালিকা করজোড়ে সাননয়ে বারবার বলিতে লাগিল, “তোমার দটি পায়ে পড়ি, আর আমি এমন করব না। তোমার দটি পায়ে পড়ি, তুমি খেয়ে যাও।” তাহাতেও যখন তারাপদ বশ মানিল না, তখন সে অধীর হইয়া কাঁদিতে লাগিল; তারাপদ সংকটে পড়িয়া ফিরিয়া আসিয়া খাইতে বসিল ।

চার কতবার একান্তমনে প্রতিজ্ঞা করিয়াছে যে, সে তারাপদর সহিত সম্ভব্যবহার করিবে, আর কখনও তাহাকে মহাতের জন্য বিরক্ত করিবে না, কিন্তু সোনামণি প্রভৃতি আর পাঁচজন মাঝে আসিয়া পড়াতে কখন তাহার কিরাপ মেজাজ হইয়া যায়, কিছুতেই আত্মসম্বরণ করিতে পারে না। কিছুদিন যখন উপরি-উপরি সে ভালোমানষি করিতে থাকে, তখনই একটা উৎকট আসন্ন বিপ্লবের জন্য তারাপদ সতকভাবে প্রস্তুত হইতে থাকে। আক্রমণটা হঠাৎ কী উপলক্ষে কোন দিক হইতে আসে কিছুই বলা যায় না। তাহার পরে প্রচণ্ড ঝড়, ঝড়ের পরে প্রচুর অশ্রাবারিবষণ, তাহার পরে প্রসন্ন মিখ শান্তি
{{gap}}চারুর এই শাসনে ভীত না হইয়া তারাপদ দুই-একদিন সন্ধ্যার পর বামনঠাকরুনের বাড়ি গিয়াছিল। তৃতীয় বা চতুর্থ বারে চারু ফাঁকা শাসন না করিয়া আস্তে আস্তে এক সময় বাহির হইতে তারাপদর ঘরের দ্বারে শিকল অঁটিয়া দিয়া মার মসলার বাক্সের চাবিতালা আনিয়া তালা লাগাইয়া দিল। সমস্ত সন্ধ্যাবেলা তারাপদকে এইরূপ বন্দী অবস্থায় রাখিয়া আহারের সময় দ্বার খুলিয়া দিল। তারাপদ রাগ করিয়া কথা কহিল না এবং না খাইয়া চলিয়া যাইবার উপক্রম করিল। তখন অনুতপ্ত ব্যাকুল বালিকা করজোড়ে সানুনয়ে বারম্বার বলিতে লাগিল, “তােমার দুটি পায়ে পড়ি, আর আমি এমন করব না। তােমার দুটি পায়ে পড়ি, তুমি খেয়ে যাও।” তাহাতেও যখন তারাপদ বশ মানিল না, তখন সে অধীর হইয়া কাঁদিতে লাগিল; তারাপদ সংকটে পড়িয়া ফিরিয়া আসিয়া খাইতে বসিল॥
झष्ठै श्रर्मद्वंश्याः।

এমন করিয়া প্রায় দুই বৎসর কাটিল। এত সুদীর্ঘকালের জন্য তারাপদ কখনও কাহারও
{{gap}}চারু কতবার একান্তমনে প্রতিজ্ঞা করিয়াছে যে, সে তারাপদর সহিত সদ্ব্যবহার করিবে, আর কখনও তাহাকে মুহূর্তের জন্য বিরক্ত করিবে না, কিন্তু সােনামণি প্রভৃতি আর পাঁচজন মাঝে আসিয়া পড়তে কখন তাহার কিরূপ মেজাজ হইয়া যায়, কিছুতেই আত্মসম্বরণ করিতে পারে না। কিছুদিন যখন উপরূি-উপরি সে ভালােমানুষি করিতে থাকে, তখনই একটা উৎকট আসন্ন বিপ্লবের জন্য তারাপদ সতর্কভাবে প্রস্তুত হইতে থাকে। আক্রমণটা হঠাৎ কী উপলক্ষে কোন দিক হইতে আসে কিছুই বলা যায় না। তাহার পরে প্রচণ্ড ঝড়, ঝড়ের পরে প্রচুর অশ্রুবারিবর্ষণ, তাহার পরে প্রসন্ন স্নিগ্ধ শান্তি।
নিকট ধরা দেয় নাই। বোধ করি, পড়াশনার মধ্যে তাহার মন এক অপব আকর্ষণে বন্ধ হইয়াছিল; বোধ করি, বয়োবধি-সহকারে তাহার প্রকৃতির পরিবর্তন আরম্ভ

{{rh||যষ্ঠ পরিচ্ছেদ|}}

এমন করিয়া প্রায় দুই বৎসর কাটিল। এত দীর্ঘকালের জন্য তারাপদ কখনও কাহারও নিকট ধরা দেয় নাই। বােধ করি, পড়াশুনার মধ্যে তাহার মন এক অপূর্ব আকর্ষণে বদ্ধ হইয়াছিল; বােধ করি, বয়ােবৃদ্ধি-সহকারে তাহার প্রকৃতির পরিবর্তন আরম্ভ