পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৩৬২: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
NasirkhanBot (আলোচনা | অবদান)
Content fix.
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
অনাদায় হইয়া পড়ে, তাহাও তিনি বিশেষরূপে অবগত করান। কমিটি এই সমস্ত ব্যাপারের প্রমাণ পাইয়া, মনে মনে দেবীসিংহের প্রতি তাদৃশ বিরক্ত না হইলেও, ডিরেক্টরগণের ভয়ে এবং কতকটা চক্ষুলজ্জায় দেবীসিংহের প্রতি দস্তক জারি করিতে এবং তাহার হস্ত হইতে সমস্ত রাজস্ব-আদায়ের ভার উঠাইয়া লইয়া প্রহরী নিযুক্ত করিয়া রাখিতে আদেশ দিলেন, এবং জমিদার ও প্রজাদিগকে দেবীসিংহের নিকট খাজনা দিতে নিষেধ করিয়া পাঠাইলেন। কিন্তু এ সমস্ত লােকদেখান মাত্র। আমরা পরে তাহা দেখাইতে চেষ্টা করিব।
অনাদায় হইয়া পড়ে, তাহাও তিনি বিশেষরূপে অবগত করান। কমিটি এই সমস্ত ব্যাপারের প্রমাণ পাইয়া, মনে মনে দেবীসিংহের প্রতি তাদৃশ বিরক্ত না হইলেও, ডিরেক্টরগণের ভয়ে এবং কতকটা চক্ষুলজ্জায় দেবীসিংহের প্রতি দস্তক জারি করিতে এবং তাহার হস্ত হইতে সমস্ত রাজস্ব-আদায়ের ভার উঠাইয়া লইয়া প্রহরী নিযুক্ত করিয়া রাখিতে আদেশ দিলেন, এবং জমিদার ও প্রজাদিগকে দেবীসিংহের নিকট খাজনা দিতে নিষেধ করিয়া পাঠাইলেন। কিন্তু এ সমস্ত লােকদেখান মাত্র। আমরা পরে তাহা দেখাইতে চেষ্টা করিব।


{{gap}}কলিকাতা-কমিটির আদেশ শুনিয়া দেবীসিংহ একেবারে স্তম্ভিত হইলেন। তিনি জানিতেন না যে, তাহাকে সামান্যমাত্র তিরস্কারও সহ্য করিতে হইবে। কোম্পানীর তৎকালীন যাবতীয় কর্মচারীর সহিত তাহার বিলক্ষণ বাধ্যবাধকতা ছিল ; কিন্তু এক্ষণে তাহার প্রতি কঠোর আদেশের প্রচার হওয়ায়, তিনি নিরতিশয় দুঃখিত হইয়া কাউন্সিলে। এইরূপ দরখাস্ত লিখিয়া পাঠাইলেন। “আমাকে ৩,৯০,২০০ টাকারও অধিক রাজস্ব বাকীর জন্য দায়ী করা হইয়াছে এবং আমি অনেক লােকের প্রাণনাশ করিয়াছি বলিয়া দোষী সাব্যস্ত হইয়াছি, এই সকল কারণে আমার উপর দস্তক জারি করা হইয়াছে। পরন্তু আমাকে কারাগারে রাখিতে অনুমতি হওয়ায়, আমি সে আদেশও পালন করিয়াছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সাক্ষাতে আমার কৈফিয়ৎ না লইয়া, আমাকে একেবারে বন্দী করিবার হুকুম দেওয়া হইয়াছে। প্যাটারসন্সাহেব নিষেধ করিয়াছেন বলিয়া, জমিদারেরা কেহ আমাকে খাজনা দেয় নাই। যদি তাহাদের নিকট হইতে খাজনা লওয়া না হয়, আমার নিকট হইতে লওয়া হউক। কিন্তু আমার চরিত্র ও সুনামের উপর কলঙ্ক প্রদান করা কেন হইয়াছে, তাহা বুঝিতে পারি না। আমি কোন লােকের প্রাণনাশ করি নাই, অথবা রাজস্ব-আদায়ের জন্য কাহারও উপর কোনরূপ অত্যাচার করি নাই। আমি বলিতে পারি যে, আমার দ্বারা একটি পাখিরও পর্যন্ত প্রাণনাশ হয় নাই। যদি তাহা সপ্রমাণ হয়, তবে আমি তৎক্ষণাৎ তদ্বিনিময়ে নিজের ও নিজ পরিবারবর্গের জীবন বলি দিতে প্রস্তুত আছি। অতএব আমার একান্ত প্রার্থনা যে, আমাকে সাক্ষাতে লইয়া গিয়া আমার যাবতীয় কৈফিয়ৎ শুনা হয়।<ref>Minutes of the Evidence in H's Trial, (Appendix, p. 908)</ref>
{{gap}}কলিকাতা-কমিটির আদেশ শুনিয়া দেবীসিংহ একেবারে স্তম্ভিত হইলেন। তিনি জানিতেন না যে, তাহাকে সামান্যমাত্র তিরস্কারও সহ্য করিতে হইবে। কোম্পানীর তৎকালীন যাবতীয় কর্মচারীর সহিত তাহার বিলক্ষণ বাধ্যবাধকতা ছিল; কিন্তু এক্ষণে তাহার প্রতি কঠোর আদেশের প্রচার হওয়ায়, তিনি নিরতিশয় দুঃখিত হইয়া কাউন্সিলে। এইরূপ দরখাস্ত লিখিয়া পাঠাইলেন। "আমাকে ৩,৯০,২০০ টাকারও অধিক রাজস্ব বাকীর জন্য দায়ী করা হইয়াছে এবং আমি অনেক লােকের প্রাণনাশ করিয়াছি বলিয়া দোষী সাব্যস্ত হইয়াছি, এই সকল কারণে আমার উপর দস্তক জারি করা হইয়াছে। পরন্তু আমাকে কারাগারে রাখিতে অনুমতি হওয়ায়, আমি সে আদেশও পালন করিয়াছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সাক্ষাতে আমার কৈফিয়ৎ না লইয়া, আমাকে একেবারে বন্দী করিবার হুকুম দেওয়া হইয়াছে। প্যাটারসন্সাহেব নিষেধ করিয়াছেন বলিয়া, জমিদারেরা কেহ আমাকে খাজনা দেয় নাই। যদি তাহাদের নিকট হইতে খাজনা লওয়া না হয়, আমার নিকট হইতে লওয়া হউক। কিন্তু আমার চরিত্র ও সুনামের উপর কলঙ্ক প্রদান করা কেন হইয়াছে, তাহা বুঝিতে পারি না। আমি কোন লােকের প্রাণনাশ করি নাই, অথবা রাজস্ব-আদায়ের জন্য কাহারও উপর কোনরূপ অত্যাচার করি নাই। আমি বলিতে পারি যে, আমার দ্বারা একটি পাখিরও পর্যন্ত প্রাণনাশ হয় নাই। যদি তাহা সপ্রমাণ হয়, তবে আমি তৎক্ষণাৎ তদ্বিনিময়ে নিজের ও নিজ পরিবারবর্গের জীবন বলি দিতে প্রস্তুত আছি। অতএব আমার একান্ত প্রার্থনা যে, আমাকে সাক্ষাতে লইয়া গিয়া আমার যাবতীয় কৈফিয়ৎ শুনা হয়।<ref>Minutes of the Evidence in H's Trial, (Appendix, p. 908)</ref>


{{gap}}দেবীসিংহের প্রার্থনাপত্র কাউন্সিলে পঠিত হইলে, সভ্যেরা স্থির করিলেন যে, দেবীসিংহের কলিকাতায় আসিয়া কৈফিয়ৎ দেওয়াই সঙ্গত। তাহারা অমনি দেবীসিংহের প্রার্থনা মঞ্জুর করিয়া, তাহাকে কলিকাতায় আসিতে লিখিয়া পাঠাইলেন। দেবীসিংহ মনে করিয়াছিলেন যে, একবার কলিকাতায় সভ্যদিগের সহিত সাক্ষাৎ করিতে পারিলে, যেরূপই হউক, তাহাদের বিরুদ্ধভাব অপনােদন করিতে সমর্থ হইবেন। তাহার অগাধ ঐশ্বর্যবলে তিনি যাহা মনে করিতেন, অবিলম্বে তাহাই সম্পাদন
{{gap}}দেবীসিংহের প্রার্থনাপত্র কাউন্সিলে পঠিত হইলে, সভ্যেরা স্থির করিলেন যে, দেবীসিংহের কলিকাতায় আসিয়া কৈফিয়ৎ দেওয়াই সঙ্গত। তাঁহারা অমনি দেবীসিংহের প্রার্থনা মঞ্জুর করিয়া, তাহাকে কলিকাতায় আসিতে লিখিয়া পাঠাইলেন। দেবীসিংহ মনে করিয়াছিলেন যে, একবার কলিকাতায় সভ্যদিগের সহিত সাক্ষাৎ করিতে পারিলে, যেরূপই হউক, তাহাদের বিরুদ্ধভাব অপনােদন করিতে সমর্থ হইবেন। তাহার অগাধ ঐশ্বর্যবলে তিনি যাহা মনে করিতেন, অবিলম্বে তাহাই সম্পাদন