পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৮৩৫: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Pywikibot touch edit
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||বিবিধ প্রবন্ধ|৮৩৫}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
________________
বিবিধ প্রবন্ধ br(II

“মন্ত্রী, ওরা কি চায়?” মন্ত্রী বলিলেন, “ বড় খিদে পেয়েছে কিছু খাবার চায়” অমনি হুকুম হইল দশ হাজার টাকার সন্দেশ কিনিয়া ওদের বাড়ি পাঠাইয়া দাও। ধূর্ত মন্ত্রী দশ হাজার টাকা লাভ হইল, এক প্রহর পরে আবার শেয়াল ডাকিল।“ এবারে কি চায়?” “বড় শীত, গরম কাপড় চায়।” হুকুম হইল লক্ষ টাকার বনাত কিনিয়া দাও। এক প্রহর পরে আবার শেয়াল ডাকিল। “এখন কি চায়?” “বড় মশা, মশারি চায়।” আরো লক্ষ টাকা মঞ্জুর। আবার এক প্রহর পরে শেয়াল ডাকিল "এবারে কি চায়?” “এবারে কিছুচায় না, মহারাজকে আশীবাদ করে।” অমনি রাজা মহাসন্তুষ্ট হইয়া কোটি টাকা মূল্যের শাল মন্ত্রীকে দিয়া ফেলিলেন।
বিবিধ প্রবন্ধ
শেয়ালের একটা দুর্বলতা আছে। এক শেয়াল ডাকিলে আর গুলি চুপ করিয়া থাকিতে পারে না। আমার কোনো বন্ধুর বাড়িতে একটা শেয়াল খাবার খুঁজতে আসিয়াছিল। স্বাভাবিক ধূর্ততার সাহায্যে কেহ দেখিতে পাইবার পূর্বেই সে একটা ঘরের ভিতর যাইয়া মাচার নীচে আশ্রয় গ্রহণ করিল। সেখানে কতক্ষণ ছিল বলা যায় না, কিনতু সে সেখানে থাকিতে থাকিতেই জঙ্গলে একটা শেয়াল ডাকিল। আমনি আর কথা নাই, বেচারা দেশকাল সব ভুলিয়া গিয়া সেই ঘরের ভিতর হইতেই ‘ক্যা হুয়া” “ক্যা হুয়া” প্রশ্ন করিতে আরম্ভ করিল। প্রশ্নের উত্তর আর জঙ্গল হইতে শুনিতে হইল না। বাড়ির লোকেরা আসিয়াই সে বিষয়ে তাহার জ্ঞান পরিষ্কার করিয়া দিল।
৮৩৫
শেয়ালের ধূর্ততা সম্বন্ধে সকলেই কিছু কিছু জানেন। আমাদের একজন চাকর একবার একটা শেয়ালকে লক্ষ্য করিয়া ইট ছুড়িয়াছিল। দৈবাৎ ইটটা শেয়ালের কপালে লাগিল। লাগিবামাত্রই শেয়াল হিক শব্দ করিয়া মাটিতে পড়িয়া গেল। শেয়াল মরিয়াছে শুনিয়া সকলেরই আনন্দ। তাহাকে টানিয়া উঠানে আনিয়া সকলে বৃত্তাকার তাহার চারিদিক দাঁড়াইলেন। অনেক মন্তব্য প্রকাশের পর একজন বলিলেন, “আমার সন্দেহ হয়, এটা মরে নি।” এবিষয়ে কিঞ্চিৎ তর্ক-বিতর্ক হইল, তারপর একজন বলিলেন, “এত কথায় কাজ কি, একটা লাঠি এনে দু ঘা মেরে সন্দেহ দূর করে দাও না?” এই বলিয়া তিনি লাঠি আনিতে চলিলেন। তিনি চলিয়া যাওয়াতে যে একটুকু ফাঁক হইয়াছিল, শেয়ালটাও সময় বুঝিয়া সেইখান দিয়া চম্পট করিল।
“মন্ত্রী, ওরা কি চায়?” মন্ত্রী বলিলেন, “ বড় খিদে পেয়েছে কিছু খাবার চায়” অমনি হুকুম হইল দশ হাজার টাকার সন্দেশ কিনিয়া ওদের বাড়ি পাঠাইয়া দাও। ধূর্ত মন্ত্রী দশ হাজার টাকা লাভ হইল, এক প্রজ্ঞ পরে আবার শেয়াল ডাকিল।“ এবারে কি চায়?” “বড় শীত, গরম কাপড় চায়।” হুকুম হইল লক্ষ টাকার বনাত কিনিয়া দাও। এক প্রহর পরে আবার শেয়াল ডাকিল। “এখন কি চায়?” “বড় মশা, মশারি চায়।” আরাে লক্ষ টাকা মঞ্জুর। আবার এক প্রহর পরে শেয়াল ডাকিল “এবারে কি চায়?” “এবারে কিছু চায় না, মহারাজকে আশীর্বাদ করে।” অমনি রাজা মহাসন্তুষ্ট হইয়া কোটি টাকা মূল্যের শাল মন্ত্রীকে দিয়া ফেলিলেন।
এক পাদরি সাহেব পাড়াগাঁয়ে থাকিতেন। সেখানে শেয়ালের বড় অত্যাচার; তাঁহার সবগুলি মুরগি খাইয়া ফেলিত। সাহেব উপায়ান্তর না দেখিয়া খুব শক্ত একটা কাঠের ঘর করিলেন, তাহার ভিতরে মুরগি রাখিয়া দরজা বন্ধ করিয়া রাখা হইত। একদিন সাহেবের চাকরানী মুরগি ঘরে যাইয়া দেখে, যে একটা শেয়াল ঘরের ভিতরে আসিয়া প্রায় সবগুলি মুরগি মারিয়া ফেলিয়াছে। কেবল কয়েকটি মাত্র প্রাণভয়ে উপরে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছে। সেগুলিকেও উদরসাৎ করিবার জন্য চেষ্টায় আছে। চাকরানীকে দেখিয়াই ধূর্ত শেয়াল মৃতপ্রায় হইয়া রহিল। সাহেব আসিয়া শেয়ালকে মৃত প্রায় দেখিলেন এবং তাহার একটু আহ্বাদের বিষয় এই হইল যে, খাইতে খাইতে পেট ফাঁপিয়া শেয়ালটাও মরিয়া গিয়াছে। এখন তাহার প্রেতাত্মার উদ্দেশে ইচ্ছামতো গালিবর্ষণ করিয়া তাহাকে অনেক দূরে মাঠে ফেলিয়া দিয়া আসা হইল। যিনি ফেলিয়া দিতে গিয়াছিলেন তিনি একবার পশ্চাৎ ফিরিয়া দেখেন যে শেয়ালটা দৌড়িয়া পলাইতেছে!

{{gap}}শেয়ালের একটা দুর্বলতা আছে। এক শেয়াল ডাকিলে আর গুলি চুপ করিয়া থাকিতে পারে না। আমার কোনাে বন্ধুর বাড়িতে একটা শেয়াল খাবার খুঁজিতে আসিয়াছিল। স্বাভাবিক ধূর্ততার সাহায্যে কেহ দেখিতে পাইবার পূর্বেই সে একটা ঘরের ভিতর যাইয়া মাচার নীচে আশ্রয় গ্রহণ করিল। সেখানে কতক্ষণ ছিল বলা যায় না, কিনতু সে সেখানে থাকিতে থাকিতেই জঙ্গলে একটা শেয়াল ডাকিল। অমনি আর কথা নাই, বেচারা দেশকাল সব ভুলিয়া গিয়া সেই ঘরের ভিতর হইতেই “ক্যা হুয়া” “ক্যা হুয়া” প্রশ্ন করিতে আরম্ভ করিল। প্রশ্নের উত্তর আর জঙ্গল হইতে শুনিতে হইল না। বাড়ির লােকেরা আসিয়াই সে বিষয়ে তাহার জ্ঞান পরিষ্কার করিয়া দিল।

{{gap}}শেয়ালের ধূর্ততা সম্বন্ধে সকলেই কিছু কিছু জানেন। আমাদের একজন চাকর একবার একটা শেয়ালকে লক্ষ্য করিয়া ইট ছুঁড়িয়াছিল। দৈবাৎ ইটটা শেয়ালের কপালে লাগিল। লাগিবামাত্রই শেয়াল ‘হিক শব্দ করিয়া মাটিতে পড়িয়া গেল। শেয়াল মরিয়াছে শুনিয়া সকলেরই আনন্দ। তাহাকে টানিয়া উঠানে আনিয়া সকলে বৃত্তাকার তাহার চারিদিক দাঁড়াইলেন। অনেক মন্তব্য প্রকাশের পর একজন বলিলেন, “আমার সন্দেহ হয়, এটা মরে নি।” এবিষয়ে কিঞ্চিৎ তর্ক-বিতর্ক হইল, তারপর একজন বলিলেন, “এত কথায় কাজ কি, একটা লাঠি এনে দু ঘা মেরে সন্দেহ দূর করে দাও না?” এই বলিয়া তিনি লাঠি আনিতে চলিলেন। তিনি চলিয়া যাওয়াতে যে একটুকু ফাঁক হইয়াছিল, শেয়ালটাও সময় বুঝিয়া সেইখান দিয়া চম্পট করিল।

{{gap}}এক পাদরি সাহেব পাড়াগাঁয়ে থাকিতেন। সেখানে শেয়ালের বড় অত্যাচার; তাঁহার সবগুলি মুরগি খাইয়া ফেলিত। সাহেব উপায়ান্তর না দেখিয়া খুব শক্ত একটা কাঠের ঘর করিলেন, তাহার ভিতরে মুরগি রাখিয়া দরজা বন্ধ করিয়া রাখা হইত। একদিন সাহেবের চাকরানী মুরগি ঘরে যাইয়া দেখে, যে একটা শেয়াল ঘরের ভিতরে আসিয়া প্রায় সবগুলি মুরগি মারিয়া ফেলিয়াছে। কেবল কয়েকটি মাত্র প্রাণভয়ে উপরে আশ্রয় গ্রহণ করিয়াছে। সেগুলিকেও উদরসাৎ করিবার জন্য চেষ্টায় আছে। চাকরানীকে দেখিয়াই ধূর্ত শেয়াল মৃতপ্রায় হইয়া রহিল। সাহেব আসিয়া শেয়ালকে মৃত প্রায় দেখিলেন এবং তাহার একটু আহ্বাদের বিষয় এই হইল যে, খাইতে খাইতে পেট ফাঁপিয়া শেয়ালটাও মরিয়া গিয়াছে। এখন তাহার প্রেতাত্মার উদ্দেশে ইচ্ছামতাে গালিবর্ষণ করিয়া তাহাকে অনেক দূরে মাঠে ফেলিয়া দিয়া আসা হইল। যিনি ফেলিয়া দিতে গিয়াছিলেন তিনি একবার পশ্চাৎ ফিরিয়া দেখেন যে শেয়ালটা দৌড়িয়া পলাইতেছে!