পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৩৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(কোনও পার্থক্য নেই)

১৫:৩৩, ৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

তুলে দেওয়া হয়েছে। উদাহরণটা এই-'ব্ল্যাক হােল' (কৃষ্ণ গহ্বর)-জাতীয় মহাশূন্যের তথাকথিত 'সিঙ্গুলারিটি'তে (গাণিতিক উৎসবিন্দু}, যেখানে নতুন পদার্থ জন্ম নিচ্ছে, আধুনিক বিজ্ঞানে ভাবা হয় যে, সময় সেখানে স্তব্ধ হয়ে থাকে। সাধারণের মধ্যে বহুল-প্রচলিত কথা 'ব্রহ্মার এক মুহূর্ত পৃথিবীর সহস্র বছর এরই প্রতিধ্বনি।"

 'ব্রহ্মার এক মুহূর্ত পৃথিবীর সহস্র বছর’, কথাটা নাকি ‘ব্ল্যাক হােল'- এর সমার্থক শব্দ? 'ব্ল্যাক হােল'-এর অস্তিত্বেরই ঘােষণা! অস্তিত্বেরই প্রতিধ্বনি!! এটা আপনার আমার মনে না হােক, রামকৃষ্ণ মিশনের মনে হয়েছে, হিন্দু ধর্মের প্রচারক বৃহত্তম সংস্থাটির মনে হয়েছে। এরকম অনেক কিছুই ওদের মনে হয়। ওদের মনে হয়—নলজাতক শিশু (Test-tube baby), বিকল্প মা (surrogate imother), এইসব আধুনিক বিজ্ঞানের দান বলে আমরা মনে করলেও তা আসলে প্রাচীন হিন্দু সভ্যতার কাছে নতুন কিছু নয়। দ্রোণ ও দ্রোণীর জন্মকথা, সত্যবতীর জন্মকথা, এসব পুরাণের ঘটনা তারই প্রমাণ। যে 'পেট্রিয়ট মিসাইল' (Patriot missile) নামের বিধ্বংসী অস্ত্র (উপসাগরীয় যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিল) আবিষ্কারের পর প্রমাণিত হয়ে গেছে বরুণ-বাণ' ও 'অগ্নি-বাণ আদৌ কোনও কল্পনা ছিল না।

 এই সবই লেখা রয়েছে উল্লেখ করা ‘উদ্বোধন’-এর ১৪৫ পৃষ্ঠায় । এই পৃষ্ঠাতে এ'কথাও বলা হয়েছে - হিন্দু পুরাণে, ধর্মগ্রন্থে, মহাকাব্যে বর্ণিত অধিকাংশই রূপক। রূপকগুলাের ব্যাখ্যা করলেই দেখতে পাব, বিজ্ঞানের নবতম কোনও আবিষ্কারই নতুন নয়। ওই আবিষ্কার আসলে নতুন করে ফিরে দেখা। “আসলে আমরা এক আত্মবিস্মৃত জাতি। আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদের জ্ঞানরাশিকে অবহেলা করে পাশ্চাত্যের অসম্পূর্ণ জ্ঞানকেই সম্পূর্ণ বলে মনে করি ।... বিদেশের বিজ্ঞানী প্রশংসা না করলে ভারতীয় বিজ্ঞানী স্বীকৃতি পান না। বিদেশী পত্রিকায় ছাপা না হলে ভারতীয় বিজ্ঞানীর গবেষণাপত্র গণ্য হয় না। দেশের কবিরাজী ঔষধকে হেয় প্রতিপন্ন করাই আমাদের ডাক্তারদের 'উন্নত' শিক্ষার পরিচয়।

 এই পত্রিকায় ১৪৭ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, “সত্যদ্রষ্টা ঋষিরা সত্যকে জেনেছিলেন। সেই সত্যকে তাঁর 'পরমব্রহ্ম' বলতেন। এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সেই পরমব্রহ্মের স্বরূপ-তাঁদের এই সিদ্ধান্ত নিশ্চয়ই বিজ্ঞানবিরােধী নয়। কাজেই ভগবদ্বিশ্বাস এবং বিজ্ঞানমনস্কতায় কোন বিরােধ নেই।"

 রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃক প্রচারিত এই অমূল্য বাণী বিশ্লেষণ করলে আমরা পাচ্ছিঃ

 একঃ বিজ্ঞানের সব নবতম আবিষ্কারই বাস্তবে নতুন কোনও আবিষ্কারই নয়। এ'সবই প্রাচীন যুগে হিন্দুরা আবিষ্কার করেছিল। প্রাচীন হিন্দু পুরাণে, মহাকাব্যে এইসব আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলাের উল্লেখ আমরা পাই।

১৩৪