কথা (১৯৩৮)/অভিসার: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
ক্যাট-এ-লট: বিষয়শ্রেণী:কবিতা থেকে সরানো হয়েছে
Mahir256 (আলোচনা | অবদান)
পাতাকে '{{শীর্ষক |শিরোনাম= ../ | আদ্যক্ষর = অ |অনুচ্...' দিয়ে প্রতিস্থাপিত করা হল
ট্যাগ: প্রতিস্থাপিত
১ নং লাইন:
<pages index="কথা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu" from=119 to=119/>
 
{{শীর্ষক
|শিরোনাম= [[../]]
| আদ্যক্ষর = অ
|অনুচ্ছেদ = অভিসার
|পূর্ববর্তী = [[পূজারিনী../পূজারিণী/]]
|পরবর্তী = [[../পরিশোধ/]]
|টীকা =
|লেখক =রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
১২ ⟶ ১০ নং লাইন:
|প্রবেশদ্বার =
}}
<pages index="কথা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu" from=11935 to=11939 tosection="অভিসার"/>
<div style="padding-left:2em;">
<poem>
বোধিসত্তাবদান-কল্পলতা
 
সন্ন্যাসী উপগুপ্ত
মথুরাপুরীর প্রাচীরের তলে একদা ছিলেন সুপ্ত--
নগরীর দীপ নিবেছে পবনে,
দুয়ার রুদ্ধ পৌর ভবনে,
নিশীথের তারা শ্রাবণগগনে ঘন মেঘে অবলুপ্ত।
 
কাহার নূপুরশিঞ্জিত পদ সহসা বাজিল বক্ষে!
সন্ন্যাসীবর চমকি জাগিল,
স্বপ্নজড়িমা পলকে ভাগিল,
রূঢ় দীপের আলোক লাগিল ক্ষমাসুন্দর চক্ষে।
 
নগরীর নটী চলে অভিসারে যৌবনমদে মত্তা।
অঙ্গে আঁচল সুনীলবরণ,
রুনুঝুনু রবে বাজে আভরণ--
সন্ন্যাসী-গায়ে পড়িতে চরণ থামিল বাসবদত্তা।
 
প্রদীপ ধরিয়া হেরিল তাঁহার নবীন গৌরকান্তি--
সৌম্য সহাস তরুণ বয়ান,
করুণাকিরণে বিকচ নয়ান,
শুভ্র ললাটে ইন্দুসমান ভাতিছে স্নিগ্ধ শান্তি।
 
কহিল রমণী ললিত কণ্ঠে, নয়নে জড়িত লজ্জা--
ক্ষমা করো মোরে কুমার কিশোর,
দয়া করো যদি গৃহে চলো মোর--
এ ধরণীতল কঠিন কঠোর, এ নহে তোমার শয্যা।'
 
সন্ন্যাসী কহে করুণ বচনে,"অয়ি লাবণ্যপুঞ্জে,
এখনো আমার সময় হয় নি,
যেথায় চলেছ যাও তুমি ধনী,
সময় যেদিন আসিবে আপনি যাইব তোমার কুঞ্জে।"
 
সহসা ঝঞ্ঝা তড়িৎশিখায় মেলিল বিপুল আস্য।
রমণী কাঁপিয়া উঠিল তরাসে,
প্রলয়শঙ্খ বাজিল বাতাসে,
আকাশে বজ্র ঘোর পরিহাসে হাসিল অট্টহাস্য।
 
...
 
বর্ষ তখনো হয় নাই শেষ, এসেছে চৈত্রসন্ধ্যা।
বাতাস হয়েছে উতলা আকুল,
পথতরুশাখে ধরেছে মুকুল,
রাজার কাননে ফুটেছে বকুল পারুল রজনীগন্ধা।
 
অতি দূর হতে আসিছে পবনে বাঁশির মদির মন্দ্র।
জনহীন পুরী, পুরবাসী সবে
গেছে মধুবনে ফুল-উৎসবে--
শূন্য নগরী নিরখি নীরবে হাসিছে পূর্ণচন্দ্র।
 
নির্জন পথে জ্যোৎস্না-আলোতে সন্ন্যাসী একা যাত্রী।
মাথার উপরে তরুবীথিকার
কোকিল কুহরি উঠে বারবার,
এতদিন পরে এসেছে কি তাঁর আজি অভিসাররাত্রি?
 
নগর ছাড়ায়ে গেলেন দণ্ডী বাহির প্রাচীরপ্রান্তে।
দাঁড়ালেন আসি পরিখার পারে--
আম্রবনের ছায়ার আঁধারে
কে ওই রমণী প'ড়ে এক ধারে তাঁহার চরণোপান্তে!
 
নিদারুণ রোগে মারীগুটিকায় ভরে গেছে তার অঙ্গ--
রোগমসীঢালা কালি তনু তার
লয়ে প্রজাগণে পুরপরিখার
বাহিরে ফেলেছে, করি' পরিহার বিষাক্ত তার সঙ্গ।
 
সন্ন্যাসী বসি আড়ষ্ট শির তুলি নিল নিজ অঙ্কে--
ঢালি দিল জল শুষ্ক অধরে,
মন্ত্র পড়িয়া দিল শির-'পরে,
লেপি দিল দেহ আপনার করে শীতচন্দনপঙ্কে।
 
ঝরিছে মুকুল, কূজিছে কোকিল, যামিনী জোছনামত্তা।
"কে এসেছ তুমি ওগো দয়াময়'
শুধাইল নারী, সন্ন্যাসী কয়--
"আজি রজনীতে হয়েছে সময়, এসেছি বাসবদত্তা!'
</poem>
</div>
১৯ আশ্বিন, ১৩০৬