পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৩২৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান)
Content fix.
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
তাহারা জানিতেন যে, হেস্টিংসসাহেবের প্রিয়পাত্রের প্রতিবাদ করতে গেলে, তাহাদিগকেই অবসর গ্রহণ করিতে হইবে। ইংরেজরাজত্বে কোন বাঙ্গালী এরূপ অসীম ক্ষমতা প্রাপ্ত হইয়া, দেশের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হইতে পারেন নাই। ধন্য গঙ্গাগােবিন্দ সিংহের সৌভাগ্য যে, আজ সমস্ত বাঙ্গলা, বিহার, উড়িষ্যা একমাত্র তাহারই পদানত।
তাঁহারা জানিতেন যে, হেস্টিংসসাহেবের প্রিয়পাত্রের প্রতিবাদ করতে গেলে, তাহাদিগকেই অবসর গ্রহণ করিতে হইবে। ইংরেজরাজত্বে কোন বাঙ্গালী এরূপ অসীম ক্ষমতা প্রাপ্ত হইয়া, দেশের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হইতে পারেন নাই। ধন্য গঙ্গাগােবিন্দ সিংহের সৌভাগ্য যে, আজ সমস্ত বাঙ্গলা, বিহার, উড়িষ্যা একমাত্র তাহারই পদানত।


আসমস্ত জমিদারদিগের উপর প্রভুত্ব স্থাপন করিয়া, গঙ্গাগােবিন্দ নিজের ও হেস্টিংসসাহেবের জন্য সকলের নিকট হইতে অর্থ-সংগ্রহের চেষ্টায় ফিরিতে লাগিলেন। সর্বাপেক্ষা দিনাজপুরেই তাহাদের অত্যন্ত সুযােগ ঘটিয়া উঠে। বাঙ্গলা ১১৮৪ সালের বর্ষাকালে দিনাজপুরের তদানীন্তন রাজা বৈদ্যনাথ চিররােগী অবস্থায় প্রাণত্যাগ করিলে, তাহার দত্তকপুত্র রাধানাথ ও বৈমাত্রেয় ভ্রাতা কান্তনাথের মধ্যে উত্তরাধিকারিত্ব লইয়া বিবাদ উপস্থিত হয়। বৈদ্যনাথ কান্তনাথের প্রতি তাদৃশ সন্তুষ্ট ছিলেন না ; এইজন্য রাধানাথকে দত্তকপুত্র গ্রহণ করেন। ইহাদের মধ্যে বিবাদ উপস্থিত হওয়ায়, অবশেষে সকাউন্সিল গবর্নর জেনারেলের উপর বিবাদ-মীমাংসার ভার পতিত হয়। বলা বাহুল্য, গবর্নর জেনারেল গঙ্গাগােবিন্দকে পরামর্শ জিজ্ঞাসা করিলেন যে, কে প্রকৃত উত্তরাধিকারী ? গঙ্গাগােবিন্দ সিংহ বলেন যে, যখন রাধানাথকে বৈদ্যনাথ দত্তকপুত্র গ্রহণ করিয়া গিয়াছেন, তখন হিন্দু নিয়মানুসারে তিনি বাস্তবিকই অধিকারী ; সুতরাং তাহাকেই জমিদারী প্রদান করা কর্তব্য ; কান্তনাথ বৈদ্যনাথের সম্পত্তির অধিকারী হইতে পারেন না। যদি রাধানাথকে বৈদ্যনাথ পােষ্যপুত্র গ্রহণ না করিতেন, তাহা হইলে, কান্তনাথ বিষয় পাইলেও পাইতে পারিতেন। আবার গােপনে গােপনে গবর্নমেন্টকে বুঝাইয়া দিলেন যে, রাধানাথের বয়স যখন ৫৬ বৎসর। মাত্র, তখন তাহার জমিদারীর ভার গবর্নমেন্টে হস্তেই পতিত হইবে। একে তিনি প্রকৃত উত্তরাধিকারী, তাহাতে আবার তাহাদের হস্তে বিষয়ের ভার পতিত হইলে তাহাদেরও যথেষ্ট সুবিধা ঘটিবে। অতএব রাধানাথকে না দিয়া, কান্তনাথকে জমিদারী দেওয়া যুক্তিযুক্ত নহে। সুতরাং গবর্নর জেনারেল রাধানাথকে জমিদারী প্রদান করিলেন। রাধানাথ অপ্রাপ্তবয়স্ক বলিয়া গবর্নমেন্টকেই তাহার তত্ত্বাবধানের ভার লইতে হইল। সমিতির দেওয়ান তাহার সুবন্দোস্তের জন্য আদিষ্ট হইলেন।
আসমস্ত জমিদারদিগের উপর প্রভুত্ব স্থাপন করিয়া, গঙ্গাগােবিন্দ নিজের ও হেস্টিংসসাহেবের জন্য সকলের নিকট হইতে অর্থ-সংগ্রহের চেষ্টায় ফিরিতে লাগিলেন। সর্বাপেক্ষা দিনাজপুরেই তাহাদের অত্যন্ত সুযােগ ঘটিয়া উঠে। বাঙ্গলা ১১৮৪ সালের বর্ষাকালে দিনাজপুরের তদানীন্তন রাজা বৈদ্যনাথ চিররােগী অবস্থায় প্রাণত্যাগ করিলে, তাহার দত্তকপুত্র রাধানাথ ও বৈমাত্রেয় ভ্রাতা কান্তনাথের মধ্যে উত্তরাধিকারিত্ব লইয়া বিবাদ উপস্থিত হয়। বৈদ্যনাথ কান্তনাথের প্রতি তাদৃশ সন্তুষ্ট ছিলেন না; এইজন্য রাধানাথকে দত্তকপুত্র গ্রহণ করেন। ইহাদের মধ্যে বিবাদ উপস্থিত হওয়ায়, অবশেষে সকাউন্সিল গবর্নর জেনারেলের উপর বিবাদ-মীমাংসার ভার পতিত হয়। বলা বাহুল্য, গবর্নর জেনারেল গঙ্গাগােবিন্দকে পরামর্শ জিজ্ঞাসা করিলেন যে, কে প্রকৃত উত্তরাধিকারী? গঙ্গাগােবিন্দ সিংহ বলেন যে, যখন রাধানাথকে বৈদ্যনাথ দত্তকপুত্র গ্রহণ করিয়া গিয়াছেন, তখন হিন্দু নিয়মানুসারে তিনি বাস্তবিকই অধিকারী; সুতরাং তাহাকেই জমিদারী প্রদান করা কর্তব্য; কান্তনাথ বৈদ্যনাথের সম্পত্তির অধিকারী হইতে পারেন না। যদি রাধানাথকে বৈদ্যনাথ পােষ্যপুত্র গ্রহণ না করিতেন, তাহা হইলে, কান্তনাথ বিষয় পাইলেও পাইতে পারিতেন। আবার গােপনে গােপনে গবর্নমেন্টকে বুঝাইয়া দিলেন যে, রাধানাথের বয়স যখন ৫৬ বৎসর। মাত্র, তখন তাহার জমিদারীর ভার গবর্নমেন্টে হস্তেই পতিত হইবে। একে তিনি প্রকৃত উত্তরাধিকারী, তাহাতে আবার তাহাদের হস্তে বিষয়ের ভার পতিত হইলে তাহাদেরও যথেষ্ট সুবিধা ঘটিবে। অতএব রাধানাথকে না দিয়া, কান্তনাথকে জমিদারী দেওয়া যুক্তিযুক্ত নহে। সুতরাং গবর্নর জেনারেল রাধানাথকে জমিদারী প্রদান করিলেন। রাধানাথ অপ্রাপ্তবয়স্ক বলিয়া গবর্নমেন্টকেই তাহার তত্ত্বাবধানের ভার লইতে হইল। সমিতির দেওয়ান তাহার সুবন্দোস্তের জন্য আদিষ্ট হইলেন।


{{gap}}হেস্টিংসসাহেবের নিজ মনােমত লােকের অভাব কোথায় ? অমনি দিনাজপুরের নাবালক রাজার তত্ত্বাবধানের জন্য গঙ্গাগােবিন্দ সিংহের পরামর্শানুসারে সুবিখ্যাত দেবীসিংহ নিযুক্ত হইলেন। সাধারণে ভাবিল যে, রাধানাথ যখন বৈদ্যনাথের দত্তক, তখন গবর্নর জেনারেল তাহাকে জমিদারী দিয়া ভালই করিয়াছেন। কিন্তু ভিতরের কথা এক্ষণে প্রকাশ করিয়া বলা আবশ্যক। রাধানাথের পক্ষীয়েরা যখন অবগত হইলেন যে, গঙ্গাগােবিন্দের নিকট গবর্নর জেনারেল পরামর্শ জিজ্ঞাসা করিয়াছেন এবং তাহার ও তাহার পুত্র প্রাণকৃষ্ণের হস্তে জমিদারী-সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র এবং প্রত্যেক বংশের বংশতালিকা রহিয়াছে, তখন তাহার শরণাগত না হইলে, আর কোন
{{gap}}হেস্টিংসসাহেবের নিজ মনােমত লােকের অভাব কোথায়? অমনি দিনাজপুরের নাবালক রাজার তত্ত্বাবধানের জন্য গঙ্গাগােবিন্দ সিংহের পরামর্শানুসারে সুবিখ্যাত দেবীসিংহ নিযুক্ত হইলেন। সাধারণে ভাবিল যে, রাধানাথ যখন বৈদ্যনাথের দত্তক, তখন গবর্নর জেনারেল তাহাকে জমিদারী দিয়া ভালই করিয়াছেন। কিন্তু ভিতরের কথা এক্ষণে প্রকাশ করিয়া বলা আবশ্যক। রাধানাথের পক্ষীয়েরা যখন অবগত হইলেন যে, গঙ্গাগােবিন্দের নিকট গবর্নর জেনারেল পরামর্শ জিজ্ঞাসা করিয়াছেন এবং তাহার ও তাহার পুত্র প্রাণকৃষ্ণের হস্তে জমিদারী-সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজপত্র এবং প্রত্যেক বংশের বংশতালিকা রহিয়াছে, তখন তাহার শরণাগত না হইলে, আর কোন