পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৩৭৪: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|৩৬৮|মুর্শিদাবাদ-কাহিনী|৩৬৮}}
{{rh|৩৬৮|মুর্শিদাবাদ-কাহিনী|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
একদিনের স্মৃতি
{{C|{{xx-larger|একদিনের স্মৃতি }}}}

বর্ষার জোংরাময়ী রজনীতে পবিত্রসলিলা ভাগীরথীর অপূর্ব শোভা কেহ দেখিয়াছেন কি ? সেই রজতবিনিন্দিত কৌমুদীরাশিতে স্নাত সলিল-প্রবাহের অতুল সৌন্দর্য কাহারও দৃষ্টিপথে পড়িয়াছে কি ? লাবণে ঢল ঢল যৌবনের সর্বাঙ্গীণ স্কৃতির ন্যায় সেই জোংরামাখা আতটপরিপূর্ণ কান্তি কাহারও নয়নগোচর হইয়াছে কি ? মরি মরি সেই অতুলনীয় রূপ না জানি কতই সুন্দর! কতই মধুর। তাহার উপমা ত জগতে খুজিয়া পাই না। যে বৃপের মোহকর ভাবে লীলাময়ী চঞ্চল কম্পন আপনিই ঘুমাইয়া পড়ে, কে তাহার তুলনা আনয়ন করিবে ? কম্পনা ব্যতীত কে আর তুলনা খুজিতে পারে ? নীল জলোচ্ছ্বাসে পূর্ণদেহ পুণ্যস্রোতস্বিনী স্থির অচঞ্চল ভাবে, মন্থর গতিতে, কেমন গমন করিতেছেন। বায়ুর প্রবল ভাব নাই, কাজেই তরঙ্গিণৗহদয়ে সেরূপ তরঙ্গ উঠিতেছে না। বিশ্ব যেরূপ স্থির, ভাগীরথীও সেইরূপ শান্ত। কেবল অস্ফুট কলকলরব দূরাগত বীণাধানির ন্যায় কৰ্ণে অমৃত ঢালিয়া দিতেছে । কবির কথায় যে অনন্ত সঙ্গীত গ্ৰহ-উপগ্রহ হইতে মানব-আত্মারও তারে তারে বাজিতেছে, সেই সঙ্গীতই যেন ভাগীরথীহৃদয় হইতে উঠিয়া আবার অনন্তে মিশিয়া যাইতেছে। নীলাকাশে বসিয়া চন্দ্রদেব হাসির লহর তুলিতেছেন, তাহার সেই মধুর হাস্যরাশি দিগদিগন্তে বিকীর্ণ হইতেছে, মাঝে মাঝে হাস্য সংবরণ করিতে না পারিয়া, দুই একখানি শাদা মেঘাবরণে মুখখানি ঢাকিতেছেন, আবার হাসিয়া আকুল হইতেছেন। আকাশের তারাগুলি চন্দ্রের হাসির ঘটা দেখিয়া অবাক হইয়া রহিয়াছে।
{{gap}}বর্ষার জ্যোৎস্নাময়ী রজনীতে পবিত্ৰসলিলা ভাগীরথীর অপূর্ব শােভা কেহ দেখিয়াছেন কি ? সেই রজতবিনিন্দিত কৌমুদীরাশিতে স্নাত সলিল-প্রবাহের অতুল সৌন্দর্য কাহারও দৃষ্টিপথে পড়িয়াছে কি ? লাবণ্যে ঢল ঢল যৌবনের সর্বাঙ্গীণ স্মৃতির ন্যায় সেই জ্যোৎস্নামাখা আতটপরিপূর্ণা কান্তি কাহারও নয়নগােচর হইয়াছে কি ? মরি মরি সেই অতুলনীয় রূপ না জানি কতই সুন্দর! কতই মধুর! তাহার উপমা ত জগতে খুঁজিয়া পাই না। যে রূপের মােহকর ভাবে লীলাময়ী চঞ্চলা কল্পনা আপনিই ঘুমাইয়া পড়ে, কে তাহার তুলনা আনয়ন করিবে ? কল্পনা ব্যতীত কে আর তুলনা খুজিতে পারে ? নীল জলােচ্ছ্বাসে পূর্ণদেহ৷ পুণ্যস্রোতস্বিনী স্থির অচঞ্চল ভাবে, মন্থর গতিতে, কেমন গমন করিতেছেন। বায়ুর প্রবল ভাব নাই, কাজেই তরঙ্গিণীহৃদয়ে সেরূপ তরঙ্গ উঠিতেছে না। বিশ্ব যেরূপ স্থির, ভাগীরথীও সেইরূপ শান্ত। কেবল অস্ফুট কলকলরব দূরাগত বীণাধ্বনির ন্যায় কর্ণে অমৃত ঢালিয়া দিতেছে। কবির কথায় যে অনন্ত সঙ্গীত গ্রহ-উপগ্রহ হইতে মানব-আত্মারও তারে তারে বাজিতেছে, সেই সঙ্গীতই যেন ভাগীরথীহৃদয় হইতে উঠিয়া আবার অনন্তে মিশিয়া যাইতেছে। নীলাকাশে বসিয়া চন্দ্রদেব হাসির লহর তুলিতেছেন, তাহার সেই মধুর হাস্যরাশি দিগদিগন্তে বিকীর্ণ হইতেছে, মাঝে মাঝে হাস্য সংবরণ করিতে না পারিয়া, দুই একখানি শাদা মেঘাবরণে মুখখানি ঢাকিতেছেন, আবার হাসিয়া আকুল হইতেছেন। আকাশের তারাগুলি চন্দ্রের হাসির ঘটা দেখিয়া অবাক হইয়া রহিয়াছে।
সে দিবস বিষাদ-উৎসব মহরম । যে চন্দ্রদেবকে মহম্মদীয়গণ অধিকতর সম্মান করিয়া থাকেন, তাহাদের বিষাদ-উৎসবে চন্দ্রদেবের হাসি ভাল লাগিল না ; অথবা ভারতে র্তাহাদের বর্তমান অবস্থায় রণোন্মত্তের ন্যায় বেশ দেখিয়া, হয়ত তাহার মনে হাসির উদয় হইয়া থাকিবে । কত সাধের তরণী ভাগীরথীর স্থির হৃদয়ে আঘাত করিয়া চলিয়া যাইতেছে । আঘাতে আঘাতে ভাগীরথীবক্ষে শত শত মাণিক জ্বলিয়৷ উঠিতেছে। তাহার সেই শান্তভাব ঈষৎ উচ্ছ্বসিত হওয়ায় আরও মধুর বোধ হইতেছে । যেখানে আঘাত লাগিতেছে, সেইখানে যেন চন্দ্রদেব সুধা ঢালিয়া বেদন দূর করিতেছেন। বর্ষার জ্যোৎস্নময়ী রজনীর শোভা বাস্তবিকই প্রতিপ্রদ। এরূপ মধুর শোভা দেখিতে কাহার না ইচ্ছা হয় ? বিশেষতঃ তরণীবক্ষ হইতে সেই শোভ} আরও মধুর বলিয়া বোধ হইয়া থাকে।

পূর্বেই বলিয়াছি, সে দিন বিষদ-উৎসব মহরম। বিষাদ-উৎসব কথাটি কেমন কেমন বোধ হয়। কিন্তু আজকাল সর্বত্রই বিষাদ-উৎসব। যে কিছু উৎসব হইয়। থাকে, তাহাতেই বিষাদের মাখামাখি। মহরম-উপলক্ষে নূতন মুর্শিদাবাদ উৎসবময় নূতন মুর্শিদাবাদ বললাম, কারণ পুরাতন মুর্শিদাবাদ এক্ষণে মরুভূমির ন্যায় ধৃ ধূ করিতেছে,—বিস্মৃতির অতলগর্ভে তাহার অস্তিত্ব ডুবিয়া গিয়াছে । শত শত
{{gap}}সে দিবস বিষাদ-উৎসব মহরম। যে চন্দ্রদেবকে মহম্মদীয়গণ অধিকতর সম্মান করিয়া থাকেন, তাহাদের বিষাদ-উৎসবে চন্দ্রদেবের হাসি ভাল লাগিল না; অথবা ভারতে তাহাদের বর্তমান অবস্থায় রণেন্মত্তের ন্যায় বেশ দেখিয়া, হয়ত তাহার মনে হাসির উদয় হইয়া থাকিবে। কত সাধের তরণী ভাগীরথীর স্থির হৃদয়ে আঘাত করিয়া চলিয়া যাইতেছে। আঘাতে আঘাতে ভাগীরথীবক্ষে শত শত মাণিক জ্বলিয়া উঠিতেছে। তাহার সেই শান্তভাব ঈষৎ উচ্ছ্বসিত হওয়ায় আরও মধুর বােধ হইতেছে। যেখানে আঘাত লাগিতেছে, সেইখানে যেন চন্দ্রদেব সুধা ঢালিয়া বেদনা দূর করিতেছেন। বর্ষার জ্যোৎস্নাময়ী রজনীর শােভা বাস্তবিকই প্রীতিপ্রদ। এরূপ মধুর শােভা দেখিতে কাহার না ইচ্ছা হয় ? বিশেষতঃ তরণীবক্ষ হইতে সেই শােভা আরও মধুর বলিয়া বােধ হইয়া থাকে।

{{gap}}পূর্বেই বলিয়াছি, সে দিন বিষাদ-উৎসব মহরম। বিষাদ-উৎসব কথাটি কেমন কেমন বােধ হয়। কিন্তু আজকাল সর্বত্রই বিষাদ-উৎসব। যে কিছু উৎসব হইয়া থাকে, তাহাতেই বিষাদের মাখামাখি। মহরম-উপলক্ষে নূতন মুশিদাবাদ উৎসবময়। নৃতন মুশিদাবাদ বলিলাম, কারণ পুরাতন মুশিদাবাদ এক্ষণে মরুভূমির ন্যায় ধু করিতেছে,—বিস্মৃতির অতলগর্ভে তাহার অস্তিত্ব ডুবিয়া গিয়াছে। শত শত