পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৮৪০: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Pywikibot touch edit
Nasirkhan (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|৮৪০|উপেন্দ্রকিশাের রচনাসমগ্র|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
হইয়াছে। যে বেচারা সাহস করিয়া একাকী চলিয়া গিয়াছিল, তাহাকে সেই স্থানে পতিত দেখিলাম। তাহার রক্তে সেই স্থান ভাসিয়া যাইতেছিল। প্রথমে বােধ হইয়াছিল যেন তাহার প্রাণ বাহির হইয়া গিয়াছে। তাহার নাড়িভূঁড়ি পেট ফাটিয়া বাহির হইয়া পড়িয়াছে। পাশেই বন্দুকটা পড়িয়া আছে-বন্দুকের কাঠের অংশটা ভাঙ্গিয়া গিয়াছে নলটা চ্যাপ্টা হইয়া বাঁকিয়া গিয়াছে। গরিলার দাঁতের দাগ তাহাতে স্পষ্ট দেখা যাইতেছে। আমরা তাহাকে তুলিলাম। আমার কাপড় ছিড়িয়া তাহার ঘায়ে পটি বাঁধিয়া দিলাম। একটু ব্রান্ডি খাইতেদিলে পর তাহার চৈতন্য হইল—অতি কষ্টে সে কথা কহিতে লাগিল। সে বলিল যে হঠাৎ সে গরিলাটার সামনে পড়িয়া গিয়াছিল;তখন সেটা পলাইতে চেষ্টা করে নাই। সেটা একটা মস্ত পুরুষ গরিলা; দেখিতে ভয়ানক হিংস্র বলিয়া বােধ হইল। জঙ্গলের সে স্থানটা অন্ধকার ছিল, বােধহয় অন্ধকারের জন্য তাহার লক্ষ্য ঠিক হয় নাই। সে বলিল যে সে খুব মনােযােগপূর্বক সন্ধান করিয়াছিল, এবং কেবলমাত্র আটফিট দূর হইতে গুলি করিয়াছিল। গুলিটা এক পাশে লাগিয়াছিল। গুলি খাইয়াই সেটা বুক চাপড়াইতে লাগিল আর ভয়ানক রাগিয়া তাহার দিকে আসিতে লাগিল। দৌড়িয়া পালানাে তখন অসম্ভব, দশ পা যাইবার পূর্বেই তাহাকে ধরিয়া ফেলিবে। সে দাঁড়াইয়া রহিল, এবং যত শীঘ্র সম্ভব পুনরায় বন্দুক ভরিল। পুনরায় গুলি করিবার জন্য যেই সে বন্দুক উঠাইতেছিল, অমনি গরিলাটা তাহার হাত হইতে সেটাকে কাড়িয়া লইয়া ছুড়িয়া ফেলিয়া দিল। পড়িবার সময় সেটা ছুটিয়া গেল। তারপর ভয়ানক শব্দ করিয়া সেই জানােয়ারটা তাহার পেটে আঘাত করিল। সেই আঘাতেই পেট কাটিয়া নাড়িভুড়ির কিয়দংশ বাহির হইয়া পড়িয়াছিল। রক্তাক্ত শরীরে সে মাটিতে পড়িয়া গেল। গরিলাটা তাহাকে ছাড়িয়া বন্দুকটা ধরিল ইহা দেখিয়া সে বেচাবা মনে করিল যে বুঝি বন্দুক দিয়া তাহার মাথা ভাঙ্গিয়া দিবে। কিন্তু গরিলা বােধহয় সেটাকেও শত্রু মনে করিয়াছিলসুতরাং সে তাহাকে দাঁতে চিবাইয়া চ্যাপ্টা করিয়া দিল।
し*8の উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র

হইয়াছে। যে বেচারা সাহস করিয়া একাকী চলিয়া গিয়াছিল, তাহাকে সেই স্থানে পতিত দেখিলাম। তাহার রক্তে সেই স্থান ভাসিয়া যাইতেছিল। প্রথমে বোধ হইয়াছিল যেন তাহার প্রাণ বাহির হইয়া গিয়াছে। তাহার নাড়িভূড়ি পেট ফাটিয়া বাহির হইয়া পড়িয়াছে। পাশেই বন্দুকটা পড়িয়া আছে—বন্দুকের কাঠের অংশটা ভাঙ্গিয়া গিয়াছে নলটা চ্যাপ্টা হইয়া বাকিয়া গিয়াছে। গরিলার দাঁতের দাগ তাহাতে স্পষ্ট দেখা যাইতেছে। আমরা তাহাকে তুলিলাম। আমার কাপড় ছিড়িয়া তাহার ঘায়ে পটি বাঁধিয়া দিলাম। একটু ব্রান্ডি খাইতেদিলে পর তাহার চৈতন্য হইল—অতি কষ্টে সে কথা কহিতে লাগিল। সে বলিল যে হঠাৎ সে গরিলাটার সামনে পড়িয়া গিয়াছিল;তখন সেটা পলাইতে চেষ্টা করে নাই। সেটা একটা মস্ত পুরুষ গরিলা;দেখিতে ভয়ানক হিংস্র বলিয়া বোধ হইল। জঙ্গলের সে স্থানটা অন্ধকার ছিল, বোধহয় অন্ধকারের জন্য তাহার লক্ষ্য ঠিক হয় নাই। সে বলিল যে সে খুব মনোযোগপূর্বক সন্ধান করিয়াছিল, এবং কেবলমাত্র আটফিট দূর হইতে গুলি করিয়াছিল। গুলিটা এক পাশে লাগিয়াছিল। গুলি খাইয়াই সেটা বুক চাপড়াইতে লাগিল আর ভয়ানক রাগিয়া তাহার দিকে আসিতে লাগিল। দৌড়িয়া পালানো তখন অসম্ভব, দশ পা যাইবার পূর্বেই তাহাকে ধরিয়া ফেলিবে। সে দাঁড়াইয়া রহিল, এবং যত শীঘ্র সম্ভব পুনরায় বন্দুক ভরিল। পুনরায় গুলি করিবার জন্য যেই সে বন্দুক উঠাইতেছিল, অমনি গরিলাটা তাহার হাত হইতে সেটাকে কাড়িয়া লইয়া ছুড়িয়া ফেলিয়া দিল। পড়িবার সময় সেটা ছুটিয়া গেল। তারপব ভয়ানক শব্দ করিয়া সেই জানোয়ারটা তাহার পেটে আঘাত করিল। সেই আঘাতেই পেট কাটিয়া নাড়ির্ভুড়ির কিয়দংশ বাহির হইয়া পড়িয়াছিল। রক্তাক্ত শরীরে সে মাটিতে পড়িয়া গেল। গরিলাটা তাহাকে ছাড়িয়া বন্দুকটা ধরিল ইহা দেখিয়া সে বেচাবা মনে করিল যে বুঝি বন্দুক দিয়া তাহার মাথা ভাঙ্গিয়া দিবে। কিন্তু গরিলা বোধহয় সেটাকেও শত্ৰু মনে করিয়াছিল— সুতরাং সে তাহাকে দাঁতে চিরাইয়া চ্যাপ্টা করিয়া দিল।
আর-এক স্থানে তিনি বলিযাছেন—“আমরা নিঃশব্দে যাইতেছিলাম, হঠাৎ একটা শব্দ শুনিতে পাইলাম, আর তখনই একটা স্ত্রী-গরিলাকে দেখিলাম। একটি অতি শিশু গরিলা তাহার বুকে ঝুলিয়া দুধ খাইতেছে। মাতা তাহার পিঠ চাপড়াইতেছিল আর স্নেহেব সহিত তাহাকে চাহিয়া দেখিতেছিল। দেখিয়া আমার এত ভালো বোধ হইল এবং আমাব প্রাণে এত লাগিল যে, আমি সহসা গুলি করিতে চাহিলাম না। আমি ইতস্তত করিতেছি, এমন সময় আমার সঙ্গের একজন শিকারী তাহাকে গুলি করিয়া মারিয়া ফেলিল, সেটা আমনি পড়িয়া গেল। মাতা পড়িয়া গেলে ছানাটি তাহাকে জড়াইয়া ধরিল আর চিৎকার করিয়া তাহার মনোযোগ আকর্ষণ করিতে চেষ্টা করিল। আমি সেই স্থানে গেলাম। আমাকে দেখিয়া বেচারা তাহার মায়ের বুকে মাথা লুকাইল। ছানাটি চলিতেও পারিত নাকামড়াইতেও শিখে নাইসুতরাং আমরা সহজেই তাহাকে ধরিতে পারিলাম। আমি সেটিকে লইয়া চলিলাম;সঙ্গে র লোকেরা তাহার মায়ের শরীরটা বাশৈ করিয়া বহিয়া আনিল। যখন আমরা গ্রামে আসিলাম, তখন আর-এক দৃশ্য দেখা গেল। লোকেরা মরা গরিলাটাকে মাটিতে রাখিল, আমি ছানাটিকে কাছে রাখিলাম। তাহার মাকে দেখিবামাত্র সে হামাগুড়ি দিয়া তাহার কাছে গেল এবং দুধ খাইতে চেষ্টা করিল। দুধ না পাইয়া হয়তো মনে করিল যে একটা কিছু হইয়াছে।” তখন সে অতিশয় দুঃখের সহিত হু হু হু! বলিয়া চীৎকার করিয়া উঠিল, আমার প্রাণে বড়ই দুঃখ
{{gap}}আর-এক স্থানে তিনি বলিযাছেন—“আমরা নিঃশব্দে যাইতেছিলাম, হঠাৎ একটা শব্দ শুনিতে পাইলাম, আর তখনই একটা স্ত্রী-গরিলাকে দেখিলাম। একটি অতি শিশু গরিলা তাহার বুকে ঝুলিয়া দুধ খাইতেছে। মাতা তাহার পিঠ চাপড়াইতেছিল আর স্নেহের সহিত তাহাকে চাহিয়া দেখিতেছিল। দেখিয়া আমার এত ভালাে বােধ হইল এবং আমার প্রাণে এত লাগিল যে, আমি সহসা গুলি করিতে চাহিলাম না। আমি ইতস্তত করিতেছি, এমন সময় আমার সঙ্গের একজন শিকারী তাহাকে গুলি করিয়া মারিয়া ফেলিল, সেটা অমনি পড়িয়া গেল। মাতা পড়িয়া গেলে গুনাটি তাহাকে জড়াইয়া ধরিল আর চিৎকার করিয়া তাহার মনোেযােগ আকর্ষণ করিতে চেষ্টা করিল। আমি সেই স্থানে গেলাম। আমাকে দেখিয়া বেচারা তাহার মায়ের বুকে মাথা লুকাইল। ছানাটি চলিতেও পারিত নাকামড়াইতেও শিখে নাইসুতরাং আমরা সহজেই তাহাকে ধরিতে পারিলাম। আমি সেটিকে দইয়া চলিলাম;সঙ্গে র লােকেরা তাহার মায়ের শরীরটা বাশৈ করিয়া বহিয়া আনিল। যখন আমরা গ্রামে আসিলাম, তখন আর-এক দৃশ্য দেখা গেল। লােকেরা মরা গরিলাটাকে মাটিতে রাখিল, আমি ছানাটিকে কাছে রাখিলাম। তাহার মাকে দেখিবামাত্র সে হামাগুড়ি দিয়া তাহার কাছে গেল এবং দুধ খাইতে চেষ্টা করিল। দুধ না পাইয়া হয়তাে মনে করিল যে একটা কিছু হইয়াছে।” তখন সে অতিশয় দুঃখের সহিত হহহ! বলিয়া চীৎকার করিয়া উঠিল, আমার প্রাণে বড়ই দুঃখ