পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৫৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|left|ডিটেক্‌টিভ|৩৬৫}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
ডিটেকটিভ 曾锣体 বিধাতা নরনারীর প্রভেদ করিয়াছেন।” -
বিধাতা নরনারীর প্রভেদ করিয়াছেন।”

আমি কহিলাম, “তোমার পরামর্শ ও সাহায্য চাহি ।” সে সম্মত হইল। আমি বানাইয়া বানাইয়া অনেক ইতিহাস কহিলাম; সে সাগ্রহে কৌতুহলে সমস্ত কথা শুনিল, কিন্তু অধিক কথা কহিল না। আমার ধারণা ছিল, ভালোবাসার, বিশেষত গহিত ভালোবাসার, ব্যাপার প্রকাশ করিয়া বলিলে মানষের মধ্যে অন্তরগতা দ্রুত বাড়িয়া উঠে; কিন্তু বতমান ক্ষেত্রে তাহার কোনো লক্ষণ দেখা গেল না, ছোকরাটি পবোপেক্ষা যেন চুপ মারিয়া গেল, অথচ সকল কথা যেন মনে গাঁথিয়া লইল । ছেলেটির প্রতি আমার ভক্তির সীমা রহিল না।
{{gap}}আমি কহিলাম, “তােমার পরামর্শ ও সাহায্য চাহি।” সে সম্মত হইল।
এ দিকে মন্মথ প্রত্যহ গোপনে বার রোধ করিয়া কী করে, এবং তাহার গোপন অভিসন্ধি কিরাপে কৃতদার অগ্রসর হইতেছে আমি তাহার ঠিকানা করিতে পারলাম না, অথচ অগ্রসর হইতেছিল তাহার সন্দেহ নাই। কী একটা নিগঢ়ে ব্যাপারে সে ব্যাপত আছে এবং সম্প্রতি সেটা অত্যন্ত পরিপক্ক হইয়াছে, তাহা এই নবযুবকটির মুখ দেখিবামাত্র বুঝা যাইত। আমি গোপন চাবিতে তাহার ডেসক খালিয়া দেখিয়াছি, তাহাতে একটা অত্যন্ত দবোধ কবিতার খাতা, কলেজের বস্তৃতার নোট এবং বাড়ির লোকের গোটাকতক অকিঞ্চিৎকর চিঠি ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় নাই। কেবল বাড়ির চিঠি হইতে এই প্রমাণ হইয়াছে যে, বাড়ি ফিরিবার জন্য আত্মীয়স্বজন বারমবার প্রবল অনুরোধ করিয়াছে; তথাপি, তৎসত্ত্বেও বাড়ি না যাইবার একটা সংগত কারণ অবশ্য আছে; সেটা যদি ন্যায়সংগত হইত তবে নিশ্চয় কথায় কথায় এতদিনে ফাঁস হইত, কিন্তু তাহার সম্পণে বিপরীত হইবার সম্ভাবনা থাকাতেই এই ছোকরাটির গতিবিধি এবং ইতিহাস আমার কাছে এমন নিরতিশয় ঔৎসক্যজনক হইয়াছে—যে অসামাজিক মনুষ্যসম্প্রদায় পাতালতলে সম্পণে আত্মগোপন করিয়া এই বহৎ মনুষ্যসমাজকে সবদাই নীচের দিক হইতে দোলায়মান করিয়া রাখিয়াছে, এই বালকটি সেই বিশ্ববব্যাপী বহর পরাতন বহৎজাতির একটি অঙ্গ, এ সামান্য একজন স্কুলের ছাত্র নহে; এ জগৎবক্ষবিহারিণী সবনাশিনীর একটি প্রলয়সহচর; আধুনিককালের চশমাপরা নিরীহ বাঙালি ছাত্রের বেশে কলেজের পাঠ অধ্যয়ন করিতেছে, নমণ্ডেধারী কাপালিক বেশে ইহার ভৈরবতা আমার নিকট আরও ভৈরবতর হইত না ; আমি ইহাকে ভক্তি করি । অবশেষে সশরীরে রমণীর অবতারণা করিতে হইল। পলিসের বেতনভোগী হরিমতি আমার সহায় হইল। মন্মথকে জানাইলাম, আমি এই হরিমতির হতভাগ্য প্রণয়াকাঙক্ষী, ইহাকে লক্ষ্য করিয়াই আমি কিছুদিন গোলদিঘির ধারে মন্মথের পাশ্বচর হইয়া আবার গগনে কেন সাধাংশু-উদয় রে’ কবিতাটি বারবার আবত্তি করিলাম; এবং হরিমতিও কতকটা অন্তরের সহিত, কতকটা লীলাসহকারে জানাইল যে, তাহার চিত্ত সে মন্মথকে সমপণ করিয়াছে। কিন্তু আশানরপে ফল হইল না, মন্মথ সন্দর নিলিপ্ত অবিচলিত কোঁতাহলের সহিত সমস্ত পর্যবেক্ষণ করিতে লাগিল।

এমন সময় একদিন মধ্যাহ্নে তাহার ঘরের মেজেতে একখানি চিঠির গুটিকতক ছিন্নাংশ কুড়াইয়া পাইলাম। জোড়া দিয়া দিয়া এই অসম্পণে বাক্যটুকু আদায় করিলাম, “আজ সন্ধ্যা সাতটার সময় গোপনে তোমার বাসায়"- অনেক খুজিয়া আর কিছ: বাহির করিতে পারিলাম না।
{{gap}}আমি বানাইয়া বানাইয়া অনেক ইতিহাস কহিলাম; সে সাগ্রহে কৌতূহলে সমস্ত কথা শুনিল, কিন্তু অধিক কথা কহিল না। আমার ধারণা ছিল, ভালােবাসার, বিশেষত গর্হিত ভালােবাসার, ব্যাপার প্রকাশ করিয়া বলিলে মানুষের মধ্যে অন্তরঙ্গতা দ্রুত বাড়িয়া উঠে; কিন্তু বর্তমান ক্ষেত্রে তাহার কোনাে লক্ষণ দেখা গেল না, ছােকরাটি পূর্বাপেক্ষা যেন চুপ মারিয়া গেল, অথচ সকল কথা যেন মনে গাঁথিয়া লইল। ছেলেটির প্রতি আমার ভক্তির সীমা রহিল না।
আমার অন্তঃকরণ পলকিত হইয়া উঠিল; মাটির মধ্য হইতে কোনো বিলুপ্তবংশ

을8
{{gap}}এ দিকে মন্মথ প্রত্যহ গােপনে দ্বার রােধ করিয়া কী করে, এবং তাহার গােপন অভিসন্ধি কিরূপে কতদূর অগ্রসর হইতেছে আমি তাহার ঠিকানা করিতে পারিলাম না, অথচ অগ্রসর হইতেছিল তাহার সন্দেহ নাই। কী একটা নিগূঢ় ব্যাপারে সে ব্যাপৃত আছে এবং সম্প্রতি সেটা অত্যন্ত পরিপক্ক হইয়াছে, তাহা এই নবযুবকটির মুখ দেখিবামাত্র বুঝা যাইত। আমি গােপন চাবিতে তাহার ডেস্‌ক খুলিয়া দেখিয়াছি, তাহাতে একটা অত্যন্ত দুর্বোধ কবিতার খাতা, কলেজের বক্তৃতার নােট এবং বাড়ির লােকের গােটাকতক অকিঞ্চিৎকর চিঠি ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যায় নাই। কেবল বাড়ির চিঠি হইতে এই প্রমাণ হইয়াছে যে, বাড়ি ফিরিবার জন্য আত্মীয়স্বজন বারম্বার প্রবল অনুরােধ করিয়াছে; তথাপি, তৎসত্ত্বেও বাড়ি না যাইবার একটা সংগত কারণ অবশ্য আছে; সেটা যদি ন্যায়সংগত হইত তবে নিশ্চয় কথায় কথায় এতদিনে ফাঁস হইত, কিন্তু তাহার সম্পূর্ণ বিপরীত হইবার সম্ভাবনা থাকাতেই এই ছােকরাটির গতিবিধি এবং ইতিহাস আমার কাছে এমন নিরতিশয় ঔৎসুক্যজনক হইয়াছে—যে অসামাজিক মনুষ্যসম্প্রদায় পাতালতলে সম্পূর্ণ আত্মগােপন করিয়া এই বৃহৎ মনুষ্যসমাজকে সর্বদাই নীচের দিক হইতে দোলায়মান করিয়া রাখিয়াছে, এই বালকটি সেই বিশ্বব্যাপী বহু পুরাতন বৃহৎজাতির একটি অঙ্গ, এ সামান্য একজন স্কুলের ছাত্র নহে; এ জগৎবক্ষবিহারিণী সর্বনাশিনীর একটি প্রলয়সহচর; আধুনিককালের চশমাপরা নিরীহ বাঙালি ছাত্রের বেশে কলেজের পাঠ অধ্যয়ন করিতেছে, নৃমুণ্ডধারী কাপালিক বেশে ইহার ভৈরবতা আমার নিকট আরও ভৈরবতর হইত না; আমি ইহাকে ভক্তি করি।

{{gap}}অবশেষে সশরীরে রমণীর অবতারণা করিতে হইল। পুলিসের বেতনভােগী হরিমতি আমার সহায় হইল। মন্মথকে জানাইলাম, আমি এই হরিমতির হতভাগ্য প্রণয়াকাঙ্ক্ষী, ইহাকে লক্ষ্য করিয়াই আমি কিছুদিন গােলদিঘির ধারে মন্মথের পার্শ্বচর হইয়া ‘আবার গগনে কেন সুধাংশু-উদয় রে’ কবিতাটি বারম্বার আবত্তি করিলাম; এবং হরিমতিও কতকটা অন্তরের সহিত, কতকটা লীলাসহকারে জানাইল যে, তাহার চিত্ত সে মন্মথকে সমর্পণ করিয়াছে। কিন্তু আশানুরূপ ফল হইল না, মন্মথ সুদূর নির্লিপ্ত অবিচলিত কৌতূহলের সহিত সমস্ত পর্যবেক্ষণ করিতে লাগিল।

{{gap}}এমন সময় একদিন মধ্যাহ্নে তাহার ঘরের মেজেতে একখানি চিঠির গুটিকতক ছিন্নাংশ কুড়াইয়া পাইলাম। জোড়া দিয়া দিয়া এই অসম্পূর্ণ বাক্যটকু আদায় করিলাম, “আজ সন্ধ্যা সাতটার সময় গােপনে তােমার বাসায়”—অনেক খুঁজিয়া আর কিছু বাহির করিতে পারিলাম না।

{{gap}}আমার অন্তঃকরণ পুলকিত হইয়া উঠিল; মাটির মধ্য হইতে কোনাে বিলুপ্তবংশ