পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/১৮৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|১৭৮|মুর্শিদাবাদ-কাহিনী|১৭৮}}
{{rh|১৭৮|মুর্শিদাবাদ-কাহিনী|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
ন্যায় আদর্শ জীবন দেখাইয়া গিয়াছেন, রানী ভবানী তাহাকেই পুত্ররূপে গ্রহণ করেন। রামকৃষ্ণ বয়ঃপ্রাপ্ত হইলে, রানী তাহার হস্তে বিষয়ভার অর্পণ করিয়া, বড়নগরে ভাগীরথীতীরে আসিয়া বাস করেন এবং তাহা দেবমন্দিরে ভূষিত করিয়া কাশীতুল্য পবিত্র করিয়া তুলেন। মাতার সঙ্গে ধর্মপ্রাণ মাতার উপযুক্ত কন্যা তারাও গঙ্গাবাসিনী হন। ইহার পূর্বে তাহার মধ্যে মধ্যে প্রায়ই বড়নগরে আসিয়া অনেক দিন পর্যন্ত বাস করিতেন।
ՏԳԵ মুর্শিদাবাদ-কাহিনী

ন্যায় আদর্শ জীবন দেখাইয়া গিয়াছেন, রানী ভবানী তাহাকেই পুত্ররূপে গ্রহণ করেন। রামকৃষ্ণ বয়ঃপ্রাপ্ত হইলে, রানী তাহার হস্তে বিষয়ভার অপর্ণ করিয়া, বড়নগরে ভাগীরথীতীরে আসিয়া বাস করেন এবং তাহা দেবমন্দিরে ভূষিত করিয়া কাশীতুল্য পবিত্র করিয়া তুলেন । মাতার সঙ্গে ধর্মপ্রাণা মাতার উপযুক্ত কন্যা তারাও গঙ্গাবাসিনী হন । ইহার পূর্বে র্তাহারা মধ্যে মধ্যে প্রায়ই বড়নগরে আসিয়া অনেক দিন পর্যন্ত বাস করিতেন । র্তাহাদের এক সময়ে বড়নগরে অবস্থানকালের একটি গম্প এতদ্দেশে প্রচলিত আছে । গল্পটির মূল কি, তাহা আমরা অবগত নহি । যে সিরাজউদ্দৌলার নামে বাঙ্গলার অনেক অদ্ভূত গল্পের সৃষ্টি হইয়াছে, সেই সিবাজউদ্দৌলাকে অবলম্বন করিয়াই এই গল্পটিরও উৎপত্তি। ভবানীর কন্যা তারা অত্যন্ত রূপবতী ছিলেন। কথিত আছে, এক দিবস তিনি বড়নগরের প্রাসাদশিখরে স্নানান্তে উন্মুক্তকেশে পদচারণ করিতেছিলেন, এমন সময়ে বড়নগরের প্রান্তবাহিনী ভাগীরথীবক্ষ দিয়া সিরাজের সাধের তরণী হাসিতে হাসিতে ভাসিয়া যাইতেছিল। সিরাজ তরণী হইতে তারার অপরূপ রূপলাবণ্যদর্শনে উন্মত্ত হইয়া পড়েন এবং মুর্শিদাবাদে গমন করিয়া, তারাকে হরণ করিবার জন্য কতকগুলি লোকজন পাঠাইবার চেষ্টা করেন । সিরাজের লোকজন আসিবার পূর্বে রানী ভবানী এই হৃদয়বিদারক দুঃসংবাদ অবগত হইয়াছিলেন। ইহাতে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত ও চিন্তিত হইয়া পড়েন । তৎকালে বড়নগরের পরপারে সাধকবাগে মস্তারাম বাবাজী নামে জনৈক রামোপাসক বৈষ্ণবের আখড়া ছিল সাধকবাগের সে আখড়া অদ্যাপি বিদ্যমান আছে । বাবাজী রানী ভবানীর নিকট হইতে যথেষ্ট সাহায্য প্রাপ্ত হইতেন । তিনি এই সংবাদ অবগত হইয়া স্বীয় আখড়াস্থিত বহুসংখ্যক রামোপাসক বৈষ্ণবকে অন্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করিয়া সিরাজের লোকজনকে বাধা দিবার জন্য বড়নগরে পাঠাইয়া দেন । এই সংবাদ পাইয়া সিরাজউদ্দৌলা আর তারাকে হরণ করিতে সাহসী হন নাই। প্রবাদ এই ঘটনাটিকে এতদূর অতিরঞ্জিত করিয়াছে যে, মস্তারাম বাবাজী নাকি তপোবলে বৈষ্ণবসৈন্যের সৃষ্টি করিয়াছিলেন ! এক্ষণে এই গল্পটি সম্বন্ধে আমাদের দুই একটি কথা বক্তব্য আছে। প্রথমতঃ অষ্টাদশ শতাব্দীর বড়নগর বর্তমান বড়নগরের ন্যায় অরণ্যানীসমাবৃত ছিল না, তাহ একটি প্রধান আড়ঙ্গ ছিল ; তথায় ইউরোপীয়গণ পর্যন্ত ক্লয়বিক্রয়ার্থে উপস্থিত হইতেন । তৎকালে বড়নগরে লোকের এরূপ বাস ছিল যে, তথায় তিলমাত্র স্থান পড়িয়া থাকিতে পাইত না । সেই বড়নগরে বঙ্গের সর্বশ্রেষ্ঠ সন্ত্রান্ত বংশের কন্যা, দিবসে রানান্তে প্রাসাদশিখরে সহস্ৰ সহস্ৰ লোকের দৃষ্টিসমক্ষে পাদচারণ করবেন, ইহা বিশ্বাসযোগ্য কি না ? দ্বিতীয়তঃ বড়নগরের প্রাসাদ যেস্থানে অবস্থিত ছিল, আদ্যাপি তাহার কিয়দংশ বিরাজ করিতেছে । গঙ্গাবক্ষ হইতে সে প্রাসাদশিখরের উপরিস্থিত লোক দৃষ্টিগোচর হওয়া সুকঠিন । বিশেষতঃ তৎকালে ভাগীরথী বড়নগর হইতে আরও
{{gap}}তাহাদের এক সময়ে বড়নগরে অবস্থানকালের একটি গল্প এতদ্দেশে প্রচলিত আছে। গল্পটির মূল কি, তাহা আমরা অবগত নহি। যে সিরাজউদ্দৌলার নামে বাঙ্গলার অনেক অদ্ভুত গল্পের সৃষ্টি হইয়াছে, সেই সিরাজউদ্দৌলাকে অবলম্বন করিয়াই এই গল্পটির উৎপত্তি। ভবানীর কন্যা তারা অত্যন্ত রূপবতী ছিলেন। কথিত আছে, এক দিবস তিনি বড়নগরের প্রাসাদশিখরে স্নানান্তে উন্মুক্তকেশে পদচারণ করিতেছিলেন, এমন সময়ে বড়নগরের প্রান্তবাহিনী ভাগীরথীবক্ষ দিয়৷ সিরাজের। সাধের তরণী হাসিতে হাসিতে ভাসিয়া যাইতেছিল। সিরাজ তরণী হইতে তারার অপরূপ রূপলাবণ্যদর্শনে উন্মত্ত হইয়া পড়েন এবং মুশিদাবাদে গমন করিয়া, তারাকে হরণ করিবার জন্য কতকগুলি লােজন পাঠাইবার চেষ্টা করেন। সিরাজের লােকজন আসিবার পূর্বে রানী ভবানী এই হৃদয়বিদারক দুঃসংবাদ অবগত হইয়াছিলেন। ইহাতে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত ও চিন্তিত হইয়া পড়েন। তৎকালে বড়নগরের। পরপারে সাধকবাগে মস্তারাম বাবাজী নামে জনৈক রামােপাসক বৈষ্ণবের আখড়া। ছিল। সাধকবাগের সে আখড়া অদ্যাপি বিদ্যমান আছে। বাবাজী রানী ভবানীর নিকট হইতে যথেষ্ট সাহায্য প্রাপ্ত হইতেন। তিনি এই সংবাদ অবগত হইয়া স্বীয় আখড়াস্থিত বহুসংখ্যক রামমাপাসক বৈষ্ণবকে অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত করিয়া সিরাজের লােকজনকে বাধা দিবার জন্য বড়নগরে পাঠাইয়া দেন। এই সংবাদ পাইয়া সিরাজউদ্দৌলা আর তারাকে হরণ করিতে সাহসী হন নাই। প্রবাদ এই ঘটনাটিকে এতদূর অতিরঞ্জিত করিয়াছে যে, মস্তারাম বাবাজী নাকি তপােবলে বৈষ্ণবসৈন্যের সৃষ্টি করিয়াছিলেন!

{{gap}}এক্ষণে এই গল্পটি সম্বন্ধে আমাদের দুই একটি কথা বক্তব্য আছে। প্রথমতঃ অষ্টাদশ শতাব্দীর বড়নগর বর্তমান বড়নগরের ন্যায় অরণ্যানীসমাবৃত ছিল না, তাহা একটি প্রধান আড়ঙ্গ ছিল; তথায় ইউরােপীয়গণ পর্যন্ত ক্রয়বিক্ৰয়াৰ্থে উপস্থিত হইতেন। তৎকালে বড়নগরে লােকের এরূপ বাস ছিল যে, তথায় তিলমাত্র স্থান পড়িয়া থাকিতে পাইত না। সেই বড়নগরে বঙ্গের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্রান্ত বংশের কন্যা, দিবসে স্নানান্তে প্রাসাদশিখরে সহস্র সহস্র লােকের দৃষ্টিসমক্ষে পদচারণ করিবেন, ইহা বিশ্বাসযােগ্য কি না? দ্বিতীয়তঃ বড়নগরের প্রাসাদ যেস্থানে অবস্থিত ছিল, অদ্যাপি তাহার কিয়দংশ বিরাজ করিতেছে। গঙ্গাবক্ষ হইতে সে প্রাসাদশিখরের উপরিস্থিত লােক দৃষ্টিগােচর হওয়া সুকঠিন। বিশেষতঃ তৎকালে ভাগীরথী বড়নগর হইতে আরও