পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৩২৮: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|৩২২|মুর্শিদাবাদ-কাহিনী|৩২২}}
{{rh|৩২২|মুর্শিদাবাদ-কাহিনী|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
উপায় নাই। তাহারা মনে করিয়াছিলেন যে, যদিও রাধানাথ দত্তক পুত্র বলিয়া বিষয়ের প্রকৃত উত্তরাধিকারী, তথাপি গঙ্গাগোবিন্দ যদি কোনরূপে বুঝাইয়া দেন যে, দিনাজপুরের জমিদারী তাহাদিগের পূর্বপুরুষ হইতে চলিয়া আসায়, উভয়েই সমানভাবে উত্তরাধিকারী হইতে পারে, তাহা হইলে, রাধানাথকে বিশেষরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হইতে হইবে। অগত্যা তাহারা দেওয়ানজীর আশ্রয় লইতে বাধ্য হইলেন। দেওয়ানজীও সুযােগ অন্বেষণ করিতেছিলেন। তিনি রাধানাথকে সম্পত্তি দিবার পূর্বে হেস্টিংসসাহেবের নাম করিয়া সেই নাবালকের পক্ষীয়গণের নিকট ৪ লক্ষ টাকা দাবী করিয়া বসিলেন এবং ৪ লক্ষ টাকা দিতে প্রতিশ্রুত না হইলে, রাধানাথের জমিদারীপ্রাপ্তি লইয়া বিষম গােলযােগ উপস্থিত হইবে, এ কথাও বিশেষরূপে বুঝাইয়া দিলেন। অন্ততঃ রাধানাথের সমস্ত বিষয়ের উত্তরাধিকারী হওয়া সুকঠিন হইবে, এ কথাও প্রকাশ করিতে ছাড়েন নাই। তাহারা যখন দেখিলেন, বাস্তবিক দেওয়ানজী যাহা মনে করেন, তাহাই করিতে পারেন, গবর্নর জেনারেল কদাচ তাহার পরামর্শব্যতীত কোন কার্যই করিতে চাহেন না, তখন তাহারা দেওয়ানজীর কথা শুনিতে বাধ্য হইলেন, এবং তাহার প্রস্তাবমতে ৪ লক্ষ টাকা দিবার অঙ্গীকার করিয়া বালক রাধানাথের দিনাজপুর জমিদারীপ্রাপ্তির উপায় করিয়া লইলেন।
৩২২ মুর্শিদাবাদ-কাহিনী

উপায় নাই । তাহারা মনে করিয়াছিলেন যে, যদিও রাধানাথ দত্তক পুত্র বলিয়া বিষয়ের প্রকৃত উত্তরাধিকারী, তথাপি গঙ্গাগোবিন্দ যদি কোনরূপে বুঝাইয়া দেন যে, দিনাজপুরের জমিদারী তাহাদিগের পূর্বপুরুষ হইতে চলিয়া আসায়, উভয়েই সমানভাবে উত্তরাধিকারী হইতে পারে, তাহা হইলে, রাধানাথকে বিশেষরূপে ক্ষতিগ্রস্ত হইতে হইবে । অগত্যা তাহারা দেওয়ানজীর আশ্রয় লইতে বাধ্য হইলেন । দেওয়ানজীও সুযোগ অন্বেষণ করিতেছিলেন । তিনি রাধানাথকে সম্পত্তি দিবার পূর্বে হেস্টিংসসাহেবের নাম করিয়া সেই নাবালকের পক্ষীয়গণের নিকট ৪ লক্ষ টাকা দাবী করিয়া বসিলেন এবং ৪ লক্ষ টাকা দিতে প্রতিশ্রুত না হইলে, রাধানাথের জমিদারীপ্রাপ্তি লইয়া বিষম গোলযোগ উপস্থিত হইবে, এ কথাও বিশেষরূপে বুঝাইয়া দিলেন। অন্ততঃ রাধানাথের সমস্ত বিষয়ের উত্তরাধিকারী হওয়া সুকঠিন হইবে, এ কথাও প্রকাশ করিতে ছাড়েন নাই । র্তাহারা যখন দেখিলেন, বাস্তবিক দেওয়ানজী যাহা মনে করেন, তাহাই করিতে পারেন, গবর্নর জেনারেল কদাচ তাহার পরামর্শব্যতীত কোন কাৰ্যই করিতে চাহেন না, তখন র্তাহারা দেওয়ানজীর কথা শুনিতে বাধ্য হইলেন, এবং তাহার প্রস্তাবমতে ৪ লক্ষ টাকা দিবার অঙ্গীকার করিয়া বালক রাধানাথের দিনাজপুর জমিদারীপ্রাপ্তির উপায় করিয়া লইলেন । নাবালক রাধানাথের নিকট হইতে এই ৪ লক্ষ টাকা গ্রহণ করা, হেস্টিংসসাহেবের এক ভীষণ কলক এবং তজ্জন্য গবর্নর জেনারেল সম্পূর্ণ দোষী । যে নাবালক প্রকৃত উত্তরাধিকারী হইয়া তাহাদের নিকট বিচারের আশায় উপস্থিত হইয়াছে এবং প্রকৃত প্রস্তাবে যে গবর্নমেন্টের পালনীয়, তাহার নিকট এরূপ বিচারবিক্রয় যে অতীব লজ্জার ও ঘৃণার কথা, তাহাতে সন্দেহ নাই। উক্ত ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে হেস্টিংস নিজে ৩ লক্ষ টাকা পাইয়াছিলেন বলিয়া প্রকাশ করেন ; অবশিষ্ট এক লক্ষ গঙ্গাগোবিন্দ র্তাহাকে প্রবচনা করিয়াছেন বলিয়া, হেস্টিংস গঙ্গাগোবিন্দের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং তাহার উপর বিশ্বাস করিতে অনিচ্ছুক হন । ১৭ কিন্তু এ সমস্তই রহস্যময় । হেস্টিংস কোন কালে দেওয়ানজীর প্রতি আন্তরিক অসন্তুষ্ট হন নাই । যেখানে উৎকোচাদি সম্বন্ধে বিশেষ পীড়াপীড়ি উপস্থিত হইত, সেই স্থানে তিনি র্তাহার প্রতি কৃত্রিম ক্ৰোধ প্রকাশ করিতেন । এ ক্ষেত্রেও তাহাই ঘটিয়াছিল। হেস্টিংস বলেন যে, তিনি যে ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে ৩ লক্ষ টাকা প্রাপ্ত হন, তাহা কোম্পানীর ব্যবহারের জন্যই প্রদান করিয়াছিলেন ; তিনি তাহ হইতে এক কপর্দকও লন নাই ; কিন্তু বিশেষ অনুসন্ধানে প্রকাশ পায় যে, দিনাজপুরের ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে কেবল ২ লক্ষ টাকা কোম্পানীর কার্ষে প্রদত্ত হয়।* অবশিষ্ট ২ লক্ষ টাকার কথা হেস্টিংসসাহেব উত্তমরূপে প্রমাণ দিতে পারেন নাই ; কেবল গঙ্গাগোবিন্দের নিকট হইতে এক লক্ষ প্রাপ্ত হন নাই
{{gap}}নাবালক রাধানাথের নিকট হইতে এই ৪ লক্ষ টাকা গ্রহণ করা, হেস্টিংস সাহেবের এক ভীষণ কলঙ্ক এবং তজ্জন্য গবর্নর জেনারেল সম্পূর্ণ দোষী। যে নাবালক প্রকৃত উত্তরাধিকারী হইয়া তাহাদের নিকট বিচারের আশায় উপস্থিত হইয়াছে এবং প্রকৃত প্রস্তাবে যে গবর্নমেন্টের পালনীয়, তাহার নিকট এরূপ বিচারবিক্রয় যে অতীব লজ্জার ও ঘৃণার কথা, তাহাতে সন্দেহ নাই। উক্ত ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে হেস্টিংস নিজে ৩ লক্ষ টাকা পাইয়াছিলেন বলিয়া প্রকাশ করেন ; অবশিষ্ট এক লক্ষ গঙ্গাগােবিন্দ তাহাকে প্রবঞ্চনা করিয়াছেন বলিয়া, হেস্টিংস গঙ্গাগােবিন্দের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং তাহার উপর বিশ্বাস করিতে অনিচ্ছুক হন।<ref>Burke's Impeachment of W. H., Vol. I, p. 199.</ref> কিন্তু এ সমস্তই রহস্যময়। হেস্টিংস কোন কালে দেওয়ানজীর প্রতি আন্তরিক অসন্তুষ্ট হন নাই। যেখানে উৎকোচাদি সম্বন্ধে বিশেষ পীড়াপীড়ি উপস্থিত হইত, সেই স্থানে তিনি তাহার প্রতি কৃত্ৰিম ক্রোধ প্রকাশ করিতেন। এ ক্ষেত্রেও তাহাই ঘটিয়াছিল। হেস্টিংস বলেন যে, তিনি যে ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে ৩ লক্ষ টাকা প্রাপ্ত হন, তাহা কোম্পানীর ব্যবহারের জন্যই প্রদান করিয়াছিলেন । তিনি তাহা হইতে এক কপর্দকও লন নাই; কিন্তু বিশেষ অনুসন্ধানে প্রকাশ পায় যে, দিনাজপুরের ৪ লক্ষ টাকার মধ্যে কেবল ২ লক্ষ টাকা কোম্পানীর কার্যে প্রদত্ত হয়।<ref>Burke's Impeachment of W. H., Vol. I, p. 427.</ref> অবশিষ্ট ২ লক্ষ টাকার কথা হেস্টিংস সাহেব উত্তমরূপে প্রমাণ দিতে পারেন নাই ; কেবল গঙ্গাগােবিন্দের নিকট হইতে এক লক্ষ প্রাপ্ত হন নাই
SS Burke's Impeachment of W. H., Vol. I, p. 199. S& Burke's Impeachment of W. H., Vol. I, p. 427.