পাতা:মাঝির ছেলে - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৯৬: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

গুগল ওসিআর দ্বারা ইউনিকোড প্রাপ্ত হল
 
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|মাঝির ছেলে||৯০}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
এগারে
{{c|এগারে}}
ভাল করে বর্ষা আরম্ভ হতে “জলকন্যার’ এক রকম নোঙর ফেলে দিন কাটানোর সময় এল। দু’একটা ছোটখাট কাজ যা পাওয়া গেল, সেগুলি সেরে আসতে লাগল ভিমনা, যাদববাবু গেলেন না। নাগা কিন্তু প্ৰত্যেকবার ভিমনার সঙ্গে ঘুরে এল। এক সঙ্গে বেশীদিন বাড়ী বসে থাকতে সে । তো ইপিয়ে ওঠেই, তাছাড়া প্ৰত্যেকটা কাজের শেষে লঞ্চের সকলেই কিছু বাড়তি টাকা পায়। নাগা টাকা জমাচ্ছে। হারু মাঝিকে পাঠিয়ে দিয়ে তার বেতনের টাকা প্ৰায় কিছুই থাকে না, এদিকে নকুল তাকে মেয়ে দিতে রাজী হলেও পণের টাকার পরিমাণ এক পয়সা কমাতে রাজী হয় নি।
ভাল করে বর্ষা আরম্ভ হতে “জলকন্যার’ এক রকম নোঙর ফেলে দিন কাটানোর সময় এল। দু’একটা ছোটখাট কাজ যা পাওয়া গেল, সেগুলি সেরে আসতে লাগল ভিমনা, যাদববাবু গেলেন না। নাগা কিন্তু প্ৰত্যেকবার ভিমনার সঙ্গে ঘুরে এল। এক সঙ্গে বেশীদিন বাড়ী বসে থাকতে সে । তো ইপিয়ে ওঠেই, তাছাড়া প্ৰত্যেকটা কাজের শেষে লঞ্চের সকলেই কিছু বাড়তি টাকা পায়। নাগা টাকা জমাচ্ছে। হারু মাঝিকে পাঠিয়ে দিয়ে তার বেতনের টাকা প্রায় কিছুই থাকে না, এদিকে নকুল তাকে মেয়ে দিতে রাজী হলেও পণের টাকার পরিমাণ এক পয়সা কমাতে রাজী হয় নি।

কিন্তু মাঝে মাঝে দু'একদিনের জন্য একটু ঘুরে এসে কি নাগার, ভেসে বেড়ানোর সাধ মেটে। বাইরে অবিরল ধারে বৃষ্টি পড়ে,-শুকনে। মাটি ভিজিয়ে দেওয়া প্ৰাণ জুড়ানো বর্ষণ নয়, সঁ্যাতসেঁতে জগতকে আরও সঁ্যাতসেঁতে করায় বিষাদ জাগানো বর্ষণ-আর ঘরের জানাল দিয়ে, ডোবার জলকে বঁাশবন পার হয়ে ঘরের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে নাগার মন ছটফট করতে থাকে। ডোবা দেখে দেখেই কি জীবন কাটাতে হবে তাকে ? নদীও বর্ষায় ফুলে ফোঁপে উঠেছে, কত চর তলিয়ে গেছে, কত গ্রাম ভেসে গেছে—ঘোলাটে জলস্রোতের সেই বিস্তীর্ণ বুক রইল ফাকা পড়ে, এখানে ছোট একটা ঘরে বন্দী হয়ে তার দিন কাটছে। বর্ষা কি নদীর মত সমুদ্রের রূপ বদলে দিয়েছে ? কে জানে কেমন দেখায় বর্ষাকালের সমুদ্র।
{{gap}}কিন্তু মাঝে মাঝে দু'একদিনের জন্য একটু ঘুরে এসে কি নাগার, ভেসে বেড়ানোর সাধ মেটে। বাইরে অবিরল ধারে বৃষ্টি পড়ে,-শুকনে। মাটি ভিজিয়ে দেওয়া প্ৰাণ জুড়ানো বর্ষণ নয়, সঁ্যাতসেঁতে জগতকে আরও সঁ্যাতসেঁতে করায় বিষাদ জাগানো বর্ষণ-আর ঘরের জানাল দিয়ে, ডোবার জলকে বঁাশবন পার হয়ে ঘরের দিকে এগিয়ে আসতে দেখে নাগার মন ছটফট করতে থাকে। ডোবা দেখে দেখেই কি জীবন কাটাতে হবে তাকে ? নদীও বর্ষায় ফুলে ফোঁপে উঠেছে, কত চর তলিয়ে গেছে, কত গ্রাম ভেসে গেছে—ঘোলাটে জলস্রোতের সেই বিস্তীর্ণ বুক রইল ফাকা পড়ে, এখানে ছোট একটা ঘরে বন্দী হয়ে তার দিন কাটছে। বর্ষা কি নদীর মত সমুদ্রের রূপ বদলে দিয়েছে ? কে জানে কেমন দেখায় বর্ষাকালের সমুদ্র।
‘বিষ্টির জলে সাগরের জল নি বাড়ে কর্তা ?’ 'না, নাগা, সাগরের জল বাড়ছে না। কমছে জানা যায় না। দীঘির থেইকা এক কলস জল তুইলা দেইখো জল কমে নাই, কলসের জল ঢাইলা 6श्gथ छल दांgg नाथे।' ,

কিন্তু এ তো নিছক যুক্তি। নাগার কল্পনা যে নদীর মতই সমুদ্রকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে তুলেছে।
{{gap}}‘বিষ্টির জলে সাগরের জল নি বাড়ে কর্তা ?’

{{gap}}'না, নাগা, সাগরের জল বাড়ছে না। কমছে জানা যায় না। দীঘির থেইকা এক কলস জল তুইলা দেইখো জল কমে নাই, কলসের জল ঢাইলা দেইখো জল বাড়ে নাই।"

{{gap}}কিন্তু এ তো নিছক যুক্তি। নাগার কল্পনা যে নদীর মতই সমুদ্রকে ফুলিয়ে ফাপিয়ে তুলেছে।