পাতা:বিদ্যাসাগরচরিত - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
সম্পাদনা সারাংশ নেই
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{C|{{larger|বিদ্যাসাগরচরিত}}}}
{{C|{{larger|বিদ্যাসাগরচরিত}}}}
বিদ্যাসাগরের চরিত্রে যাহা সর্ব প্রধান গুণ, যে গুণে তিনি পল্লীআচারের
বিদ্যাসাগরের চরিত্রে যাহা সর্ব প্রধান গুণ, যে গুণে তিনি পল্লীআচারের ক্ষুদ্রতা, বাঙালিজীবনের জড়ত্ব সবলে ভেদ করিয়া একমাত্র নিজের গতিবেগপ্রাবল্যে কঠিন প্রতিকূলতার বক্ষ বিদীর্ণ
করিয়া— হিন্দুত্বের দিকে নহে, সাম্প্রদায়িকতার দিকে নহে– করুণার অশ্রুজলপূর্ণ উন্মুক্ত অপার মনুষ্যত্বের অভিমুখে আপনার দৃঢ়নিষ্ঠ একাগ্র একক জীবনকে প্রবাহিত করিয়া লইয়া গিয়াছিলেন,
ক্ষুদ্রতা, বাঙালিজীবনের জড়ত্ব সবলে ভেদ করিয়া
আমি যদি অদ্য তাঁহার সেই গুণকীর্তন করিতে বিরত হই তবে আমার কর্তব্য একেবারেই অসম্পন্ন থাকিয়া যায়। কারণ, বিদ্যাসাগরের জীবনবৃত্তান্ত আলােচনা করিয়া দেখিলে এই কথাটি বারংবার মনে উদয় হয় যে, তিনি যে বাঙালি বড়লােক ছিলেন তাহা নহে, তিনি রীতিমত হিন্দু ছিলেন
একমাত্র নিজের গতিবেগপ্রাবল্যে কঠিন প্রতিকূলতার বক্ষ বিদীর্ণ
তাহাও নহে— তিনি তাহা অপেক্ষাও অনেক বেশি বড়ো ছিলেন, তিনি যথার্থ মানুষ ছিলেন। বিদ্যাসাগরের জীবনীতে এই অনন্য সুলভ মনুষ্যত্বের প্রাচুর্যই সর্বোচ্চ গৌরবের বিষয়। তাঁহার
করিয়া— হিন্দুত্বের দিকে নহে, সাম্প্রদায়িকতার দিকে নহে–
সেই পৰ্বত প্রমাণ চরিত্ৰমাহাত্ম্যে তাঁহারই কৃতকীর্তিকেও খর্ব করিয়া রাখিয়াছে।
করুণার অশ্রুজলপূর্ণ উন্মুক্ত অপার মনুষ্যত্বের অভিমুখে আপনার
দৃঢ়নিষ্ঠ একাগ্র একক জীবনকে প্রবাহিত করিয়া লইয়া গিয়াছিলেন,
আমি যদি অদ্য তাঁহার সেই গুণকীর্তন করিতে বিরত হই
তবে আমার কর্তব্য একেবারেই অসম্পন্ন থাকিয়া যায়।
কারণ, বিদ্যাসাগরের জীবনবৃত্তান্ত আলােচনা করিয়া দেখিলে
এই কথাটি বারংবার মনে উদয় হয় যে, তিনি যে বাঙালি
বড়লােক ছিলেন তাহা নহে, তিনি রীতিমত হিন্দু ছিলেন
তাহাও নহে— তিনি তাহা অপেক্ষাও অনেক বেশি বড়ো ছিলেন,
তিনি যথার্থ মানুষ ছিলেন। বিদ্যাসাগরের জীবনীতে এই
অনন্য সুলভ মনুষ্যত্বের প্রাচুর্যই সর্বোচ্চ গৌরবের বিষয়। তাঁহার
সেই পৰ্বত প্রমাণ চরিত্ৰমাহাত্ম্যে তাঁহারই কৃতকীর্তিকেও খর্ব
করিয়া রাখিয়াছে।


{{gap}}তাঁহার প্রধান কীর্তি বঙ্গভাষা। যদি এই ভাষা কখনো
{{gap}}তাঁহার প্রধান কীর্তি বঙ্গভাষা। যদি এই ভাষা কখনো সাহিত্যসম্পদে ঐশ্বর্যশালিনী হইয়া উঠে, যদি এই ভাষা অক্ষয় ভাবজননীরূপে মানবসভ্যতার ধাত্রীগণের ও মাতৃগণের মধ্যে
সাহিত্যসম্পদে ঐশ্বর্যশালিনী হইয়া উঠে, যদি এই ভাষা অক্ষয়
ভাবজননীরূপে মানবসভ্যতার ধাত্রীগণের ও মাতৃগণের মধ্যে
গণ্য হয়— যদি এই ভাষা পৃথিবীর শােকদুঃখের মধ্যে এক নূতন
গণ্য হয়— যদি এই ভাষা পৃথিবীর শােকদুঃখের মধ্যে এক নূতন