পাতা:বৃহৎ বঙ্গ - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৩: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Subhadeepghoshal (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
+
বৈধকরণ
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
==উৎসর্গ==
মহামহিম পঞ্চশ্ৰীযুক্ত শ্ৰীমন্মহারাজ বীরবিক্ৰমকিশোর মাণিক্য
বাহাদুরের শ্ৰীকরকমলে<br>


{{center|{{x-larger|উৎসর্গ}}
<big>মহারাজ!</big><br>


মহামহিম পঞ্চশ্রীযুক্ত শ্রীমন্মহারাজ বীরবিক্রমকিশোর মাণিক্য</br>
একদা তরুণ যৌবনে “বঙ্গভাষা ও সাহিত্যে”র পান্ডুলিপি হাতে লইয়া মহারাজ বীরচন্দ্ৰ মাণিক্যের নামে পুস্তকখানি উপহৃত করিবার অনুমতি ও উহা প্ৰকাশের ব্যয়-প্রার্থনার জন্য - রাজদৰ্শন-মানসে আগরতলায় গিয়াছিলাম । ১৮৯১ সনের মে মাস - গ্রীষ্ম কাল,--হস্তিপৃষ্ঠে সেই পার্বত্য প্রদেশ ভ্রমণের কথা এখনও ভুলিতে পারি নাই। ছোট ছোট পাহাড়ের উপকণ্ঠে ক্ষুদ্ৰ বন-রাজি-নীলা পল্লীগুলি “ধারা-নিবদ্ধ, কলঙ্ক-রেখা”র ন্যায় প্রতীয়মান হইতেছিল ; হস্তীটী কাক-চক্ষুর ন্যায় নিৰ্ম্মল-সলিলা কত দীঘির পদ্মনাল ভাঙ্গিয়া তাহাদের কোরক-নিঃসৃত শীত সুগন্ধ জলবিন্দু স্বীয় বিরাট দেহে উৎক্ষেপ-পূর্বক পার্বত্য পল্লী-পথে মাতালের ন্যায় টলিতে টলিতে চলিয়াছিল ; কখনও বা পশ্চিম-গগনে ধূসররক্ত মেঘমালা স্বর্ণরেণুষুক্ত নীলাঞ্জনের ন্যায় সূৰ্য্যাস্তের লোহিত ছটা পরিয়া সন্ধ্যাকে চন্দনরঞ্জিত করিতেছিল। তখন আমার বয়স পঞ্চবিংশতি মাত্ৰ; সেই ভ্ৰমণের কথা এবং তৎসঙ্গে-জড়িত সাহিত্যিক জীবনে প্ৰতিষ্ঠা-লাভের প্ৰথম স্বপ্ন আজিও আমার মনে স্পষ্টরূপে অঙ্কিত আছে,—আর মনে আছে, প্ৰশান্ত ও সৌম্য মহারাজ বীরচন্দ্ৰ মাণিক্যের দীর্ঘ বীরমূৰ্ত্তি। তিনি প্ৰসন্ন দৃষ্টিতে চাহিয়া আমার উভয় প্রার্থনাই মঞ্জুর করিয়াছিলেন। তদবধি ত্রিপুরেশ্বরগণের অকুণ্ঠ বদ্যান্যতায় আমি নানাভাবে উপকৃত হইয়া আসিতেছি। মহারাজ রাধাকিশোর মাণিক্য ও মহারাজ বীরেন্দ্ৰকিশোর মাণিক্য আমাকে দুঃসময়ে কতবার যে আনুকূল্য করিয়াছেন, তাহা আর কি লিখিব ? আমার প্ৰিয়বন্ধু স্বৰ্গীয় কর্নেল মহিমচন্দ্ৰ তাহা জানিতেন।
বাহাদুরের শ্রীকরকমলে}}

{{larger|মহারাজ!}}

{{gap}}একদা তরুণ যৌবনে “বঙ্গভাষা ও সাহিত্যে”র পান্ডুলিপি হাতে লইয়া মহারাজ বীরচন্দ্র মাণিক্যের নামে পুস্তকখানি উপহৃত করিবার অনুমতি ও উহা প্রকাশের ব্যয়-প্রার্থনার জন্য রাজদর্শন-মানসে আগরতলায় গিয়াছিলাম। ১৮৯১ সনের মে মাস— গ্রীষ্ম কাল,হস্তিপৃষ্ঠে সেই পার্বত্য প্রদেশ ভ্রমণের কথা এখনও ভুলিতে পারি নাই। ছোট ছোট পাহাড়ের উপকণ্ঠে ক্ষুদ্র বন-রাজি-নীলা পল্লীগুলি “ধারা-নিবদ্ধ, কলঙ্ক-রেখা”র ন্যায় প্রতীয়মান হইতেছিল; হস্তীটী কাক-চক্ষুর ন্যায় নির্ম্মল-সলিলা কত দীঘির পদ্মনাল ভাঙ্গিয়া তাহাদের কোরক-নিঃসৃত শীত সুগন্ধ জলবিন্দু স্বীয় বিরাট দেহে উৎক্ষেপ-পূর্ব্বক পার্ব্বত্য পল্লী-পথে মাতালের ন্যায় টলিতে টলিতে চলিয়াছিল; কখনও বা পশ্চিম-গগনে ধূসররক্ত মেঘমালা স্বর্ণরেণুযুক্ত নীলাঞ্জনের ন্যায় সূর্য্যাস্তের লোহিত ছটা পরিয়া সন্ধ্যাকে চন্দনরঞ্জিত করিতেছিল। তখন আমার বয়স পঞ্চবিংশতি মাত্র; সেই ভ্রমণের কথা এবং তৎসঙ্গে-জড়িত সাহিত্যিক জীবনে প্রতিষ্ঠা-লাভের প্রথম স্বপ্ন আজিও আমার মনে স্পষ্টরূপে অঙ্কিত আছে,—আর মনে আছে, প্রশান্ত ও সৌম্য মহারাজ বীরচন্দ্র মাণিক্যের দীর্ঘ বীরমূর্ত্তি। তিনি প্রসন্ন দৃষ্টিতে চাহিয়া আমার উভয় প্রার্থনাই মঞ্জুর করিয়াছিলেন। তদবধি ত্রিপুরেশ্বরগণের অকুণ্ঠ বদ্যান্যতায় আমি নানাভাবে উপকৃত হইয়া আসিতেছি। মহারাজ রাধাকিশোর মাণিক্য ও মহারাজ বীরেন্দ্রকিশোর মাণিক্য আমাকে দুঃসময়ে কতবার যে আনুকূল্য করিয়াছেন, তাহা আর কি লিখিব? আমার প্রিয়বন্ধু স্বর্গীয় কর্নেল মহিমচন্দ্র তাহা জানিতেন।
{{nop}}