পাতা:আমি কেন ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা - প্রবীর ঘোষ.pdf/১৪১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(কোনও পার্থক্য নেই)

১৬:৪২, ৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করেছিলেন। যিনি যুক্তির ধার ধারেন না, তাঁর এমন কথা বলতে কোনও অসুবিধে হওয়ার তো কথা নয়। এমন ভাবার পক্ষেও খলিফা সাহেবের কোনও অসুবিধে নেই যে, পৃথিবী সৃষ্টি হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব ৪০০৪ সালের ২৩ অক্টোবর, রবিবার, সকাল ৯টায়। আবার এমন উদ্ভট বিজ্ঞান-বিরোধী তথ্যকে বিজ্ঞানের ছাপ মেরে দিতে উন্মাদ বা ধান্ধাবাজ কোনও বিজ্ঞানী রামকৃষ্ণ মিশনের দেওয়া উদাহরণের অনুকরণে বলতেই পারেন - 'বিশ্বশ্রষ্টা ঈশ্বরের এক মুহূর্ত পৃথিবীর সহস্র বছর' জাতীয় কথা। সঙ্গে এটুকুও বলে দেবেন সালের হিসেবটা ঈশ্বরের করা, ওটা মানুষর বছরে পরিবর্তিত করতে.... ইত্যাদি ইত্যাদি।

 কোরআনের বেহস্ত বা স্বর্গের সাতটা ভাগ ও দোজখ বা নরকের সাতটা ভাগকে কিছু মুসলিম বিজ্ঞানীরা যেভাবে পরমাণুর কোয়ান্টাম স্তরেরই রূপক বলে প্রচারে নেমেছেন, তাতে বেহেস্তে মদ ও মেয়েছেলের ঢালাও ব্যবস্থাকে ‘রূপক' ছাপ মেরে একটা অকিঞ্চিতকর ব্যাখ্যা হাজির করতে কতক্ষণ?

 ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম চিন্তাবিদদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় পণ্ডিত হিসেবে খ্যাত সৈয়দ আহমেদ খান (১৮১৭-১৮৯৮) দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছিলেন—আল্লাহের বাণীর বাহ্যিক অর্থের সঙ্গে বাস্তব সত্যের দ্বন্দ্ব দেখা দিলে সেখানে আল্লাহের বাণীকে ‘রূপক’ হিসেবে ব্যাখ্যা করতে হবে।

 সৈয়দ সাহেবের এই নীতিটা বিভিন্ন প্রধান ধর্ম দারুণভাবে গ্রহণ করেছে এবং কিছু কিছু বিজ্ঞানীকে বিজ্ঞানের মুক্ত হাওয়া থেকে এনে ‘হিন্দু-বিজ্ঞানী', ‘মুসলিম-বিজ্ঞানী', ‘খ্রিস্টান-বিজ্ঞানী’ ইত্যাদি খাঁচায় পুরে সুন্দরভাবে কাজে লাগাচ্ছে।


খ্রিস্টান-বিজ্ঞানী ও মৌলবাদী চক্রান্ত

স্বর্গের কথায় আর একজনের কথা মনে পড়ে গেল। বিখ্যাত জ্যোতিঃপদার্থ বিজ্ঞানী ফ্র্যাংক জে টিপলার-এর কথা। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের টিউলেন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ান। বিষয় : আপেক্ষিকতা। ডক্টরেট হওয়ার পরও জ্যোতিঃপদার্থ নিয়ে গবেষণা করেছেন বার্কলে এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। লিখেছেন একটি বই, ‘দি ফিজিক্স অব ইম্‌মর্টালিটি'। তাতে টিপলার লিখছেন-কুড়ি বছর আগে যখন আমার কেরিয়ার জ্যোতিঃপদার্থবিদ হিসেবে শুরু করেছিলাম, তখন ছিলাম কট্টর নাস্তিক। তখন স্বপ্নেও ভাবিনি, একদিন আমিই লিখব এমন কোনও বই, যার উপজীব্য হবে ইহুদি-খ্রিস্টান ধর্মতত্ত্বের মূল দাবিগুলোর সত্যতা প্রমাণ।

 টিপলার ওই ঘোষণা করেছেন, “কচিৎ-কখনও আমরা পদার্থবিদরা দেখি, আমাদের বহু আগে বাতিল তত্ত্বকেই পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। বিজ্ঞানীদের এখন বাতিল ঈশ্বর-বিশ্বাস নিয়ে পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে।

১৪১