পাতা:মুর্শিদাবাদ কাহিনী.djvu/৪০৮: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

আফতাব বট (আলোচনা | অবদান)
পাইউইকিবট স্পর্শ সম্পাদনা
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
বৎসর বিষ্ণুচরণ নন্দী ইহার ইজারা লই। ১৯৮০ অব্দ পর্যন্ত নিজ অধিকারে রাখে। ১১৮১ অব্দে কান্তবাবুর পুত্র লােকনাথকে প্রথমে ইজারা দেওয়া হয়। পরে ১৯৮৬ সাল হইতে তাহাকে ৮২,৬৩৯ টাকায় চিরস্থায়িরূপে প্রদান করা হয়। আমরা ইতিপূর্বে কান্তবাবু শীর্ষক প্রবন্ধে দেখাইয়া আসিয়াছি যে, রানী ভবানী বাহারবন্দের জমিদার ছিলেন; কিন্তু হেস্টিংসসাহেব বলপূর্বক তাহার নিকট হইতে সইয়া উক্ত পরগণা বিষ্ণুচরণ ও লােকনাথকে প্রদান করেন। বিষ্ণুচরণ কান্তবাবুর বেনামদার ও লােকনাথ তাহার পুত্র। মহারাজ নন্দকুমার কাউন্সিলে ইহার জন্য হেস্টিংসের প্রতি দোষারােপ করেন এবং কাউন্সিলের সভ্যরা তজ্জন্য হেস্টিংসসাহেবকে যৎপরােনাস্তি লাঞ্ছিত করিয়াছিলেন। লােকনাথকে চিরস্থায়িরূপে বাহারবন্দ প্রদান করায়, ডিরেক্টরগণ অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হইয়া তাহার হস্ত হইতে পুনর্বার লইবার জন্য লিখিয়া পাঠান ; কিন্তু হেস্টিংস সে বিষয়ে কর্ণপাত করেন নাই। বাহারবন্দ এক্ষণে কাশীমবাজার রাজবংশের সম্পত্তি। দানশীল৷ মহারানী স্বর্ণময়ী মহােদয়া ইহার অগাধ আয় প্রতিনিয়ত পুণ্যকার্যে ব্যয় করিয়া বাহারবন্দকে দেশমধ্যে আরও স্মরণীয় করিয়া গিয়াছেন এবং বাহারবন্দের পুরাতন নামের সহিত তাহার পবিত্র নাম মিশিয়া বঙ্গবাসীর হৃদয়ে এক অভূতপূর্ব আনন্দের সঞ্চার করিতেছে। মহারানীর উপযুক্ত বংশধর মহারাজ মণীন্দ্রচন্দ্রও মহারানী মহােদয়ার অনুকরণ করিতেছেন।


{{gap}}বাহারবন্দের সহিত আর একটি ঐতিহাসিক ঘটনা বিজড়িত রহিয়াছে। বঙ্কিমচন্দ্রের দেবী চৌধুরাণীর ভবানী পাঠক কাহারও নিকট অবিদিত নাই। ইংরেজ শাসনের প্রারম্ভে রঙ্গপুর অঞ্চলে ভবানী ও দেবী কিরূপে প্রভুত্ব বিস্তার করিয়াছিলেন, এবং কিরূপে ইংরেজ-শাসনে বাধা প্রদান করিয়াছিলেন, যাহারা দেবী চৌধুরাণী পাঠ করিয়াছেন, তাহারা ইহা বিশেষরূপে অবগত আছেন। খরবেগা ত্রিস্রোতার সলিলরাশি ও তীরভূমি আলােড়িত করিয়া পাঠক ও দেবীর অনুচরগণ যে ইংরেজহৃদয়ে আতঙ্ক উপস্থিত করিয়াছিল, তাহার অনেক প্রমাণ আছে। পাঠকের আর একজন বন্ধু ছিল, তাহার নাম মজনু শাহ। তিনজনের উপদ্রবে অস্থির হইয়া রঙ্গপুরের তৎকালীন কালেক্টর গুডল্যাডসাহেব লেপ্টেনান্ট ব্রেনানকে একদল সিপাহীর সহিত তাহাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। বাহারবন্দেই ভবানী পাঠকের সহিত ব্রেনানের যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পাঠক ও তঁাহার তিন জন অধীন সেনাপতি নিহত, আটজন আহত এবং ৪২ জন বন্দী হয়। এইরূপে তাহাদের উপদ্রবের উপশম হইয়াছিল। উপরিলিখিত যাবতীয় বিবরণ আলােচনা করিলে বুঝা যায় যে, প্রাচীন কাল হইতে বাহারবন্দ বাঙ্গলার মধ্যে একটি প্রসিদ্ধ ভূভাগ বলিয়া কথিত হইয়া আসিতেছে। ইহার সহিত হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলমান ও ইংরেজ রাজত্বের অনেক ঐতিহাসিক বিবরণ বিজড়িত রহিয়াছে।
৪o২ মুর্শিদাবাদ-কাহিনী
বৎসর বিষ্ণুচরণ নন্দী ইহার ইজারা লই । ১১৮০ অব্দ পর্যন্ত নিজ অধিকারে রাখে। ১১৮১ অব্দে কাস্তবাবুর পুত্র লোকনাথকে প্রথমে ইজারা দেওয়া হয় ; পরে ১১৮৬ সাল হইতে র্তাহাকে ৮২,৬৩৯ টাকায় চিরস্থায়িবৃপে প্রদান করা হয় । আমরা ইতিপূর্বে কান্তবাবু শীর্ষক প্রবন্ধে দেখাইয়া আসিয়াছি যে, রানী ভবানী বাহারবন্দের জমিদার ছিলেন ; কিন্তু হেস্টিংসসাহেব বলপূর্বক তাহার নিকট হইতে লইয়া উত্ত পরগণা বিষ্ণুচরণ ও লোকনাথকে প্রদান করেন । বিষ্ণুচরণ কান্তবাবুর বেনামদার ও লোকনাথ তাহার পুত্র। মহারাজ নন্দকুমার কাউন্সিলে ইহার জন্য হেস্টিংসের প্রতি দোষারোপ করেন এবং কাউন্সিলের সভ্যরা তজ্জন্য হেস্টিংসসাহেবকে যৎপরোনাস্তি লাঞ্ছিত করিয়াছিলেন। লোকনাথকে চিরস্থায়িবৃপে বাহারবন্দ প্রদান করায়, ডিরেক্টরগণ অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হইয়া তাহার হস্ত হইতে পুনর্বার লইবার জন্য লিখিয়া পাঠান ; কিন্তু হেস্টিংস সে বিষয়ে কর্ণপাত করেন নাই । বাহারবন্দ এক্ষণে কাশীমবাজার রাজবংশের সম্পত্তি । দানশীল মহারানী স্বর্ণময়ী মহোদয়া ইহার অগাধ আয় প্রতিনিয়ত পুণ্যকার্যে ব্যয় করিয়া বাহারবন্দকে দেশমধ্যে আরও স্মরণীয় করিয়া গিয়াছেন এবং বাহারবন্দের পুরাতন নামের সহিত র্তাহার পবিত্র নাম মিশিয়া বঙ্গবাসীর হৃদয়ে এক অভূতপূর্ব আনন্দের সঞ্চার করিতেছে। মহারানীর উপযুক্ত বংশধর মহারাজ মণীন্দ্রচন্দ্রও মহারানী মহোদয়ার অনুকরণ করিতেছেন। বাহারবন্দের সহিত আর একটি ঐতিহাসিক ঘটনা বিজড়িত রহিয়াছে । বঙ্কিমচন্দ্রের দেবী চৌধুরাণীর ভবানী পাঠক কাহারও নিকট অবিদিত নাই। ইংরেজ শাসনের প্রারম্ভে রঙ্গপুর অঞ্চলে ভবানী ও দেবী কিরূপে প্রভুত্ব বিস্তার করিয়াছিলেন, এবং কিরূপে ইংরেজ-শাসনে বাধা প্রদান করিয়াছিলেন, যাহারা দেবী চৌধুরাণী পাঠ করিয়াছেন, তাহারা ইহা বিশেষরূপে অবগত আছেন। খরবেগ ত্রিস্রোতার সলিলরাশি ও তীরভূমি আলোড়িত করিয়া পাঠক ও দেবীর অনুচরগণ যে ইংরেজহৃদয়ে আতঙ্ক উপস্থিত করিয়াছিল, তাহার অনেক প্রমাণ আছে । পাঠকের আর একজন বন্ধু ছিল, তাহার নাম মজনু শাহা । তিনজনের উপদ্রবে অস্থির হইয়া রঙ্গপুরের তৎকালীন কালেক্টর গুডল্যাডসাহেব লেপ্টেনাণ্ট ব্রেনানকে একদল সিপাহীর সহিত তাহাদের বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন । বাহারবন্দেই ভবানী পাঠকের সহিত ব্রেনানের যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে পাঠক ও র্তাহার তিন জন অধীন সেনাপতি নিহত, আটজন আহত এবং ৪২ জন বন্দী হয়। এইরূপে তাহদের উপদ্রবের উপশম হইয়াছিল। উপরিলিখিত যাবতীয় বিবরণ আলোচনা করিলে বুঝা যায় যে, প্রাচীন কাল হইতে বাহারবন্দ বাঙ্গলার মধ্যে একটি প্রসিদ্ধ ভূভাগ বলিয়। কথিত হইয়া আসিতেছে । ইহার সহিত হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলমান ও ইংরেজ রাজত্বের অনেক
ঐতিহাসিক বিবরণ বিজড়িত রহিয়াছে.।