পাতা:মাঝির ছেলে - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য
সম্পাদনা সারাংশ নেই |
|||
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে): | ||
১ নং লাইন: | ১ নং লাইন: | ||
<noinclude><pagequality level="3" user="Nasirkhan"></pagequality></noinclude> |
|||
ছোটখাট স্টীমার ঘাট আটখামারা। নদী এখানে খুব চওড়া । কুয়াশা যখন নদীর বুকে একটুও নেই, এপারে দাঁড়িয়ে ওপারের দিকে তাকালে মনে হবে নদীর ওপার বুঝি পিছিয়ে পিছিয়ে দূরে গিয়ে চােখের সামনে জমাটি-বাঁধা কুয়াশার মত ঝাপসা হয়ে আসছে। |
ছোটখাট স্টীমার ঘাট আটখামারা। নদী এখানে খুব চওড়া । কুয়াশা যখন নদীর বুকে একটুও নেই, এপারে দাঁড়িয়ে ওপারের দিকে তাকালে মনে হবে নদীর ওপার বুঝি পিছিয়ে পিছিয়ে দূরে গিয়ে চােখের সামনে জমাটি-বাঁধা কুয়াশার মত ঝাপসা হয়ে আসছে। |
||
৬ নং লাইন: | ৬ নং লাইন: | ||
{{ফাঁক}}একদিন সকালে ঘাটের কাছে ছোট একটি নীেকার গলুই-এ বসে হারু মাঝির ভাইপো নাগা খেসারির ডাল চিবেচ্ছিল। আকাশ বেয়ে সূর্য সবে হাতখানেক ওপরে উঠেছে, স্টীমার আসতে অনেক দেরি। মাঝ নদীতে একটি স্টীমার দেখা যাচ্ছে, কিন্তু এ স্টীমার ঘাটের ধারে কাছেও ভিড়বে না, দূর দিয়ে চলে যাবে। কোথায় যাবে কে জানে ? সারাদিন কত জাহাজ যায় নদী দিয়ে, রাত্রে কত জাহাজ থেকে সার্চ লাইটের তীব্র আলো এসে চোখ ঝলসে দেয়, তারা কোথা থেকে আসে আর কোথায় যায় জানতে এমন ইচ্ছা করে নাগার! |
{{ফাঁক}}একদিন সকালে ঘাটের কাছে ছোট একটি নীেকার গলুই-এ বসে হারু মাঝির ভাইপো নাগা খেসারির ডাল চিবেচ্ছিল। আকাশ বেয়ে সূর্য সবে হাতখানেক ওপরে উঠেছে, স্টীমার আসতে অনেক দেরি। মাঝ নদীতে একটি স্টীমার দেখা যাচ্ছে, কিন্তু এ স্টীমার ঘাটের ধারে কাছেও ভিড়বে না, দূর দিয়ে চলে যাবে। কোথায় যাবে কে জানে ? সারাদিন কত জাহাজ যায় নদী দিয়ে, রাত্রে কত জাহাজ থেকে সার্চ লাইটের তীব্র আলো এসে চোখ ঝলসে দেয়, তারা কোথা থেকে আসে আর কোথায় যায় জানতে এমন ইচ্ছা করে নাগার! |
||
{{ফাঁক}}পাশে একটি নৌকা এসে ভিড়ল, করমতলার তালুকদার যাদববাবুর নৌকা। যাদববাবু ব্যস্তভাবে ছাই-এর ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে লাফ দিয়ে তীরে উঠলেন,—হাসিমুখে মাথাটা একটু কাত করে নাগার অস্তিত্ব স্বীকার করে নিয়ে, মনে যাতে তার কষ্ট না হয় যে তাকে তিনি একেবারে গ্রাহ্যই করলেন না। প্রথম দেখলে যাদববাবুকে মোটা মনে হয়, আর বিস্ময় জাগে যে এমন মোটা মানুষটার মানানসই ভুঁড়ি কোথায় গেল ? তারপর বুঝা যায়, তিনি ঠিক মোটা নন, একটু চিলধারা জবরদস্ত পালোয়ানী চেহারা বলে মোটা মনে হয়। এককালে তিনি নাকি মস্ত কুস্তিগীর ছিলেন, কুস্তি ছেড়ে দেবার পর শরীরটা নরম হয়ে গেছে। |
{{ফাঁক}}পাশে একটি নৌকা এসে ভিড়ল, করমতলার তালুকদার যাদববাবুর নৌকা। যাদববাবু ব্যস্তভাবে ছাই-এর ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে লাফ দিয়ে তীরে উঠলেন,—হাসিমুখে মাথাটা একটু কাত করে নাগার অস্তিত্ব স্বীকার করে নিয়ে, মনে যাতে তার কষ্ট না হয় যে তাকে তিনি একেবারে গ্রাহ্যই করলেন না। প্রথম দেখলে যাদববাবুকে মোটা মনে হয়, আর বিস্ময় জাগে যে এমন মোটা মানুষটার মানানসই ভুঁড়ি কোথায় গেল ? তারপর বুঝা যায়, তিনি ঠিক মোটা নন, একটু চিলধারা জবরদস্ত পালোয়ানী চেহারা বলে মোটা মনে হয়। এককালে তিনি নাকি মস্ত কুস্তিগীর ছিলেন, কুস্তি ছেড়ে দেবার পর শরীরটা নরম হয়ে গেছে। |