পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/৬৩৮: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Pywikibot touch edit
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh|৬৩৮|উপেন্দ্রকিশাের রচনাসমগ্র|}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{C|{{larger|'''অলস উট'''}}}}
উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র سb(ساوا

অলস উট
সত্যযুগে এক বনের ভিতরে যার পর নাই বোকা আর অলস একটা বিশাল উট ছিল। মুনিরা তপস্যা করেন, তাহ দেখিয়া সেই উট বলিল, “আমিও তপস্যা করিব।”
{{gap}}সত্যযুগে এক বনের ভিতরে যার পর নাই বোকা আর অলস একটা বিশাল উট ছিল। মুনিরা তপস্যা করেন, তাহা দেখিয়া সেই উট বলিল, “আমিও তপস্যা করিব।”

এই বলিয়া সে সত্য সত্যই অতি ঘোরতর তপস্যা আরম্ভ করিল। তপস্যার সময় মুনিরা যতরকম কঠিন কাজ করিয়া থাকেন, তাহার কিছুই সে করিতে বাকি রাখিল না, শেষে একদিন “ব্রহ্মা তাহার তপস্যায় তুষ্ট হইয়া তাহাকে বর দিতে আসিলেন।”
{{gap}}এই বলিয়া সে সত্য সত্যই অতি ঘোরতর তপস্যা আরম্ভ করিল। তপস্যার সময় মুনিরা যতরকম কঠিন কাজ করিয়া থাকেন, তাহার কিছুই সে করিতে বাকি রাখিল না, শেষে একদিন “ব্রহ্মা তাহার তপস্যায় তুষ্ট হইয়া তাহাকে বর দিতে আসিলেন।”
ব্ৰহ্মা তাহার নিকট আসিয়া বলিলেন, “বাপু! তোমার অতি উত্তম তপস্যা হইয়াছে। এখন বল দেখি, তুমি কি চাও?”

উট বলিল, “ঠাকুর, আপনি যদি দয়া করিয়া আমার এই গলাটিকে একশো যোজন লম্বা করিয়া দেন, তবে বড় ভাল হয়।”
{{gap}}ব্রহ্মা তাহার নিকট আসিয়া বলিলেন, “বাপু! তোমার অতি উত্তম তপস্যা হইয়াছে। এখন বল দেখি, তুমি কি চাও?”
এ কথায় ব্রহ্মা ‘তথাস্তু’ বলিয়া সেখান হইতে চলিয়া গেলেন। তারপর দেখিতে দেখিতে সেই উটের গলা একশত যোজন লম্বা হইয়া গেল। এখন আর উটের সুখের সীমা নাই! আহারের জন্য আর আগের মত তাহার বনে বনে ঘুরিয়া বেড়াইতে হয় না। একশত যোজনের ভিতরে যত কচি ঘাস, কোমল পাতা আর মিষ্ট ফল আছে, সে এক জায়গায় শুইয়াই সব খাইতে পায়।

এমনি করিয়া সারাটা গ্রীষ্মকাল তাহার পরম সুখে কাটিয়া গেল, তারপর আসিল বর্ষাকাল। তখন সে বেচারা তাহার সেই একশত যোজন লম্বা গলা লইয়া এমনই বিপদে পড়িল যে, কি বলিব !
{{gap}}উট বলিল, “ঠাকুর, আপনি যদি দয়া করিয়া আমার এই গলাটিকে একশো যোজন লম্বা করিয়া দেন, তবে বড় ভাল হয়।”
দিন রাত বনে বনে ঘুরিয়াসে সারা হইয়া গেল, কোথাও এমন একটু জায়গা পাইল না, যেখানে তাহার গলাটি রাখে। শেষে অনেক খুজিয়া সে একটা পর্বতের গুহা দেখিতে পাইল, তাহাও একশত যোজন লম্বা। সেই গুহায় গলা ঢুকাইয়া সে কিছুকালের জন্য বৃষ্টির হাত হইতে বাঁচল।

তারপর বড়ই ভয়ানক বৃষ্টি আরম্ভ হইল, আর সেই বৃষ্টিতে সকল দেশ জলে ডুবিয়া গেল। সেই সময়ে এক শিয়াল আর তাহার শিয়ালনী বৃষ্টির তাড়ায় যার পর নাই কাতর হইয়া শীতে কাঁপতে কাঁপতে বনে বনে ঘুরিয়া বেড়াইতেছিল, কিন্তু কোথাও একটু থাকিবার জায়গা বা খাইবার জিনিস পায় নাই। শেষে ক্ষুধায় অস্থির হইয়া অনেক কষ্টে তাহারা সেই পর্বতের গুহায় আসিয়া ঢোকে। গুহায় ঢুকিয়া সেই উটের গলা দেখিতে পাইবামাত্রই তাহারা আনন্দে সহিত তাহ খাইতে আরম্ভ করিল। সরু গুহার মধ্যে গলা গুটাইবারও সাধ্য নাই, একশত যোজন লম্বা সেই জিনিসটাকে তাড়াতাড়ি বাহির করিয়া আনিবারও উপায় নাই, কাজেই তখন সেই বোকা উটের কি দশা হইল, বুঝিতেই পার।
{{gap}}এ কথায় ব্রহ্মা ‘তথাস্তু’ বলিয়া সেখান হইতে চলিয়া গেলেন।

{{gap}}তারপর দেখিতে দেখিতে সেই উটের গলা একশত যোজন লম্বা হইয়া গেল।

{{gap}}এখন আর উটের সুখের সীমা নাই! আহারের জন্য আর আগের মত তাহার বনে বনে ঘুরিয়া বেড়াইতে হয় না। একশত যোজনের ভিতরে যত কচি ঘাস, কোমল পাতা আর মিষ্ট ফল আছে, সে এক জায়গায় শুইয়াই সব খাইতে পায়।

{{gap}}এমনি করিয়া সারাটা গ্রীষ্মকাল তাহার পরম সুখে কাটিয়া গেল, তারপর আসিল বর্ষাকাল। তখন সে বেচারা তাহার সেই একশত যোজন লম্বা গলা লইয়া এমনই বিপদে পড়িল যে, কি বলিব!

{{gap}}দিন রাত বনে বনে ঘুরিয়া-সে সারা হইয়া গেল, কোথাও এমন একটু জায়গা পাইল না, যেখানে তাহার গলাটি রাখে। শেষে অনেক খুঁজিয়া সে একটা পর্বতের গুহা দেখিতে পাইল, তাহাও একশত যোজন লম্বা। সেই গুহায় গলা ঢুকাইয়া সে কিছুকালের জন্য বৃষ্টির হাত হইতে বাঁচিল।

{{gap}}তারপর বড়ই ভয়ানক বৃষ্টি আরম্ভ হইল, আর সেই বৃষ্টিতে সকল দেশ জলে ডুবিয়া গেল। সেই সময়ে এক শিয়াল আর তাহার শিয়ালনী বৃষ্টির তাড়ায় যার পর নাই কাতর হইয়া শীতে কাঁপতে কাঁপিতে বনে বনে ঘুরিয়া বেড়াইতেছিল, কিন্তু কোথাও একটু থাকিবার জায়গা বা খাইবার জিনিস পায় নাই। শেষে ক্ষুধায় অস্থির হইয়া অনেক কষ্টে তাহারা সেই পর্বতের গুহায় আসিয়া ঢোকে। গুহায় ঢুকিয়া সেই উটের গলা দেখিতে পাইবামাত্রই, তাহারা আনন্দে সহিত তাহা খাইতে আরম্ভ করিল। সরু গুহার মধ্যে গলা গুটাইবারও সাধ্য নাই, একশত যোজন লম্বা সেই জিনিসটাকে তাড়াতাড়ি বাহির করিয়া আনিবারও উপায় নাই, কাজেই তখন সেই বোকা উটের কি দশা হইল, বুঝিতেই পার।
{{nop}}