পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৩৬৮: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|৩৬২|মুর্শিদাবাদ-কাহিনী|৩৬২}}
{{rh|৩৬২|মুর্শিদাবাদ-কাহিনী|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
________________
ব্যার॥১

ভাদ্রমাস, ভাগীরথী কুলে কুলে পুরিয়াছেন, অনন্তপ্রবাহ সলিলরাশি তটে প্রতিহত হইয়া বেগে—সুবেগে—অতি বেগে—সেই বিরাট সাগর হৃদয়ে আত্মবিসর্জনের জন্য ছুটিয়াছে। দিগন্তপ্রসারিত নীলাকাশ, নিবিড় মেঘমালায় সমাবৃত হইয়া, বিষাদাচ্ছন্নের হাস্যের ন্যায় ক্ষীণ বিদ্যুল্লতার আলোকে মধ্যে মধ্যে আপনার অস্তিত্ব দেখাইতেছে। রাত্রিকাল, নৈশ অন্ধকারে পৃথিবী ঢাকিয়া ফেলিয়াছে, রজনী জ্যোৎস্নাশালিনী হইলেও মেঘাবরণে তাহ অন্ধকারময়ী । চতুদিক নীরব,—কেবল তটাভিঘাতিনী ভাগীরথীর জলোচ্ছ্বাস ও তটপতনশব্দ মধ্যে মধ্যে গভীর নৈশ নীরবতা ভঙ্গ করিতেছে । এইরূপ রজনীযোগে, ভাদ্রমাসের শেষ বৃহস্পতিবারে মুর্শিদাবাদের প্রাস্তবাহিনী ভাগীরথীবক্ষে এক অপূর্ব আলোক দৃশ্য নয়নপথে নিপতিত হয়। নিবিড় অন্ধকাররাশিকে দূরদূরান্তরে বিক্ষিপ্ত করিয়া সেই সঞ্চারিণী আলোকমালা ভাগীরথীহৃদয় প্রতিফলিত করিতে করিতে, তরঙ্গে তরঙ্গে প্রতিহত হইয়া যখন গমন করিতে থাকে, তখন সে দৃশ্য বড়ই সুন্দর বলিয়া বোধ হয়। শতহস্তপরিমিত আলোকযান অসংখ্য আলোকমালায় বিভূষিত হইয়া ভাসমান, চতুদিকে ক্ষুদ্রাকারের সেইরূপ যান, ও শত শত কমল' প্রস্ফুটিত কমলের ন্যায় হাসিতে হাসিতে ভাসিতে থাকে। তাহাদিগকে দেখিলে মনে হয় যেন, নীলাকাশস্থ সমস্ত তারকারাজি বিরাট অনন্তরাজ্য হইতে আত্মবিসর্জন করিয়া ভাগীরথীবক্ষে পতিত হইয়াছে । মুশিদাবাদের সৌধাবলী সেই আলোকমালায় পূর্ব গৌরবের ক্ষণস্মৃতির ন্যায় নিমেষের জন্য হাসিয়া, আবার অন্ধকারে আপনাদিগকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলে, ভাগীরথীবক্ষঃস্থিত তরণীনিচয় তাহাতে উদ্ভাসিত হইয়া উঠে । তরণী ও তীরস্থিত সহস্ৰ সহস্র দশকের নয়নগোলক প্রতিবিম্বিত করিয়া, আপনাদিগের ছটা ছুটাইতে ছুটাইতে তাহারা ভাসিয়া চলিয়া যায়। জাহ্নবীসলিলরাশি জ্যোতিৰ্লহরীতে প্রতিফলিত হইয়া বোধ হইতে থাকে, যেন নদীগর্ভে আলোকের তরঙ্গ ছুটাছুটি করিতেছে । মধ্যে মধ্যে আলোকযান হইতে এক এক প্রকারের আতসবাজী সহসা প্রজ্বলিত হইয়া উঠে কেহ বা মনস্তাপে ভাগীরথীগর্ভে প্রবেশ করে, কেহ বা অনন্ত স্পর্শ করিবার আশায় নৈশান্ধকারস্তুপ ভেদ করিয়া উঠিতে উঠিতে না জানি কি মৰ্মবেদনায় ফাটিয়া পড়ে ; কেহ বা শত শত আলোকের ফুল ফুটাইয়া চতুদিকে ভাসমান কমলরাশিকে উপহাস করিতে থাকে। এই সময় তীর হইতেও নানাবিধ আতসবাজী তাহাদের সহিত প্রতি
মুর্শিদাবাদের একটি প্রধান পর্ব। ইহার প্রকৃত নাম বেরা ; কিন্তু সাধারণতঃ ইহা ব্যারা বলিয়া অভিহিত হওয়ায়, আমরা এই প্রবন্ধে সেই নামই নির্দেশ করলাম । ২ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রজ্ঞালিত কপূরপূর্ণ মৃৎপাত্রকে কমল বলিয়া থাকে।
{{C|{{xx-larger|ব্যাৱা }}}}<ref>মুর্শিদাবাদের একটি প্রধান পর্ব। ইহার প্রকৃত নাম বেরা; কিন্তু সাধারণতঃ ইহা ‘ব্যারা' বলিয়া অভিহিত হওয়ায়, আমরা এই প্রবন্ধে সেই নামই নির্দেশ করিলাম।</ref>

{{gap}}ভাদ্রমাস, ভাগীরথী কূলে কূলে পুরিয়াছেন, অনন্তপ্রবাহ সলিলরাশি তটে প্রতিহত হইয়৷ বেগে-সুবেগে-অতি বেগে—সেই বিরাট সাগর হৃদয়ে আত্মবিসর্জনের জন্য ছুটিয়াছে। দিগন্তপ্রসারিত নীলাকাশ, নিবিড় মেঘমালায় সমাবৃত হইয়া, বিষাদচ্ছিন্নের হাস্যের ন্যায় ক্ষীণ বিদ্যুল্লতার আলােকে মধ্যে মধ্যে আপনার অস্তিত্ব দেখাইতেছে। রাত্রিকাল, নৈশ অন্ধকারে পৃথিবী ঢাকিয়া ফেলিয়াছে, রজনী জ্যোৎস্নাশালিনী হইলেও মেঘাবরণে তাহা অন্ধকারময়ী। চতুদিক নীরব,—কেবল তটাভিঘাতিনী ভাগীরথীর জলােচ্ছাস ও তটপতনশব্দ মধ্যে মধ্যে গভীর নৈশ নীরবতা ভঙ্গ করিতেছে।

{{gap}}এইরূপ রজনীযােগে, ভাদ্রমাসের শেষ বৃহস্পতিবারে মুর্শিদাবাদের প্রান্তবাহিনী ভাগীরথীবক্ষে এক অপূর্ব আলোক দৃশ্য নয়নপথে নিপতিত হয়। নিবিড় অন্ধকার রাশিকে দূরদূরান্তরে বিক্ষিপ্ত করিয়া সেই সঞ্চারিণী আলোকমালা ভাগীরথীহৃদয় প্রতিফলিত করিতে করিতে, তরঙ্গে তরঙ্গে প্রতিহত হইয়া যখন গমন করিতে থাকে, তখন সে দৃশ্য বড়ই সুন্দর বলিয়া বােধ হয়। শতহস্তপরিমিত আলােকযান অসংখ্য আলােকমালায় বিভূষিত হইয়া ভাসমান, চতুর্দিকে ক্ষুদ্রাকারের সেইরূপ যান, ও শত শত ‘কমল’<ref>ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রজ্জলিত কপূরপূর্ণ মৃৎপাত্রকে ‘কমল’ বলিয়া থাকে।</ref> প্রস্ফুটিত কমলের ন্যায় হাসিতে হাসিতে ভাসিতে থাকে। তাহাদিগকে দেখিলে মনে হয় যেন, নীলাকাশস্থ সমস্ত তারকারাজি বিরাটু অনন্তরাজ্য হইতে আত্মবিসর্জন করিয়া ভাগীরথীবক্ষে পতিত হইয়াছে। মুর্শিদাবাদের সৌধাবলী সেই আলােকমালায় পূর্ব গৌরবের ক্ষণস্মৃতির ন্যায় নিমেষের জন্য হাসিয়া, আবার অন্ধকারে আপনাদিগকে আচ্ছন্ন করিয়া ফেলে, ভাগীরথীবক্ষঃস্থিত তরণীনিচয় তাহাতে উদ্ভাসিত হইয়া উঠে। তরণী ও তীরস্থিত সহস্র সহস্র দর্শকের নয়নগােলক প্রতিবিম্বিত করিয়া, আপনাদিগের ছটা ছুটাইতে ছুটাইতে তাহারা ভাসিয়া চলিয়া যায়। জাহ্নবীসলিলরাশি জ্যোতির্লহরীতে প্রতিফলিত হইয়া বােধ হইতে থাকে, যেন নদীগর্ভে আলােকের তরঙ্গ ছুটাছুটি করিতেছে। মধ্যে মধ্যে আলােকযান হইতে এক এক প্রকারের আতসবাজী সহসা প্রজ্বলিত হইয়া উঠে। কেহ বা মনস্তাপে ভাগীরথীগর্ভে প্রবেশ করে, কেহ বা অনন্ত স্পর্শ করিবার আশায় নৈশান্ধকারস্তুপ ভেদ করিয়া উঠিতে উঠিতে না জানি কি মর্মবেদনায় ফাটিয়া পড়ে ; কেহ বা শত শত আলােকের ফুল ফুটাইয়া চতুদিকে ভাসমান কমলরাশিকে উপহাস করিতে থাকে। এই সময় তীর হইতেও নানাবিধ আতসবাজী তাহাদের সহিত প্রতি