পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৮৪৫: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Pywikibot touch edit
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||বিবিধ প্রবন্ধ|৮৪৫}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
এরূপ গল্প আছে যে, একবার এই শ্রেণীর কতকগুলি স্ত্রীলােক একটা বিড়ালের নামকরণ করিয়া রাত্রিযােগে তাহাকে লীহ্ নগরের সামনে রাখিয়া আসিল। এরপর সেই নগরে এমন এক ঝড় হইল যে, তেমন ঝড় সেখানকার কেহ কখনাে দেখে নাই। সাধারণ লােকের এইপ্রকার কুসংস্কার থাকাতে অনেক সময় অনেক ভয়ানক ঘটনা হইত। কোনাে স্থানে হয়তাে ক্রমাগত কতগুলি দুর্ঘটনা হইল; অমনি সকলে সিদ্ধান্ত করিয়া বসিল যে, নিশ্চয়ই কেহ জাদু করিয়াছে। গ্রামের এক কোণে এক গরিব বুড়ি বাস করে, সংসারে তাহার কেহ নাই। হয়তাে তাহার মনটা একটু হিংসুকে; হয়তাে গ্রামের একজন একদিন তাহাকে আপনমনে বকিতে দেখিয়াছে;আর একজন হয়তাে বুড়িকে একদিন লাঠি হাতে করিয়া কাক তাড়াইতে দেখিয়াছে। গ্রামের লােকের বুড়ির উপর ভারি সন্দেহ হইতে লাগিল। এরপর যদি বুড়ির একটা কালাে বিড়াল থাকে, তবেই সর্বনাশ! বুড়ি নিশ্চয়ই ডাইনী। এমন সময় গ্রামের একজন চাষার মনে হইল যে, একদিন তাহার গােরু বুড়ির শসা গাছ খাইয়া ফেলিয়াছিল, সেইজন্য গােরুকে বুড়ি “তাের মুনিব উচ্ছন্ন যাউক” বলিয়া গালি দিয়াছিল, তারপর হইতে সেই চাষার ক্ষেতে ইন্দুর আসিয়াছে। আর রক্ষা নাই বুড়ি ডাইনী; বুড়ির বিচার হইবে।
বিবিধ প্রবন্ধ br8(?

এরূপ গল্প আছে যে, একবার এই শ্রেণীর কতকগুলি স্ত্রীলোক একটা বিড়ালের নামকরণ করিয়া রাত্রিযোগে তাহাকে লীথ নগরের সামনে রাখিয়া আসিল। এরপর সেই নগরে এমন এক ঝড় হইল যে, তেমন ঝড় সেখানকার কেহ কখনো দেখে নাই। সাধারণ লোকের এইপ্রকার কুসংস্কার থাকাতে অনেক সময় অনেক ভয়ানক ঘটনা হইত। কোনো স্থানে হয়তো ক্রমাগত কতগুলি দুর্ঘটনা হইল;অমনি সকলে সিদ্ধান্ত করিয়া বসিল যে, নিশ্চয়ই কেহ জাদু করিয়াছে। গ্রামের এক কোণে এক গরিব বুড়ি বাস করে, সংসারে তাহার কেহ নাই। হয়তো তাহার মনটা একটু হিংসুকে ; হয়তো গ্রামের একজন একদিন তাহাকে আপনমনে বকিতে দেখিয়াছে;আর একজন হয়তো বুড়িকে একদিন লাঠি হাতে করিয়া কাক তাড়াইতে দেখিয়াছে। গ্রামের লোকের বুড়ির উপর ভারি সন্দেহ হইতে লাগিল। এরপর যদি বুড়ির একটা কালো বিড়াল থাকে, তবেই সর্বনাশ! বুড়ি নিশ্চয়ই ডাইনী। এমন সময় গ্রামের একজন চাষার মনে হইল যে, একদিন তাহার গোরু বুড়ির শসা গাছ খাইয়া ফেলিয়াছিল, সেইজন্য গোরুকে বুড়ি “তোর মুনিব উচ্ছন্ন যাউক বলিয়া গালি দিয়াছিল, তারপর হইতে সেই চাষার ক্ষেতে ইন্দুর আসিয়াছে। আর রক্ষা নাই—বুড়ি ডাইনী; বুড়ির বিচার হইবে। বিচারটা আবার কিরূপ জান ? বুড়ির হাত-পা বাঁধিয়া তাহাকে পুকুরে ফেলিয়া দেওয়া হইবে:ইহাতে যদি সে ডুবিয়া মরে তবে সে নিদোষ, আর যদি তাহা না হয়, তবে সে দোষী, তাহাকে পোড়াইয়া ফেলা হইবে।
{{gap}}বিচারটা আবার কিরূপ জান? বুড়ির হাত-পা বাঁধিয়া তাহাকে পুকুরে ফেলিয়া দেওয়া হইবেইহাতে যদি সে ডুবিয়া মরে তবে সে নিদোষ, আর যদি তাহা না হয়, তবে সে দোষী, তাহাকে পােড়াইয়া ফেলা হইবে।
যাহা-হউক, আমরা বিড়ালের কথা ভুলিয়া যাইতেছি। আমি বলিতেছিলাম, বিড়ালকে কেহই দেখিতে পারে না। কিন্তু তাই বলিয়া বিড়ালের কোনো সদগুণ নাই, এমন কথা বলা উচিত নয়। প্রথমে দেখ, বিড়ালের যদি কোনো গুণই না থাকিবে তবে এত লোকে বিড়াল পোষে কেন? চেহারার জন্য? ঠিক তাহা নহে। ইদুর মারে বলিয়া? তাহাইবা কেমন করিয়া বলি। অনেক বড়লোক এক-একটা বিড়ালকে যারপরনাই ভালোবাসিয়া গিয়াছেন। ইংলন্ডের

থাকিয়া ক্রমে বৃদ্ধ হইল, তাহার শেষকাল আসিল। এই সময়ে জনসন হজের যেপ্রকার শুশ্রুষা করিতেন, অনেক বাপ ছেলের জন্য তেমন করে না। জনসন স্বয়ং বাজারে গিয়া হজের আহারের জন্য ঝিনুক কিনিয়া আনিতেন।
{{gap}}যাহা-হউক, আমরা বিড়ালের কথা ভুলিয়া যাইতেছি। আমি বলিতেছিলাম, বিড়ালকে কেহই দেখিতে পারে না। কিন্তু তাই বলিয়া বিড়ালের কোনাে সদ্গুণ নাই, এমন কথা বলা উচিত নয়। প্রথমে দেখ, বিড়ালের যদি কোনাে গুণই না থাকিবে তবে এত লােকে বিড়াল পােষে কেন? চেহারার জন্য? ঠিক তাহা নহে। ইদুর মারে বলিয়া? তাহাই বা কেমন করিয়া বলি। অনেক বড়লােক এক-একটা বিড়ালকে যারপরনাই ভালােবাসিয়া গিয়াছে। ইংলন্ডের বিখ্যাত পন্ডিত ডাক্তার জনের হজ’ নামে একটা বিড়াল ছিল। হজ জনের বাড়িতে থাকিয়া ক্রমে বৃদ্ধ হইল, তাহার শেষকাল আসিল। এই সময়ে জনসন হজের যেপ্রকার শুশ্রুষা করিতেন, অনেক বাপ ছেলের জন্য তেমন করে না। জন্ন্ স্বয়ং বাজারে গিয়া হজের আহারের জন্য ঝিনুক কিনিয়া আনিতেন।
ইটালীর একজন খুব বিখ্যাত পাদরির তিনটা এঙ্গোরা বিড়াল ছিল। খানার সময় টেবিলের পাশে পাদরি-সাহেবের জন্য যেমন চেয়ার দেওয়া হইত, তেমন বিড়ালগুলির জন্যও চেয়ার থাকিত। হাজার বড়লোক পাদরি সাহেবের সঙ্গে খানা খাইতে আসুন-না কেন, তাঁহাকেও সেই বিড়ালগুলির সঙ্গে এক টেবিলে বসিয়া খানা খাইতে হইত।

বিলাতের আর-একজন বড়লোকের কথা শুনিয়াছি। তিনি অবিবাহিত ছিলেন, একটা বিড়ালী বৈ তাঁহার আর সঙ্গী ছিল না। এই বিড়ালীও সাহেবের সঙ্গে এক টেবিলে বসিয়া খানা খাইত। এমন কি, একটা খাবার জিনিস আসিলে তাহার এক টুকরা আগে বিড়ালীর পাতে দেওয়া হইত, তারপর সাহেব অবশিষ্টটুকু আহার করিতেন। এই সাহেবের একজন বন্ধু একবার তাঁহার বাড়িতে অতিথি হইলেন। খানার সময় সাহেব মাংসের টুকরা কাটিয়া প্রথমে বন্ধুর পাতে দিলেন। এই সম্মানটুকু এতদিন বিড়ালীর ছিল। আজ তাহার অন্যথা হওয়াতে সে এতদূর অপমানিত বোধ করিল যে, একলাফে টেবিলের উপরে উঠিয়া
{{gap}}ইটালীর একজন খুব বিখ্যাত পাদরির তিনটা এঙ্গোরা বিড়াল ছিল। খানার সময় টেবিলের পাশে পাদরি-সাহেবের জন্য যেমন চেয়ার দেওয়া হইত, তেমন বিড়ালগুলির জন্যও চেয়ার থাকিত। হাজার বড়লােক পাদরি সাহেবের সঙ্গে খানা খাইতে আসুননা কেন, তাঁহাকেও সেই বিড়ালগুলির সঙ্গে এক টেবিলে বসিয়া খানা খাইতে হইত।

{{gap}}বিলাতের আর-একজন বড়লােকের কথা শুনিয়াছি। তিনি অবিবাহিত ছিলেন, একটা বিড়ালী বৈ তাঁহার আর সঙ্গী ছিল না। এই বিড়ালীও সাহেবের সঙ্গে এক টেবিলে বসিয়া খানা খাইত। এমন কি, একটা খাবার জিনিস আসিলে তাহার এক টুকরা আগে বিড়ালীর পাতে দেওয়া হইত, তারপর সাহ্বে অবশিষ্টটুকু আহার করিতেন। এই সাহেবের একজন বন্ধু একবার তাঁহার বাড়িতে অতিথি হইলেন। খানার সময় সাহেব মাংসের টুকরা কাটিয়া প্রথমে বন্ধুর পাতে দিলেন। এই সম্মানটুকু এতদিন বিড়ালীর ছিল। আজ তাহার অন্যথা হওয়াতে সে এতদুর অপমানিত বােধ করিল যে, একলাফে টেবিলের উপরে উঠিয়া