পাতা:গল্পগুচ্ছ (দ্বিতীয় খণ্ড).djvu/১৩৮ (সম্পাদনা)
১৭:২৭, ৬ আগস্ট ২০১৯ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ
, ৪ বছর পূর্বে→মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা |
|||
পাতার অবস্থা | পাতার অবস্থা | ||
- | + | মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে | |
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): | শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না): | ||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
{{rh||দূরাশা|৩৪৯}} |
|||
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | ||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
⚫ | |||
দরাশা ළු8ක |
|||
⚫ | |||
আমি |
{{gap}}আমি কোনােরূপ দার্শনিক তর্ক না তুলিয়া সমস্ত স্বীকার করিয়া লইলাম; কহিলাম, “তা বটে, অদৃষ্টের রহস্য কে জানে! আমরা তাে কীটমাত্র।” |
||
{{gap}}তর্ক তুলিতাম, বিবিসাহেবকে আমি এত সহজে নিষ্কৃতি দিতাম না কিন্তু আমার ভাষায় কুলাইত না। দরােয়ান এবং বেহারাদের সংসর্গে যেটুকু হিন্দি অভ্যস্ত হইয়াছে তাহাতে ক্যাল্কাটা রােডের ধারে বসিয়া বদ্রাওনের অথবা অন্য কোনাে স্থানের কোন নবাবপূত্রীর সহিত অদৃষ্টবাদ ও স্বাধীন-ইচ্ছা-বাদ সম্বন্ধে সুস্পষ্টভাবে আলােচনা করা আমার পক্ষে অসম্ভব হইত। |
|||
⚫ | |||
⚫ | |||
⚫ | |||
⚫ | কেহ না মনে করেন, আমি ঠিক এই কথাগুলি এমনিভাবে হিন্দুস্থানী ভাষায় বলিয়াছিলাম, বলিবার ইচ্ছা ছিল কিন্তু |
||
⚫ | তিনি কহিলেন, “আমার পিতৃকুলে দিল্লির সম্রাটবংশের রক্ত প্রবাহিত ছিল, সেই |
||
⚫ | |||
সন্ত্রীকন্ঠে, বিশেষ সম্প্রান্ত মহিলার মুখে হিন্দুস্থানী কখনও শনি নাই, শনিয়া পষ্ট কঝিতে পারিলাম, এ ভাষা আমিরের ভাষা— এ যে দিনের ভাষা সে দিন আর নাই, আজ রেলোয়ে-টেলিগ্রাফে, কাজের ভিড়ে, আভিজাত্যের বিলোপে সমস্তই যেন হ্রসব খব নিরলংকার হইয়া গেছে। নবাবজাদীর ভাষামাত শুনিয়া সেই ইংরাজরচিত আধনিক শৈলনগরী দাঞ্জিলিঙের ঘনকুৰেটিকাজালের মধ্যে আমার মনশ্চক্ষের সম্মুখে মোগলসমাটের মানসপরেী মায়াবলে জাগিয়া উঠিতে লাগিল— শ্বেতপ্রস্তররচিত বড়ো |
|||
স্বর্ণঝালরখচিত হাওদা, প্রবাসিগণের মস্তকে বিচিত্রবণের উফীষ, শালের রেশমের মসলিনের প্রচুরপ্রসর জামা পায়জামা, কোমরবন্ধে বক্ত তরবারি, জরীর জন্তার অগ্রভাগে বক্স শীর্ষ-সদীঘ* অবসর, সলাব পরিচ্ছদ, সম্প্রচুর শিষ্টাচার। |
|||
⚫ | {{gap}}কেহ না মনে করেন, আমি ঠিক এই কথাগুলি এমনিভাবে হিন্দুস্থানী ভাষায় বলিয়াছিলাম, বলিবার ইচ্ছা ছিল কিন্তু সামর্থ্য ছিল না। বিবিসাহেব যখন কথা কহিতেছিলেন আমার মনে হইতেছিল যেন শিশিরস্নাত স্বর্ণশীর্ষ স্নিদ্ধশ্যামল শস্যক্ষেত্রের উপর দিয়া প্রভাতের মন্দমধুর বায়ু হিল্লোলিত হইয়া যাইতেছে, তাহার পদে পদে এমন সহজ নম্রতা, এমন সৌন্দর্য, এমন বাক্যের অবারিত প্রবাহ। আর আমি অতি সংক্ষেপে খণ্ড খণ্ড ভাবে বর্বরের মতাে সােজা সােজা উত্তর দিতেছিলাম। ভাষায় সেরূপ সুসম্পূর্ণ অবিচ্ছিন্ন সহজ শিষ্টতা আমার কোনােকালে জানা ছিল না; বিবিসাহেবের সহিত কথা কহিবার সময় এই প্রথম নিজের আচরণের দীনতা পদে পদে অনুভব করিতে লাগিলাম। |
||
ミや |
|||
⚫ | {{gap}}তিনি কহিলেন, “আমার পিতৃকুলে দিল্লির সম্রাটবংশের রক্ত প্রবাহিত ছিল, সেই কুলগর্ব রক্ষা করিতে গিয়া আমার উপযুক্ত পাত্রের সন্ধান পাওয়া দুঃসাধ্য হইয়াছিল। লক্ষ্নৌয়ের নবাবের সহিত আমার সম্বন্ধের প্রস্তাব আসিয়াছিল, পিতা ইতস্তত করিতেছিলেন, এমন সময় দাঁতে টোটা কাটা লইয়া সিপাহিলােকের সহিত সরকারবাহাদুরের লড়াই বাধিল, কামানের ধোঁয়ায় হিন্দুস্থান অন্ধকার হইয়া গেল।” |
||
{{gap}}স্ত্রীকণ্ঠে, বিশেষ সভ্রান্ত মহিলার মুখে হিন্দুস্থানী কখনও শুনি নাই, শুনিয়া স্পষ্ট বুঝিতে পারিলাম, এ ভাষা আমিরের ভাষা—এ যে দিনের ভাষা সে দিন আর নাই, আজ রেলোয়ে-টেলিগ্রাফে, কাজের ভিড়ে, আভিজাত্যের বিলােপে সমস্তই যেন হ্রস্ব খর্ব নিরলংকার হইয়া গেছে। নবাবজাদীর ভাষামাত্র শুনিয়া সেই ইংরাজরচিত আধুনিক শৈলনগরী দার্জিলিঙের ঘনকুঞ্জটিকাজালের মধ্যে আমার মনশ্চক্ষের সম্মুখে মােগলসম্রাটের মানসপুরী মায়াবলে জাগিয়া উঠিতে লাগিল—শ্বেতপ্রস্তররচিত বড়াে বড়াে অভ্রভেদী সৌধশ্রেণী, পথে লম্বপুচ্ছ অশ্বপৃষ্ঠে মছলন্দের সাজ, হস্তী পৃষ্ঠে স্বর্ণঝালরখচিত হাওদা, পুরবাসিগণের মস্তকে বিচিত্রবর্ণের উষ্ণীষ, শালের রেশমের মসলিনের প্রচুরপ্রসর জামা পায়জামা, কোমরবন্ধে বক্র তরবারি, জরীর জুতার অগ্রভাগে বক্র শীষ — সুদীর্ঘ অবসর, সুলম্ব পরিচ্ছদ, প্রচুর শিষ্টাচার। |
|||
{{nop}} |