পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৩৪১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান)
Content fix.
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
সৎকার্যে ব্যয় করিয়া বঙ্গদেশে নিজ নামকে কিয়ৎপরিমাণে প্রশংসনীয় করিয়া . গিয়াছেন। তাহার মৃত্যুর পর প্রাণকৃষ্ণ সম্পত্তির আরও উন্নতিসাধন করেন। রাধাকান্ত অপুত্রক হওয়ায়, প্রাণকৃষ্ণকে আপনার উত্তরাধিকারী মনােনীত করিয়া যান। প্রাণকৃষ্ণ পিতার ও জ্যেষ্ঠতাত উভয়ের সম্পত্তি প্রাপ্ত হইয়া, অত্যন্ত ধনী হইয়া উঠেন। হেস্টিংস ও গঙ্গাগােবিন্দের সঙ্গে তিনি কার্য হইতে অবসর গ্রহণ করেন নাই। আজিমাবাদবন্দোবস্তের সময় তিনি একজন প্রধান কর্মচারীর পদে নিযুক্ত হইয়া, অনেক অর্থ উপার্জন করিয়াছিলেন। ১৮০১ খ্রীঃ অব্দে প্রাণকৃষ্ণ বাের্ড অব রেভিনিউর নিকট হইতে সুপ্রসিদ্ধ বাগওয়ান ও নলদী পরগণা ক্রয় করেন; এবং বীরভূম জেলার জোবীর ও শ্রীহাটির কিয়দংশ তাহার সময়ে ক্রীত হয়। প্রাণকৃষ্ণের সময়ে তাহাদের উন্নতি চরমসীমায় উপস্থিত হয়। প্রাণকৃষ্ণও অনেক সময়ে সৎকার্যের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। জ্যেষ্ঠতাত ও পিতার পথানুসরণ করিয়া, তিনিও দেবসেবা, ব্রাহ্মণসেবা, অতিথিসেবায় সর্বদা মনোেযােগ দিতেন। তিনি অনেক স্থানে দেবমন্দির প্রতিষ্ঠা করিয়া, দেবসেবার সুবন্দোবস্ত করিয়াছেন।
সৎকার্যে ব্যয় করিয়া বঙ্গদেশে নিজ নামকে কিয়ৎপরিমাণে প্রশংসনীয় করিয়া . গিয়াছেন। তাহার মৃত্যুর পর প্রাণকৃষ্ণ সম্পত্তির আরও উন্নতিসাধন করেন। রাধাকান্ত অপুত্রক হওয়ায়, প্রাণকৃষ্ণকে আপনার উত্তরাধিকারী মনােনীত করিয়া যান। প্রাণকৃষ্ণ পিতার ও জ্যেষ্ঠতাত উভয়ের সম্পত্তি প্রাপ্ত হইয়া, অত্যন্ত ধনী হইয়া উঠেন। হেস্টিংস ও গঙ্গাগােবিন্দের সঙ্গে তিনি কার্য হইতে অবসর গ্রহণ করেন নাই। আজিমাবাদবন্দোবস্তের সময় তিনি একজন প্রধান কর্মচারীর পদে নিযুক্ত হইয়া, অনেক অর্থ উপার্জন করিয়াছিলেন। ১৮০১ খ্রীঃ অব্দে প্রাণকৃষ্ণ বাের্ড অব রেভিনিউর নিকট হইতে সুপ্রসিদ্ধ বাগওয়ান ও নলদী পরগণা ক্রয় করেন; এবং বীরভূম জেলার জোবীর ও শ্রীহাটির কিয়দংশ তাহার সময়ে ক্রীত হয়। প্রাণকৃষ্ণের সময়ে তাহাদের উন্নতি চরমসীমায় উপস্থিত হয়। প্রাণকৃষ্ণও অনেক সময়ে সৎকার্যের অনুষ্ঠান করিয়াছিলেন। জ্যেষ্ঠতাত ও পিতার পথানুসরণ করিয়া, তিনিও দেবসেবা, ব্রাহ্মণসেবা, অতিথিসেবায় সর্বদা মনোেযােগ দিতেন। তিনি অনেক স্থানে দেবমন্দির প্রতিষ্ঠা করিয়া, দেবসেবার সুবন্দোবস্ত করিয়াছেন।


{{gap}}কান্দীর রাজবংশ চিরদিনই ধর্মানুরাগের জন্য বিখ্যাত। প্রাণকৃষ্ণের পুত্র কৃষ্ণচন্দ্র সিংহ সর্বাপেক্ষা ধর্মানুরাগের পরিচয় দিয়া গিয়াছেন। কৃষ্ণচন্দ্রই সমগ্র উত্তরভারতবর্ষে লালাবাবু নামে খ্যাত। কৃষ্ণচন্দ্র প্রথমে বর্ধমানের ম্যাজিস্ট্রেট কালেক্টর ও জজের আফিসের সেরেস্তাদারী কার্য করিতেন। তৎকালে সম্রান্তবংশীয় লােকব্যতীত অপর কাহাকেও ঐরূপ পদে নিযুক্ত করা হইত না। সপ্তদশ বৎসর বয়সে তিনি উক্ত কার্যে নিযুক্ত হন। তাহার পর উড়িষ্যার বন্দোবস্তের সময় তিনি তথায় দেওয়ানের কার্য করিয়াছিলেন। উড়িষ্যায় তিনি অনেক জমিদারী কয় করেন। লালাবাবুও মহাসমারােহে পিতৃশ্রাদ্ধ সম্পন্ন করেন। তিনি, আরবী, ফারসী ও সংস্কৃত ভাষায় ব্যুৎপন্ন ছিলেন। বাল্যকাল হইতে তাহার স্বধর্মের প্রতি অত্যন্ত অনুরাগ ছিল এবং সেই অনুরাগ কমে বধিত হইয়া তাহার সংসারবৈরাগ্য উৎপাদন করে। অবশেষে তিনি সহসা স্ত্রী-পুত্র পরিত্যাগ করিয়া, শ্রীবৃন্দাবনধামে যাত্রা করেন ; এবং তথায় জীবনের অবশিষ্টাংশ যাপন করিয়াছিলেন।
{{gap}}কান্দীর রাজবংশ চিরদিনই ধর্মানুরাগের জন্য বিখ্যাত। প্রাণকৃষ্ণের পুত্র কৃষ্ণচন্দ্র সিংহ সর্বাপেক্ষা ধর্মানুরাগের পরিচয় দিয়া গিয়াছেন। কৃষ্ণচন্দ্রই সমগ্র উত্তরভারতবর্ষে লালাবাবু নামে খ্যাত। কৃষ্ণচন্দ্র প্রথমে বর্ধমানের ম্যাজিস্ট্রেট কালেক্টর ও জজের আফিসের সেরেস্তাদারী কার্য করিতেন। তৎকালে সম্রান্তবংশীয় লােকব্যতীত অপর কাহাকেও ঐরূপ পদে নিযুক্ত করা হইত না। সপ্তদশ বৎসর বয়সে তিনি উক্ত কার্যে নিযুক্ত হন। তাহার পর উড়িষ্যার বন্দোবস্তের সময় তিনি তথায় দেওয়ানের কার্য করিয়াছিলেন। উড়িষ্যায় তিনি অনেক জমিদারী কয় করেন। লালাবাবুও মহাসমারােহে পিতৃশ্রাদ্ধ সম্পন্ন করেন। তিনি, আরবী, ফারসী ও সংস্কৃত ভাষায় ব্যুৎপন্ন ছিলেন। বাল্যকাল হইতে তাহার স্বধর্মের প্রতি অত্যন্ত অনুরাগ ছিল এবং সেই অনুরাগ কমে বধিত হইয়া তাহার সংসারবৈরাগ্য উৎপাদন করে। অবশেষে তিনি সহসা স্ত্রী-পুত্র পরিত্যাগ করিয়া, শ্রীবৃন্দাবনধামে যাত্রা করেন; এবং তথায় জীবনের অবশিষ্টাংশ যাপন করিয়াছিলেন।


{{gap}}তাহার সহসা সংসারপরিত্যাগ সম্বন্ধে নানারূপ গল্প প্রচলিত আছে। তন্মধ্যে আমরা একটি বিষয় উল্লেখ করিতেছি। তাঁহার মনে পূর্ব হইতেই বৈরাগ্যের সঞ্চার হইয়াছিল। একদা সন্ধ্যার প্রাক্কালে তাহার একজন পরিচারিকা বলিয়া উঠে, “সন্ধ্যা হইল, বাসনায় আগুন দিতে হইবে।” লালাবাবু বুঝিলেন যে, জীবনেরও সন্ধ্যা উপস্থিত ; অতএব বাসনা জ্বালাইবার সময় হইয়াছে। অতঃপর তিনি সংসারপরিত্যাগ করিয়া চলিয়া যান।
{{gap}}তাহার সহসা সংসারপরিত্যাগ সম্বন্ধে নানারূপ গল্প প্রচলিত আছে। তন্মধ্যে আমরা একটি বিষয় উল্লেখ করিতেছি। তাঁহার মনে পূর্ব হইতেই বৈরাগ্যের সঞ্চার হইয়াছিল। একদা সন্ধ্যার প্রাক্কালে তাহার একজন পরিচারিকা বলিয়া উঠে, "সন্ধ্যা হইল, বাসনায় আগুন দিতে হইবে।" লালাবাবু বুঝিলেন যে, জীবনেরও সন্ধ্যা উপস্থিত; অতএব বাসনা জ্বালাইবার সময় হইয়াছে। অতঃপর তিনি সংসারপরিত্যাগ করিয়া চলিয়া যান।


{{gap}}লালাবাবু ২৫ লক্ষ টাকা লইয়া প্রথমে বৃন্দাবনে উপস্থিত হন। তথায় দস্যগণ তাহার বাটী লুণ্ঠন করিয়া প্রায় ৩ লক্ষ টাকা লইয়া যায়। বৃন্দাবনধামে লালাবার কঠোর ব্রত অবলম্বন করিয়া সময় অতিবাহিত করিতেন। দেবসেবা ও অতিথিসেবা
{{gap}}লালাবাবু ২৫ লক্ষ টাকা লইয়া প্রথমে বৃন্দাবনে উপস্থিত হন। তথায় দস্যগণ তাহার বাটী লুণ্ঠন করিয়া প্রায় ৩ লক্ষ টাকা লইয়া যায়। বৃন্দাবনধামে লালাবার কঠোর ব্রত অবলম্বন করিয়া সময় অতিবাহিত করিতেন। দেবসেবা ও অতিথিসেবা