পাতা:তিতাস একটি নদীর নাম.djvu/৩২৬: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|৩১৪||তিতাস একটি নদীর নাম}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
রাইতে দেও-দৈত্য যদি দেখা দিত। কও না, কি কইরা তুমি থাক্‌তা এক্‌লা—’
একটা করুণ সুর তার মনে গুণ গুণ করিয়া উঠিল। তার জগৎ বেদনার জগৎ । এ জগতে হাসি নাই, আমোদ নাই। আপনজন না থাকার ব্যথায় তার জগৎ পরিমান । আকাশে তারা আছে, কাননে ফুল আছে, মেঘে রঙ আছে। তিতাসের ঢেউয়ে সে-রঙের খেলা আছে, সব কিছু নিয়াও এই রূপোন্মত্ত বহির্বিশ্ব তার মনের মানিমার সঙ্গে একাকার । একটার পর একটা সাগরের ঢেউয়ের মত কি যেন তার সারা মনট ডুবাইয়া চুবাইয়া দেয়। তখন সে চাহিয়া দেখে, কুল নাই, সীমা নাই, খালি জল আর জল । তুই তীরের বাধনে বাধা তিতাসের সাধ্য কি সে জল আগলায়। এ যেন বার-দরিয়ার নোন। জল—ছোট তটিনীর সকল নৃত্যবিলাসকে তলাইয়া দিয়া জাগিয়া থাকে শুধু একটানা হাহাকার । অনন্ত ইহার কারণ বিশ্লেষণ করিতে চায় মনে মনে । দেখে এত বিশাল বিপুল সময়ের মহাম্রোতে সে বুঝি বা একখণ্ড দুর্বল কুটার মতই ভাসিয়া চলিয়াছে। কিছুদিন আগে একমাত্র মাকে আপন বলিয়া জানিত । তারপর মাসী । কিন্তু সে যে আসলে তার কেউ না, অনন্তর এ বোধ আছে । বনমালী উদয়তারা এরাও দুইদিনের পথের সাথী। এরা যেদিন মাসীর মতই তাকে পর করিয়া দিবে সেদিন সে কোথায় যাইবে । কোথায় আর যাইবে । একটা পান্থশালা জুটিয়া যাইবেই। যে ছাড়িতে পারে তার জুটিতেও বিলম্ব হয় না। পান্থশালারই মত এই মেয়েটির সংসারে ঢুকিয়া পড়িলে ক্ষতি কি ? তিনটি নারী একযোগে অনস্তর সামনে আসিয়া দাড়াইল ।

{{gap}}‘সে এক পরস্তাবের কথা। কইতে গেলে তিনদিন লাগব!’

{{gap}}‘তােমরার গাঁওয়ে আমারে লইয়া যাইবা? সেই নাওখান দেখাইবা?’

{{gap}}‘আচ্ছা নিয়া যামু।’

{{gap}}‘নিবা যে, তােমার মাসী আমারে আদর করব ত তােমার মত?’

{{gap}}‘হ, তােমারে করব আদর! আমারেই বইক্যা বাইর কইরা দিল।’

{{gap}}‘কও কি! বাইর কইরা দিল, আর ডাইক্যা ঘরে নিল না?’

{{gap}}‘না।’

{{gap}}‘তবে গিয়া কাম নাই। তুমি আম্‌রার বাড়িতেই চল। কেউ তােমারে বাইর কইরা দিব না। যদি দেয়ও, আমি তােমারে ডাইক্যা ঘরে নিমু।’

{{gap}}কথাগুলি অনন্তর খুব ভাল লাগিল। একঘর ভরতি লােকের মধ্যে থাকিতে খুব ভাল লাগিবে। সেখানে দশটি লােকে দশ রকমের কথা বলিবে, বিশ হাতে কাজ করিবে, দশমুখে গল্প করিবে—একটা কলরবে মুখরিত থাকিবে ঘরখানা। তার মধ্যে এই চঞ্চল মেয়েটি তার সঙ্গে খেলা করিবে, জালবােনা মাছধরা খেলা। অনন্ত সত্যিকারের জেলে হইয়া নৌকাতে না উঠা পর্যন্ত তাকে এই খেলার মধ্য দিয়াই জাল ফেলা জাল তােলা আয়ত্ত করিতে হইবে।
{{nop}}