পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৩৩৩: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান)
Content fix.
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
প্রকৃতির লােক অতি অল্পই দৃষ্ট হইত, তথাপি এ ক্ষেত্রে তাহার অভিযােগের যে একেবারে কোনই মূল ছিল না, তাহা বলা যায় না। হেস্টিংসসাহেবের মধ্যস্থতা হইতে তাহা একরূপ প্রমাণীকৃত হইয়াছিল। যে কমলউদ্দীনের সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করিয়া সুপ্রীমকোর্টের জজের বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ মহারাজ নন্দকুমারকে ফাসীকাঠে লম্বমান করিবার জন্য আদেশ প্রদান করিয়াছিলেন, সেই কমলউদ্দীনই গঙ্গাগােবিন্দের নামে অভিযােগ উপস্থিত করে। সে এই বলিয়া কাউন্সিলে আজি দাখিল করে যে, বাঙ্গল৷ ১১৮১ সালের মাঘ মাসের শেষে রাজস্ব-সমিতির নিকট হইতে ৪ বৎসরের জন্য আমি হিজলী পরগণায় লবণের ইজারা গ্রহণ করি। লক্ষ মণ করিয়া লবণ চালান দিবার জন্য আমার প্রতি আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সমিতির দেওয়ান আমার নিকট হইতে গােপনভাবে ২৬ হাজার টাকা প্রার্থনা করিয়া বলেন যে, লক্ষ মণের অধিক যে লবণ হইবে, তাহা আমি নিজে বিক্রয় করিয়া লাভ করিতে পারি। তজ্জন্য গবর্নমেন্ট হইতে কোনরূপ গােযােগ হইবে না। আমি সেই কথায় প্রথমতঃ ১৫ হাজার টাকার মােহর প্রদান করি। পরে লক্ষ মণের অতিরিক্ত লবণের ছাড় চাহিলে, দেওয়ান সে কথায় কর্ণপাত না করিয়া অবশিষ্ট টাকার জন্য পীড়াপীড়ি করিয়া আমার নিকট হইতে সমস্ত টাকা আদায় করিয়া লন। এক্ষণে যাহারা লবণ প্রস্তুত করে, তাহারা টাকার জন্য পীড়াপীড়ি করিতেছে। সুতরাং যাহাতে দেওয়ান আমাকে উক্ত টাকা প্রদান করেন, তাহার বিধান করা হউক।<ref>Holwell's State Trial, Vol. XX. (The Trial of J. Fowke and others for a conspiracy.)</ref>
প্রকৃতির লােক অতি অল্পই দৃষ্ট হইত, তথাপি এ ক্ষেত্রে তাহার অভিযােগের যে একেবারে কোনই মূল ছিল না, তাহা বলা যায় না। হেস্টিংসসাহেবের মধ্যস্থতা হইতে তাহা একরূপ প্রমাণীকৃত হইয়াছিল। যে কমলউদ্দীনের সাক্ষ্যের উপর নির্ভর করিয়া সুপ্রীমকোর্টের জজের বৃদ্ধ ব্রাহ্মণ মহারাজ নন্দকুমারকে ফাসীকাঠে লম্বমান করিবার জন্য আদেশ প্রদান করিয়াছিলেন, সেই কমলউদ্দীনই গঙ্গাগােবিন্দের নামে অভিযােগ উপস্থিত করে। সে এই বলিয়া কাউন্সিলে আজি দাখিল করে যে, বাঙ্গল৷ ১১৮১ সালের মাঘ মাসের শেষে রাজস্ব-সমিতির নিকট হইতে ৪ বৎসরের জন্য আমি হিজলী পরগণায় লবণের ইজারা গ্রহণ করি। লক্ষ মণ করিয়া লবণ চালান দিবার জন্য আমার প্রতি আদেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সমিতির দেওয়ান আমার নিকট হইতে গােপনভাবে ২৬ হাজার টাকা প্রার্থনা করিয়া বলেন যে, লক্ষ মণের অধিক যে লবণ হইবে, তাহা আমি নিজে বিক্রয় করিয়া লাভ করিতে পারি। তজ্জন্য গবর্নমেন্ট হইতে কোনরূপ গােযােগ হইবে না। আমি সেই কথায় প্রথমতঃ ১৫ হাজার টাকার মােহর প্রদান করি। পরে লক্ষ মণের অতিরিক্ত লবণের ছাড় চাহিলে, দেওয়ান সে কথায় কর্ণপাত না করিয়া অবশিষ্ট টাকার জন্য পীড়াপীড়ি করিয়া আমার নিকট হইতে সমস্ত টাকা আদায় করিয়া লন। এক্ষণে যাঁহারা লবণ প্রস্তুত করে, তাঁহারা টাকার জন্য পীড়াপীড়ি করিতেছে। সুতরাং যাহাতে দেওয়ান আমাকে উক্ত টাকা প্রদান করেন, তাহার বিধান করা হউক।<ref>Holwell's State Trial, Vol. XX. (The Trial of J. Fowke and others for a conspiracy.)</ref>


{{gap}}এই আজি লিখিয়া কমলউদ্দীন মহারাজ নন্দকুমার ও ফাউকসাহেবের দ্বারা কাউন্সিলে আজি প্রেরণ করে ; গবর্নর জেনারেল তাহা অবগত হইয়া কমলউদ্দীনকে বশীভূত করিয়া ফেলেন এবং গ্ৰেহামনামে তদানীন্তন কোম্পানীর জনৈক মুন্সী সদরউদ্দীনের দ্বারা গঙ্গাগােবিন্দ ও কমলউদ্দীনের গােযােগ মিটাইয়া দেন। নন্দকুমারপ্রবন্ধে ইহা উল্লিখিত হইয়াছে। হেস্টিংস কমলউদ্দীনকে বশীভূত করিয়া, সেই বিচারে তাহার সাক্ষ্য প্রদান করাইয়াছিলেন। সেই সাক্ষ্য ও জেরায় কমলউদ্দীন বলিয়াছিল যে, গঙ্গাগােবিন্দের নামে প্রকৃত প্রস্তাবে অভিযােগ করিবে বলিয়া আজি লেখে নাই। তাহার সহিত মনােবিবাদ থাকায়, তাহাকে ভয় দেখাইবার জন্য আজি লিখিয়াছিল এবং মহারাজ নন্দকুমার ও ফাউকসাহেবকে কাউন্সিলে আজি দাখিল করিতে নিষেধ করিয়াছিল। মুলী সদরউদ্দীন তাহাদের বিবাদ মিটাইতে প্রতিশ্রুত হন। তিনি অনুপস্থিত থাকায়, যতদিন তিনি উপস্থিত না হন, ততদিন আজি কাউন্সিলে পাঠাইতে সে নিষেধ করিয়াছিল বলিয়া প্রকাশ করে। সে এইরূপ বলে যে, গঙ্গাগােবিন্দও তাহার নিকট ১৬ হাজার টাকা পাইতেন। মুন্সী সদরউদ্দীন উভয়ের দেনা-পাওনা মিটাইয়া সমস্ত বিষয়ের মীমাংসা করিয়া দিয়াছেন। সুতরাং
{{gap}}এই আজি লিখিয়া কমলউদ্দীন মহারাজ নন্দকুমার ও ফাউকসাহেবের দ্বারা কাউন্সিলে আজি প্রেরণ করে; গবর্নর জেনারেল তাহা অবগত হইয়া কমলউদ্দীনকে বশীভূত করিয়া ফেলেন এবং গ্ৰেহামনামে তদানীন্তন কোম্পানীর জনৈক মুন্সী সদরউদ্দীনের দ্বারা গঙ্গাগােবিন্দ ও কমলউদ্দীনের গােযােগ মিটাইয়া দেন। নন্দকুমারপ্রবন্ধে ইহা উল্লিখিত হইয়াছে। হেস্টিংস কমলউদ্দীনকে বশীভূত করিয়া, সেই বিচারে তাহার সাক্ষ্য প্রদান করাইয়াছিলেন। সেই সাক্ষ্য ও জেরায় কমলউদ্দীন বলিয়াছিল যে, গঙ্গাগােবিন্দের নামে প্রকৃত প্রস্তাবে অভিযােগ করিবে বলিয়া আজি লেখে নাই। তাহার সহিত মনােবিবাদ থাকায়, তাহাকে ভয় দেখাইবার জন্য আজি লিখিয়াছিল এবং মহারাজ নন্দকুমার ও ফাউকসাহেবকে কাউন্সিলে আজি দাখিল করিতে নিষেধ করিয়াছিল। মুলী সদরউদ্দীন তাহাদের বিবাদ মিটাইতে প্রতিশ্রুত হন। তিনি অনুপস্থিত থাকায়, যতদিন তিনি উপস্থিত না হন, ততদিন আজি কাউন্সিলে পাঠাইতে সে নিষেধ করিয়াছিল বলিয়া প্রকাশ করে। সে এইরূপ বলে যে, গঙ্গাগােবিন্দও তাহার নিকট ১৬ হাজার টাকা পাইতেন। মুন্সী সদরউদ্দীন উভয়ের দেনা-পাওনা মিটাইয়া সমস্ত বিষয়ের মীমাংসা করিয়া দিয়াছেন। সুতরাং