পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৩৯১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Pywikibot touch edit
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||গল্পমালা|৩১১}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{gap}}এ-সব ত শুধু গল্প, এবার একটি সত্যিকারের চাকরের কথা বলি। তার নাম, ধরে নাও যেন কেনারাম। কেনারাম সেজেগুজে একটা বোটের ছাতে উঠে বসে আছে—তার বাবুর সঙ্গে এক জায়গায় তামাশা দেখতে যাবে। খানিক বাদেই বোটের ভিতর থেকে জুতোর শব্দ এল; কেনারাম বুঝল বাবু বেরুচ্ছেন, এইবেলা যেতে হবে। সে অমনি তাড়াতাড়ি বোটের ছাত থেকে লাফিয়ে পড়ল—আর পড়ল ঠিক তার বাবুর ঘাড়ে।
গল্পমালা ○ぬ>

এ-সব ত শুধু গল্প, এবার একটি সত্যিকারের চাকরের কথা বলি। তার নাম, ধরে নাও যেন কেনারাম। কেনারাম সেজেগুজে একটা বোটের ছাতে উঠে বসে আছে—তার বাবুর সঙ্গে এক জায়গায় তামাশা দেখতে যাবে। খানিক বাদেই বোটের ভিতর থেকে জুতোর শব্দ এল; কেনারাম বুঝল বাবু বেরুচ্ছেন, এইবেলা যেতে হবে। সে অমনি তাড়াতাড়ি বোটের ছাত থেকে লাফিয়ে পড়ল—আর পড়ল ঠিক তার বাবুর ঘাড়ে।
প্রথমে যখন কেনারাম আসে তখন একজন পুরনো চাকর বলেছিল, ‘বাবু কাছারি থেকে এলে রোজ তাকে পান খেতে দিও।' সেদিন বাবু কাছারি থেকে এসেই পায়খানায় গেলেন, কেনারামও তাড়াতাড়ি সেইখানেই গিয়ে তাঁকে বলল, ‘বাবু পান এনেছি।’
{{gap}}প্রথমে যখন কেনারাম আসে তখন একজন পুরনো চাকর বলেছিল, ‘বাবু কাছারি থেকে এলে রোজ তাকে পান খেতে দিও।’ সেদিন বাবু কাছারি থেকে এসেই পায়খানায় গেলেন, কেনারামও তাড়াতাড়ি সেইখানেই গিয়ে তাঁকে বলল, ‘বাবু পান এনেছি।’

বেচারাম কেনারাম প্রথম দৃশ্য
{{C|{{larger|'''বেচারাম কেনারাম'''}}}}
(জামা রিপু করিতে কবিতে কেনারাম চাকবের প্রবেশ) কেনা। ঐ যা! আবার খানিকটা ছিড়ে গেল! ছুতেই ছিড়ে যায়, তা বিপু করব কি? ভাল মনিব জুটেছে খাই হোক, এই জামাটা দিয়েই কবছর কাটালে। তিন বছর ত আমিই এইরকম দেখছি, আরো বা ক'বছর দেখতে হয়। তবু যদি চারটে পেট ভরে খেতে দিত। তাও কেমন? সকালে মনিব চাবটি ভাত খান, আমি ফ্যানটুকু খাই, রাত্তিরে তিনি হাডি চাটেন আমি শুকি তার উপর শ্রবণশক্তিটি কি প্রখর! বাড়িওয়ালা সেদিন টাকার জন্যে কি-ই না বললে! বাড়িওয়ালা বলে, টাকা দেও, ঢের টাকা বাকি। মনিব বলেন তা ভাল ভাল, তোমার বাড়ি আজ নেমস্তন্ন ?’ বাড়িওয়ালা বলে, ‘এমন করে ভাড়া ফেলে রাখলে চলে কই?’ মনিব বলেন, ‘তা আচ্ছা, চাকরটিও সঙ্গে যাবে।’ বাড়িওয়ালা বেচারী, রেগেমেগে চলে গেল। বড়লোক হতে হলে বোধহয় আমার মনিবের মতই কত্তে হয়, কিন্তু এর কাছে থেকে বড়লোক হওয়ার কায়দাটাই শেখা হবে। বড়লোক হওয়ার ভরসা বড় নেই। রাখবার সময় কত আশাই দিয়েছিলেন, আর আজ এই তিন বছরে একটি পয়সা মাইনে দিলেন না! দেখি আজ যদি মাইনে না দেয়, তবে আর এর কাজ করা হচ্ছে না।
{{C|{{larger|'''প্রথম দৃশ্য'''}}}}
[প্ৰস্থান (বেচারাম মনিবের প্রবেশ) মনিব । চাকরটা জামাটা নিয়ে কত কথা বলছিল! সব শুনেছি। বেটা ভেবেছে, আমি সত্যিই কালা। আরে আমার মত যদি কান থাকত তা হলে আর চাকরি কত্তে হত না। আমি যা করে খাই, তাই করে খেতে পাও। ঘরের ভিতবে ক'জন জেগে আছে, ক'জন ঘুমুচ্ছে, দাওয়ায় কান পেতে সব বুঝে নি। কোথায় সিন্দুকের ভেতর আরশুলা কড়কড় কচ্চে, বাইরে থেকে বুঝে নি। বাপু হে। কানে শুনি, কানে শুনি। কানে শোনাটা ত বেশ ভালই, কিন্তু না শোনার যে সুবিধা আছে, তা ত বুঝবে না? এই সেদিন বাড়িওয়ালা বেটা ফাকি দিয়ে টাকা আদায় কত্ত। কানে না শোনার কত সুবিধা দেখো, পাওনাদারের টাকা দিতে হয় না, বাড়ি ভাড়া দিতে হয় না, চাকরের মাহিনা দিতে হয় না—

{{C|(জামা রিপু করিতে করিতে কেনারাম চাকরের প্রবেশ)}}
{{gap}}কেনা। ঐ যা! আবার খানিকটা ছিঁড়ে গেল! ছুঁতেই ছিড়ে যায়, তা রিপু করব কি? ভাল মনিব জুটেছে যাই হোক, এই জামাটা দিয়েই ক’বছর কাটালে। তিন বছর ত আমিই এইরকম দেখছি, আরো বা ক’বছর দেখতে হয়। তবু যদি চারটে পেট ভরে খেতে দিত! তাও কেমন? সকালে মনিব চারটি ভাত খান, আমি ফ্যানটুকু খাই, রাত্তিরে তিনি হাঁড়ি চাটেন আমি শুঁকি তার উপর শ্রবণশক্তিটি কি প্রখর! বাড়িওয়ালা সেদিন টাকার জন্যে কি-ই না বললে! বাড়িওয়ালা বলে, ‘টাকা দেও, ঢের টাকা বাকি।’ মনিব বলেন ‘তা ভাল ভাল, তোমার বাড়ি আজ নেমন্তন্ন?’ বাড়িওয়ালা বলে, ‘এমন করে ভাড়া ফেলে রাখলে চলে কই?’ মনিব বলেন, ‘তা আচ্ছ, চাকরটিও সঙ্গে যাবে।’ বাড়িওয়ালা বেচারী, রেগেমেগে চলে গেল। বড়লোক হতে হলে বোধহয় আমার মনিবের মতই কত্তে হয়, কিন্তু এঁর কাছে থেকে বড়লোক হওয়ার কায়দাটাই শেখা হবে। বড়লোক হওয়ার ভরসা বড় নেই। রাখবার সময় কত আশাই দিয়েছিলেন, আর আজ এই তিন বছরে একটি পয়সা মাইনে দিলেন না! দেখি আজ যদি মাইনে না দেয়, তবে আর এর কাজ করা হচ্ছে না।
{{right|[প্রস্থান]}}

{{C|(বেচারাম মনিবের প্রবেশ)}}
{{gap}}মনিব। চাকরটা জামাটা নিয়ে কত কথা বলছিল! সব শুনেছি। বেটা ভেবেছে, আমি সত্যিই কালা। আরে আমার মত যদি কান থাকত তা হলে আর চাকরি কত্তে হত না। আমি যা করে খাই, তাই করে খেতে পাও। ঘরের ভিতবে ক’জন জেগে আছে ক’জন ঘুমুচ্ছে, দাওয়ায় কান পেতে সব বুঝে নি। কোথায় সিন্দুকের ভেতর আরশুলা কড়কড় কচ্চে, বাইরে থেকে বুঝে নি। বাপু হে। কানে শুনি, কানে শুনি। কানে শোনাটা ত বেশ ভালই, কিন্তু না শোনার যে সুবিধা আছে তা ত বুঝবে না? এই সেদিন বাড়িওয়ালা বেটা ফাঁকি দিয়ে টাকা আদায় কত্ত। কানে না শোনার কত সুবিধা দেখো, পাওনাদারের টাকা দিতে হয় না, বাড়ি ভাড়া দিতে হয় না, চাকরের মাহিনা দিতে হয় না—