পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৩১৯: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
 
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|তিতাস একটি নদীর নাম||৩০৭}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}‘কি করলি তুই?’
আনন্দ বেশি । মালোর ছেলেরা ডিঙ্গি নৌকায় চড়িয়া জলভরা বিলে লগি ঠেলিয়া আলোড়ন তোলে। সেখানে পাতাল

ফুড়িয়া ভাসিয়া উঠে সাপের মতো লিকুলিকে সাপলা। শাদ শাদা ফুল ফুটিয়া বিল জুড়িয়া ছত্রাইয়া থাকে। যতদূর চোখ যায় কেবল ফুল আর ফুল—শাদা মাণিকের মেলা যেন । ঘাড়ে ধরিয়া টান দিলে কোন এক জায়গায় সাপলাটা ছিড়িয়া যায়, তারপর টানিয়া তোল—খালি টানো আর টানো, শেষ হইবে না শীঘ্র । এইভাবে তারা এক বোঝাই সাপলা তুলিঃ আনে। মাছের ঘুরিয়া ফিরিয়া দেখে —মালোর ছেলের কেমন সাপলা তুলিতেছে। সাপলা তোলার ফঁাকে ফঁাকে মালোর ছেলেরাও চাহিয়া দেখে । জল শুকাইবে, বিলে বাধ পড়িবে, তখন বেঘোরে প্রাণ হারাইতে হইবে—এসব জানিয়া শুনিয়াও বোকা মাছের, কিসের মায়ায় যেন বিলের নিষ্কম্প জলে তিষ্ঠাইয়া আছে। তিতাসের স্রোতাল জলে নামিয়। পড়িলে, অত শীঘ্র ধরা পড়িবার ভয় থাকিবে না, ধরা যদি পড়েও, পড়িবে মালোদের জালে ; সেখান থেকে লাফাইয়া ও পালানো যায়। কিন্তু নমশুদ্রের বাধে পড়িলে হাজারবার লাফাইলেও নিস্তার নাই । মনসার পুষ্পসজ্জা শেষ হইলে পুরোহিত আসে ! মালোদের পুরোহিত ডুমুরের ফুলের মত ভুলভ। একজন পুরোহিতকে দশবারে গায়ে এক একদিনে মনসা পূজা করিয়া বেড়াইতে হয়। গলায় একখানা চাদর ঝুলাইয়া ও হাতে একখানা পুরোহিত দর্পণ লইয়া আসিয়া অমনি তাড়া দেয়—
{{gap}}‘এক ভেংচি দিলাম।’

{{gap}}‘তুই আমারে তেমুন কইরা একটা ভেংচি দে না!’

{{gap}}‘ধেৎ! তুই কি আমার সত্যের বর? তুই ত মাইয়া মানুষ!’

{{gap}}‘তবে আমি তোরে দেই!’

{{gap}}‘ধেৎ, আমরা কি আর অখন ছোট রইছি?’

{{gap}}কি এমুন বড় হইয়া গেছি। বারোবছর বয়সে বিয়া হইছিল, তারপর ন’বছর—মোটে ত একুশ বছর। এর মধ্যেই বড় হইয়া গেলাম?’

{{gap}}‘বড় হইয়া গেলি কি গেলি না, বুঝতি যদি কোলে দুই একটা ছাও-বাচ্ছা থাক্‌ত। জীবনে একটারও গু-মুত কাচাইলি না, তোর মন কাঁচ শরীল কাঁচা, তাই মনে হয় বড় হইলি না; যদি পুলাপান হইত, বয়সও মালুম হইত।’

{{gap}}‘সেই কথা ক।’

{{gap}}তারপর চারিদিক আঁধার হইয়া আসিল। শাদা শাদা অজস্র সাপলা ফুলে শোভিত, সর্পাসনা মনসা মূর্তিটি অনন্তর চোখের সামনে ঝাপসা হইয়া আসিল, অন্যান্য পূজাবাড়িগুলিরও গান ধুমধাম ক্রমে অস্পষ্ট হইয়া একসময় থামিয়া গেল।


{{gap}}শ্রাবণ মাসের শেষ তারিখটিতে মালোদের ঘরে ঘরে এই মনসা পূজা হয়। অন্যান্য পুজার চাইতে এই পূজার খরচ কম,