পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/২০৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা |
|||
পাতার অবস্থা | পাতার অবস্থা | ||
- | + | মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে | |
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): | শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): | ||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
{{rh||দৃষ্টিদান|৪১৫}} |
|||
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | ||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
⚫ | দেশ ছাড়িয়া টাকা উপার্জনের পশ্চাতে সংসারমরুভূমির মধ্যে কোথায় অদৃশ্য হইয়া চলিয়া যাইতেছেন! আমি যাহা বিশ্বাস করি, যাহাকে ধর্ম বলি, যাহাকে সকল সুখসম্পত্তির অধিক বলিয়া জানি, তিনি অতিদূর হইতে তাহার প্রতি হাসিয়া কটাক্ষপাত করেন। কিন্তু একদিন এ বিচ্ছেদ ছিল না, প্রথম বয়সে আমরা এক পথেই যাত্রা আরম্ভ করিয়াছিলাম; তাহার পরে কখন যে পথের ভেদ হইতে আরম্ভ হইতেছিল তাহা তিনিও জানিতে পারেন নাই, আমিও জানিতে পারি নাই; অবশেষে আজ আমি আর তাঁহাকে ডাকিয়া সাড়া পাই না। |
||
मृष्झेिमान 8ఫి & |
|||
⚫ | দেশ ছাড়িয়া টাকা |
||
এক-এক সময় ভাবি, |
{{gap}}এক-এক সময় ভাবি, হয়তাে অন্ধ বলিয়া সামান্য কথাকে আমি বেশি করিয়া দেখি। চক্ষু থাকিলে আমি হয়তাে সংসারকে ঠিক সংসারের মতাে করিয়া চিনিতে পারিতাম। |
||
আমার স্বামীও আমাকে একদিন তাহাই বুঝাইয়া বলিলেন। সেদিন সকালে একটি |
{{gap}}আমার স্বামীও আমাকে একদিন তাহাই বুঝাইয়া বলিলেন। সেদিন সকালে একটি বৃদ্ধ মুসলমান তাহার পৌত্রীর ওলাউঠার চিকিৎসার জন্য তাঁহাকে ডাকিতে আসিয়াছিল। আমি শুনিতে পাইলাম সে কহিল, “বাবা, আমি গরিব, কিন্তু আল্লা তােমার ভালাে করিবেন।” আমার স্বামী কহিলেন, “আল্লা যাহা করিবেন কেবল তাহাতেই আমার চলিবে না, তুমি কী করিবে সেটা আগে শুনি।” শুনিবামাত্রই ভাবিলাম, ঈশ্বর আমাকে অন্ধ করিয়াছেন, কিন্তু বধির করেন নাই কেন। বৃদ্ধ গভীর দীর্ঘনিশ্বাসের সহিত ‘হে আল্লা’ বলিয়া বিদায় হইয়া গেল। আমি তখনই ঝিকে দিয়া তাহাকে অন্তঃপুরের খিড়কি-দ্বারে ডাকাইয়া আনিলাম; কহিলাম, “বাবা, তােমার নাতনির জন্য এই ডাক্তারের খরচা কিছু দিলাম, তুমি আমার স্বামীর মঙ্গল প্রার্থনা করিয়া পাড়া হইতে হরিশ ডাক্তারকে ডাকিয়া লইয়া যাও।” |
||
কিন্তু সমস্ত দিন আমার মখে অন্ন রচিল না। স্বামী অপরাহ্লে নিদ্রা হইতে জাগিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমাকে বিমষ দেখিতেছি কেন।” প্রবকালের অভ্যস্ত উত্তর একটা মুখে আসিতেছিল— ‘না, কিছই হয় নাই; কিন্তু ছলনার কাল গিয়াছে, |
|||
গিয়া ভাবিয়া পাই না, ঠিক কী বলিবার আছে। আমার অন্তরের কথাটা আমি |
{{gap}}কিন্তু সমস্ত দিন আমার মুখে অন্ন রচিল না। স্বামী অপরাহ্বে নিদ্রা হইতে জাগিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তােমাকে বিমর্ষ দেখিতেছি কেন।” পূর্বকালের অভ্যস্ত উত্তর একটা মুখে আসিতেছিল- ‘না, কিছুই হয় নাই’; কিন্তু ছলনার কাল গিয়াছে, আমি স্পষ্ট করিয়া বলিলাম, “কতদিন তােমাকে বলিব মনে করি, কিন্তু বলিতে গিয়া ভাবিয়া পাই না, ঠিক কী বলিবার আছে। আমার অন্তরের কথাটা আমি বুঝাইয়া বলিতে পারিব কি না জানি না, কিন্তু নিশ্চয় তুমি নিজের মনের মধ্যে বুঝিতে পার, আমরা দুজনে যেমনভাবে এক হইয়া জীবন আরম্ভ করিয়াছিলাম আজ তাহা পৃথক হইয়া গেছে।” স্বামী হাসিয়া কহিলেন, “পরিবর্তনই তাে সংসারের ধর্ম।” আমি কহিলাম, “টাকাকড়ি রূপযৌবন সকলেরই পরিবর্তন হয়, কিন্তু নিত্য জিনিস কি কিছুই নাই।” তখন তিনি একটু গম্ভীর হইয়া কহিলেন, “দেখাে, অন্য স্ত্রীলােকেরা সত্যকার অভাব লইয়া দুঃখ করে-কাহারও স্বামী উপার্জন করে না, কাহারও স্বামী ভালােবাসে না; তুমি আকাশ হইতে দুঃখ টানিয়া আন।” আমি তখনই বুঝিলাম, অন্ধতা আমার চোখে এক অঞ্জন মাখাইয়া আমাকে এই পরিবর্তমান সংসারের বাহিরে লইয়া গেছে; আমি অন্য স্ত্রীলােকের মতাে নহি; আমাকে আমার স্বামী বুঝিবেন না। |
||
{{gap}}ইতিমষে আমার এক পিস্শাশুড়ি দেশ হইতে তাহার ভ্রাতুষ্পুত্রের সংবাদ লইতে আসিলেন। আমরা উভয়ে তাঁহাকে প্রণাম করিয়া উঠিতেই তিনি প্রথম কথাতেই বলিলেন, “বলি বউমা, তুমি তাে কপালক্রমে দুইটি চক্ষু খােয়াইয়া বসিয়াছ, এখন আমাদের অবিনাশ অন্ধ স্ত্রীকে লইয়া ঘরকন্না চালাইবে কী করিয়া। উহার আর - |