পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১২৩: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(কোনও পার্থক্য নেই)

০৯:০৫, ৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দেশের আর্থসামাজিক-সমাজসাংস্কৃতিক আইন-এর নিয়ন্তক শক্তি দেশের ধনিককুল। এই সব তথাকথিত গণতান্ত্রিক দেশে সাধারণভাবে যেটুকু শঙখলা দেখতে পাই, তা ধর্মীয় নীতির চেয়ে বেশি মানবিক মূল্যবােধের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা আইন ও তার প্রয়োগের কারণে । ভারত ও তার প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ-পাকিস্তান-আফগানিস্তান ইত্যাদি দেশগুলোর দিকে একটু নজর দিলেই দেখতে পবি, এসব দেশে প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মগুলাের যেমন রমরমা, তেমনই খােলামেলা রমরমা দুর্নীতি ও ভ্রষ্টাচারের । যে সব দেশের শাসক গোষ্ঠী ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে ঘােষণা করেছে, সেসব দেশের বর্তমান অবস্থার দিক ফিরে তাকান, দেখতে পাবেন-প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের ধ্বজা যেমন আকাশচুম্বি, তেমনই সমুদ্রগভীর সেসব দেশের স্বৈরতন্ত্র, শোষণ, দুর্নীতি, স্বজনপােষণ ইত্যাদি কদাচার।

O
যে সব দেশের শাসক গােষ্ঠী ইসলামকে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে ঘােষণা
করেছে, সেসব দেশের বর্তমান অবস্থার দিকে ফিরে তাকান, দেখতে
পাবেন প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের ধ্বজা যেমন আকাশচুম্বি, তেমনই সমূদ্র-গভীর
সেসব দেশের স্বৈরতন্ত্র, শােষণ, দুর্নীতি, স্বজনপােষণ ইত্যাদি কদাচার।
O


 বিষয়টা সঠিকভাবে বুঝতে একটি উদাহরণ টেনে আনা যাক।

 আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র আফগানিস্তান । ১৯৯২ সাল থেকে সে দেশে ক্ষমতা দখল করে রয়েছে ইসলাম ধর্মের অনুশাসন দ্বারা পরিচালিত মুজাহেদিনদের বিভিন্ন গােষ্ঠী। আফগানিস্তানে বর্তমানে স্থলের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। লুঠ, নরহত্যা, নারী-ধর্ষণ নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বেচ্ছাচারী ও অত্যাচারী মুজাহেদিনদের নিষ্ঠুর অত্যাচার থেকে বাঁচতে প্রতিদিনই বহু আফগান পরিবার দেশান্তরী হয়েই চলেছেন। ধর্মীয় বিশ্বাস আফগান মুজাহেদিনদের মাধ্যে কোনও মানবিক মূল্যবোধ তৈরি করতে পারেনি।

 ঠিক এর কয়েক বছর আগের আফগানিস্তানের ইতিহাস কী বলে ? সেই সময়গুলােতে, অর্থাৎ সােভিয়েতপন্থী কমিউনিস্ট সরকারের আমলে, পাপ করলে নরকবাস—এ বিশ্বাস না করা সরকারের আমলে কি আফগানিস্তানে এর চেয়েও বেশি রকম জঙ্গলের রাজত্ব ছিল ?

 না, ছিল না। অতি স্পষ্ট করে এবং সােচ্চারেই আমরা বলতে পারি—সেই সময় এই দেশে প্রথম দেখা দিয়েছিল নারী প্রগতি : নারীদের মধ্যে আধুনিক শিক্ষার সুযোগ বেড়েছিল । নারীরা চার-দেওলি ও বোরখার অন্ধকার থেকে আলোতে বেরিয়ে আসতে পেরেছিল। নারীরাও মানুষ হয়ে উঠতে সচেষ্ট হয়েছিল । তারই ফলে নজাহেমিদের একমণ থেকে সােভিয়েতপন্থী কমিউনিস্ট সরকারকে রক্ষা করার জন্য আফগান নারীরা এক দিকে নিজেরা প্রতিরােধ গড়ে তুলেছিল, আর এক দিকে জীবনসঙ্গ, ভাতা ও পুত্রদের প্ররােচিত করেছিল ।

১২৩