পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৩৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(কোনও পার্থক্য নেই)

১৬:১০, ৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আন্দোলনকারীরা আধুনিক বিজ্ঞানকে পশ্চিমা উপদ্রব হিসেবে চিহ্নিত করে তাকে হটিয়ে ইসলামি বিজ্ঞানকে প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছে। আমাদের দেশে আধুনিক বিজ্ঞানকে হটিয়ে হিন্দু বিজ্ঞানকে প্রতিষ্ঠার আহ্বানের সঙ্গে কী অসাধারণ মিল! দু' দেশের মৌলবাদী চিন্তানায়কদের চিন্তার আশ্চর্য রকম মিল পাঠক- পাঠিকারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন। অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে বলা হচ্ছে, বিজ্ঞান একটি আদর্শগত বিষয় এবং ইসলামি বিজ্ঞান খ্রিস্টিয় বিজ্ঞান বা কমিউনিস্টদের বিজ্ঞান থেকে ভিন্নতর ও উৎকৃষ্ট। ইসলামি বিজ্ঞানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ আলাদা এবং পবিত্র কোরআন ইসলামি বিজ্ঞানের অনুপ্রেরণা। ১৯৮৩ সালের নভেম্বরে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ব্যয়বহুল ইসলামিক বিজ্ঞান সম্মেলনে মুসলিম দেশগুলাে থেকে আগত শত শত বিজ্ঞান প্রতিনিধিদের বক্তব্য থেকে এই মতটাই উঠে এসেছিল।

 “ইসলামিক দর্শনকে বিজ্ঞান বলে যারা চালাতে চাইছে, তাদের মধ্যে প্রধান নেতৃত্বে রয়েছে জামাত-ই-ইসলাম' নামের একটি মৌলবাদী রাজনৈতিক সংগঠন, প্রিয় পাঠক-পাঠিকা, একটু লক্ষ্য করলেই খুঁজে পাবেন, এক্ষেত্রেও দু' দেশে অসাধারণ মিল। এদেশে হিন্দু দর্শনকে বিজ্ঞান বলে চালাতে চাইছে বিশ্বহিন্দু পরিষদ, ভারতীয় জনতা পার্টি, রামকৃষ্ণ মিশন, ইত্যাদি রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দল। যারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের মধ্যে যথেষ্ট সমর্থন যােগাড় করেছে। জামায়তি প্রচারের বৈশিষ্ট্য হল পশ্চিমা বিজ্ঞান ও আধুনিক বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে বিষােদগার। জামাত-ই-ইসলামের সবচেয়ে বাকপটু নেতাদের মধ্যে একজন মরিয়ম জামিলাহ ।...মরিয়ম জামিলাহর মতে, পাশ্চাত্য বিজ্ঞানের সমপর্যায়ে ওঠার কোনও প্রয়োজন নেই মুসলিম বিজ্ঞানের । এটা অভিপ্রেতও নয় । কারিগরি শিক্ষার সংকীর্ণতায় বীতশ্রদ্ধ হয়ে জামিলাহ সুপারিশ করেছেন আধুনিক বিজ্ঞানের পরিবর্তে অধ্যাত্মবাদী ইসলামি সাধকদের ফিরিয়ে আনতে।” আমাদের দেশে মৌলবাদী ও প্রগতিশীলতার ছদ্মবেশে মৌলবাদী প্রতিটি শক্তিই আধুনিক বিজ্ঞানের পরিবর্তে ফিরিয়ে আনতে চাইছে অধ্যাত্মবাদী হিন্দু সাধকদের, ঋষিদের। দু'দেশের মৌলবাদী চিন্তায় কী আশ্চর্য রকমের মিল!

 ডঃ পারভেজ তাঁর প্রবন্ধে আরও লিখেছেন, “গত কয়েক বছরে 'ইসলামি বিজ্ঞান'-এর প্রবক্তারা একটি নতুন ব্যাখ্যা হাজির করতে শুরু করেছে--এই ‘ইসলামি বিজ্ঞান' শুধুমাত্র সেকেলে মুসলমানদের বিজ্ঞান নয়। বরং এটা এমনই এক বিজ্ঞান যা সমস্ত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব ও প্রাকৃতিক ঘটনাগুলােকে কোরআনের আলােতে ব্যাখ্যার চেষ্টা করে। এইজাতীয় বক্তব্যের সমর্থনে ইসলামি বিজ্ঞানের প্রবক্তরা যুক্তি হাজির করেন যে-কোরআন একটি সম্পূর্ণ জীবন-বিধান। কোরআনে রয়েছে সব বিজ্ঞান।" হিন্দু মৌলবাদীরা যেমন বলেন—আমাদের বেদে, পুরাণে, গীতায় সব আছে।

১৩৭