পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/৩১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

 
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়||অক্ষয়চন্দ্র চৌধুরী}}
{{rh|অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়||অক্ষয়চন্দ্র চৌধুরী}}
{{Head2Columns‎}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
৫ নং লাইন: ৫ নং লাইন:
'''অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়''' (১৮৬১-১৯৩০ খ্রী) বিখ্যাত বাঙালী ঐতিহাসিক। ১৮৬১ খ্রীষ্টাব্দের ১ মার্চ নদীয়া জেলার অন্তর্গত সিমল। গ্রামে অক্ষয়কুমারের জন্ম। পিতা মথুরানাথ কুমারখালি ইংরেজী বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করিতেন; পরে সরকারি চাকুরিত্রে রাজসাহীবাসী হন। অক্ষয়কুমার বাল্যকালে কুমারখালি ও পরে রাজশাহীতে শিক্ষালাভ করেন। রাজশাহী কলেজ হইতে বি. এল. পাশ করিয়া ১৮৮৫ খ্রীষ্টাব্দে সেখানেই ওকালতি আরম্ভ করেন এবং আমৃত্যু এই ব্যবসায়ে লিপ্ত থাকিয়া খ্যাতি ও প্রতিপত্তি লাভ করেন। ১৯৩০ খ্রীষ্টাব্দের ১০ ফেব্রুয়ারি ৭০ বৎসর বয়সে তাঁহার মৃত্যু হয়।
'''অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়''' (১৮৬১-১৯৩০ খ্রী) বিখ্যাত বাঙালী ঐতিহাসিক। ১৮৬১ খ্রীষ্টাব্দের ১ মার্চ নদীয়া জেলার অন্তর্গত সিমল। গ্রামে অক্ষয়কুমারের জন্ম। পিতা মথুরানাথ কুমারখালি ইংরেজী বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করিতেন; পরে সরকারি চাকুরিত্রে রাজসাহীবাসী হন। অক্ষয়কুমার বাল্যকালে কুমারখালি ও পরে রাজশাহীতে শিক্ষালাভ করেন। রাজশাহী কলেজ হইতে বি. এল. পাশ করিয়া ১৮৮৫ খ্রীষ্টাব্দে সেখানেই ওকালতি আরম্ভ করেন এবং আমৃত্যু এই ব্যবসায়ে লিপ্ত থাকিয়া খ্যাতি ও প্রতিপত্তি লাভ করেন। ১৯৩০ খ্রীষ্টাব্দের ১০ ফেব্রুয়ারি ৭০ বৎসর বয়সে তাঁহার মৃত্যু হয়।


বাল্যকাল হইতেই অক্ষয়কুমারের প্রবল সাহিত্যানুরাগ ছিল। রাজশাহীর ‘হিন্দুরঞ্জিকা এবং কুমারখালির ‘গ্রামবার্তা’য় তাহার বাল্যরচনা প্রকাশিত হয়। সংস্কৃত ভাযায় তাঁহার যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি ছিল; এবং বাংলা ও সংস্কৃত সাহিত্যের নানা বিভাগে তিনি পাণ্ডিত্যপূর্ণ আললাচনাও করিয়াছেন। কিন্তু বিশেষভাবে ঐতিহাসিক রচনার জন্যই অক্ষয়কুমার বিখ্যাত। সিরাজউদ্দৌলা (১৮৯৮ খ্র) ও ‘মীরকাসিম’ ( ১৯০৬ খ্রী) নামক দুইখানি ঐতিহাসিক গ্রন্থ লিখিয়া তিনি বিদ্বৎসমাজে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেন। মূল দলিল-দস্তাবেজের সাহায্যে তিনি ইহাদের প্রকৃত ইতিহাস উদ্ধারের চেষ্টা করেন এবং প্রচলিত অনেক ধারণ। ভ্রান্ত বলিয়া প্রতিপন্ন করেন। বাংলা ভাষায় এইরূপ বিজ্ঞানসম্মত প্রণালীতে ইতিহাস রচনার তিনিই পথপ্রদর্শক। তাহার পরবর্তী কালের রচনা ‘গৌড়লেখমালা’ (১ম স্তবক, ১৯১২ খ্র) তাহার অপূর্ব পাণ্ডিত্যের পরিচায়ক। এই গ্রন্থে বাংলার পালরাজগণের তাম্রশাসন ও শিলালিপি বাংলা অনুবাদসহ প্রকাশ করিয়া তিনি বাংলার ইতিহাস সম্বন্ধে গবেষণার পথ সুগম করিয়াছেন। এই তিনখানি প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ব্যতীত অক্ষয়কুমার ‘সমরসিংহ (১৮৮৩ খ্ৰী), সীতারাম রায় ( ১৮৯৮ খ্রী), ও ‘ফিরিঙ্গি বণিক’ (১৯২২ খ্রী) নামক অপর তিনখানি গ্রন্থ এবং ‘পৌণ্ড্রবর্ধন’, ‘রানী ভবানী’, ‘বালি দ্বীপের হিন্দুরাজ্য প্রভৃতি ও গৌড় সম্বন্ধে বহু ঐতিহাসিক প্রবন্ধ লিখিয়াছেন। ‘ভারতী’, ‘প্রদীপ’, ‘বঙ্গদর্শন’, ‘সাহিত্য’, ‘মানসী, ‘প্রবাসী প্রভৃতি পত্র-পত্রিকার তিনি নিয়মিত লেখক ছিলেন। ২৪ মার্চ ১৯১৬ খ্রীষ্টাব্দে কলিকাতা এশিয়াটিক সােসাইটি হলে ‘অন্ধকূপহত্যার কাহিনী সত্য কিনা বিচার করিবার জন্য ক্যালকাটা হিস্টরিক্যাল সােসাইটির প্রযত্নে যে সভা হয়, উহাতে অক্ষয়কুমার ঐ কাহিনীকে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রতিপন্ন করিবার জন্য এক সারগর্ভ বক্তৃতা করেন। তাহার সেই মতই এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে সাধারণভাবে গৃহীত হইতেছে।
বাল্যকাল হইতেই অক্ষয়কুমারের প্রবল সাহিত্যানুরাগ ছিল। রাজশাহীর ‘হিন্দুরঞ্জিকা এবং কুমারখালির ‘গ্রামবার্তা’য় তাহার বাল্যরচনা প্রকাশিত হয়। সংস্কৃত ভাযায় তাঁহার যথেষ্ট ব্যুৎপত্তি ছিল; এবং বাংলা ও সংস্কৃত সাহিত্যের নানা বিভাগে তিনি পাণ্ডিত্যপূর্ণ আললাচনাও করিয়াছেন। কিন্তু বিশেষভাবে ঐতিহাসিক রচনার জন্যই অক্ষয়কুমার বিখ্যাত। সিরাজউদ্দৌলা (১৮৯৮ খ্র) ও ‘মীরকাসিম’ ( ১৯০৬ খ্রী) নামক দুইখানি ঐতিহাসিক গ্রন্থ লিখিয়া তিনি বিদ্বৎসমাজে বিশেষ খ্যাতি লাভ করেন। মূল দলিল-দস্তাবেজের সাহায্যে তিনি ইহাদের প্রকৃত ইতিহাস উদ্ধারের চেষ্টা করেন এবং প্রচলিত অনেক ধারণ। ভ্রান্ত বলিয়া প্রতিপন্ন করেন। বাংলা ভাষায় এইরূপ বিজ্ঞানসম্মত প্রণালীতে ইতিহাস রচনার তিনিই পথপ্রদর্শক। তাহার পরবর্তী কালের রচনা ‘গৌড়লেখমালা’ (১ম স্তবক, ১৯১২ খ্র) তাহার অপূর্ব পাণ্ডিত্যের পরিচায়ক। এই গ্রন্থে বাংলার পালরাজগণের তাম্রশাসন ও শিলালিপি বাংলা অনুবাদসহ প্রকাশ করিয়া তিনি বাংলার ইতিহাস সম্বন্ধে গবেষণার পথ সুগম করিয়াছেন। এই তিনখানি প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ব্যতীত অক্ষয়কুমার ‘সমরসিংহ (১৮৮৩ খ্ৰী), সীতারাম রায় ( ১৮৯৮ খ্রী), ও ‘ফিরিঙ্গি বণিক’ (১৯২২ খ্রী) নামক অপর তিনখানি গ্রন্থ এবং ‘পৌণ্ড্রবর্ধন’, ‘রানী ভবানী’, ‘বালি দ্বীপের হিন্দুরাজ্য প্রভৃতি ও গৌড় সম্বন্ধে বহু ঐতিহাসিক প্রবন্ধ লিখিয়াছেন। ‘ভারতী’, ‘প্রদীপ’, ‘বঙ্গদর্শন’, ‘সাহিত্য’, ‘মানসী, {{TwoColumns‎}}‘প্রবাসী প্রভৃতি পত্র-পত্রিকার তিনি নিয়মিত লেখক ছিলেন। ২৪ মার্চ ১৯১৬ খ্রীষ্টাব্দে কলিকাতা এশিয়াটিক সােসাইটি হলে ‘অন্ধকূপহত্যার কাহিনী সত্য কিনা বিচার করিবার জন্য ক্যালকাটা হিস্টরিক্যাল সােসাইটির প্রযত্নে যে সভা হয়, উহাতে অক্ষয়কুমার ঐ কাহিনীকে সম্পূর্ণ মিথ্যা প্রতিপন্ন করিবার জন্য এক সারগর্ভ বক্তৃতা করেন। তাহার সেই মতই এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশে সাধারণভাবে গৃহীত হইতেছে।


বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানসম্মত প্রণালীতে ইতিহাস-চর্চার প্রসারের জন্য অক্ষয়কুমার ১৮৯ খ্ৰীষ্টাব্দে রবীন্দ্রনাথের সহায়তায় ঐতিহাসিক চিত্র’ নামক একখানি ত্রৈমাসিক পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদন শুরু করেন। বাংলা ভাষায় এইরূপ চেষ্টা এই প্রথম। বাংলাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের উপকরণ সংগ্রহ করিবার জন্য দীঘাপতিয়ার কুমার শরৎকুমার রায় ১৯১০ খ্রীষ্টাব্দে রাজশাহীতে ‘বরেন্দ্রঅনুসন্ধান সমিতি’ প্রতিষ্ঠা করিলে অক্ষয়কুমার সর্বপ্রকারে তাহাকে সাহায্য করেন। এই সমিতির চিত্রশালার দ্রব্যসংগ্রহ ও আনুষঙ্গিক ব্যাপারে তিনি শরৎকুমারের প্রধান অবলম্বন ছিলেন। ক্রিকেট খেলা, শিল্পকলা ও রেশমশিল্প সম্বন্ধেও তাহার বিশেষ উৎসাহ ছিল।
বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানসম্মত প্রণালীতে ইতিহাস-চর্চার প্রসারের জন্য অক্ষয়কুমার ১৮৯ খ্ৰীষ্টাব্দে রবীন্দ্রনাথের সহায়তায় ঐতিহাসিক চিত্র’ নামক একখানি ত্রৈমাসিক পত্রিকা প্রকাশ ও সম্পাদন শুরু করেন। বাংলা ভাষায় এইরূপ চেষ্টা এই প্রথম। বাংলাদেশের প্রাচীন ইতিহাসের উপকরণ সংগ্রহ করিবার জন্য দীঘাপতিয়ার কুমার শরৎকুমার রায় ১৯১০ খ্রীষ্টাব্দে রাজশাহীতে ‘বরেন্দ্রঅনুসন্ধান সমিতি’ প্রতিষ্ঠা করিলে অক্ষয়কুমার সর্বপ্রকারে তাহাকে সাহায্য করেন। এই সমিতির চিত্রশালার দ্রব্যসংগ্রহ ও আনুষঙ্গিক ব্যাপারে তিনি শরৎকুমারের প্রধান অবলম্বন ছিলেন। ক্রিকেট খেলা, শিল্পকলা ও রেশমশিল্প সম্বন্ধেও তাহার বিশেষ উৎসাহ ছিল।
পাদটীকা (অন্তর্ভুক্ত হবে না):পাদটীকা (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{Foot2Columns‎}}
{{rh||৬|}}
{{rh||৬|}}