পাতা:উপেন্দ্রকিশোর রচনাসমগ্র.djvu/১৬৩: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Pywikibot touch edit
 
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):শীর্ষক (অন্তর্ভুক্ত হবে না):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
{{rh||ছেলেদের রামায়ণ|১৬৩}}
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
আর ঘোড়া কাটিয়া বাণে বাণে রামকে অস্থির করিয়া তুলিল। আবার তারপরেই রামের তেজ দেখিয়া তাহার মনে হইল, বুঝি এইবারেই তাহার প্রাণ যায়। সে সময়ে দেবতা, অসুর প্রভৃতি সকলে রাম রাবণের যুদ্ধ দেখিবার জন্য আকাশে উপস্থিত। অসুরেরা বলে, ‘রাবণের জয় হউক! দেবতারা বলেন, ‘রামের জয় হউক!’
ছেলেদের রামায়ণ A\ෂVඵ

আর ঘোড়া কাটিয়া বাণে বাণে রামকে অস্থির করিয়া তুলিল। আবার তারপরেই রামের তেজ দেখিয়া তাহার মনে হইল, বুঝি এইবারেই তাহার প্রাণ যায়। সে সময়ে দেবতা, অসুর প্রভৃতি সকলে রাম রাবণের যুদ্ধ দেখিবার জন্য আকাশে উপস্থিত। অসুরেরা বলে, রাবণের জয় হউক! দেবতারা বলেন, “রামের জয় হউক!’
এদিকে রাবণ আগুনের মত তেজাল তিনমুখো একটা শূল ছুড়িয়া রামকে বলিল, এইবার তুই মরিবি! কিন্তু রাম আর এক শূলে সেই শূল কাটিয়া, তারপর হাজার হাজার বাণে তাহাকে এমনি নাকাল করিয়া ফেলিলেন যে সে আর ধনুকখানিও ধরিয়া থাকিতে পারে না। তখন রাম দয়া করিয়া তাহাকে ছাড়িয়া দিলেন, আর তাহার সারথি রথ ফিরাইয়া লঙ্কায় পলাইয়া গেল।
{{gap}}এদিকে রাবণ আগুনের মত তেজাল তিনমুখো একটা শূল ছুঁড়িয়া রামকে বলিল, ‘এইবার তুই মরিবি! কিন্তু রাম আর এক শূলে সেই শূল কাটিয়া, তারপর হাজার হাজার বাণে তাহাকে এমনি নাকাল করিয়া ফেলিলেন যে সে আর ধনুকখানিও ধরিয়া থাকিতে পারে না। তখন রাম দয়া করিয়া তাহাকে ছাড়িয়া দিলেন, আর তাহার সারথি রথ ফিরাইয়া লঙ্কায় পলাইয়া গেল।

লঙ্কায় আসিয়া একটু সুস্থ হওয়ামাত্রই রাবণ সারথিকে গালি দিতে আরম্ভ করিল, ‘ওরে নির্বোধ, তুই কি ভাবিয়াছিস আমার গায়ে জোর নাই? না কি আমার সাহস কম? দেখ ত হতভাগা, কি করিলি ? রথ লইয়া পলাইয়া আসিলি, এখন লোকে আমাকে বলিবে কি?
{{gap}}লঙ্কায় আসিয়া একটু সুস্থ হওয়ামাত্রই রাবণ সারথিকে গালি দিতে আরম্ভ করিল, ‘ওরে নির্বোধ, তুই কি ভাবিয়াছিস আমার গায়ে জোর নাই? না কি আমার সাহস কম? দেখ ত হতভাগা, কি করিলি? রথ লইয়া পলাইয়া আসিলি, এখন লোকে আমাকে বলিবে কি?
সারথি বলিল, “মহারাজ আপনার পরিশ্রম হইয়াছে আর ঘোড়াগুলিও বড় কাহিল। তাই একটু বিশ্রামের জন্য এখানে আসিয়াছি। এখন যেমন অনুমতি করেন তাহাঁই করি। এ কথায় রাবণ খুশি হইয়া সাবথিকে হাতের বালা পুরস্কার দিয়া বলিল, শীঘ্ৰ যুদ্ধেব জায়গায় চল! শক্ৰকে না মারিয়া আমি ঘরে ফিরিব না!’ কাজেই সারথি আবার যুদ্ধের জায়গায় রথ ফিরাইয়া আনিল ।

এবারে যে যুদ্ধ হইল তাহাই শেষ যুদ্ধ । কিন্তু রাবণ সহজে মরে নাই। মাথা কাটিলেও যে মরিতে চাহে না, তাহাকে মারা সহজ কি করিয়া হইবে ? এক-একবার রাবণের মাথা কাট: যায়, আবার তখনই তাহার জায়গায় আর-একটা মাথা উঠে। এইরূপ করিয়া রাম একশত বার তাহার মাথা কাটিলেন, কিন্তু তাহাতেও তাহার মৃত্যু হইল না।
{{gap}}সারথি বলিল, ‘মহারাজ আপনার পরিশ্রম হইয়াছে আর ঘোড়াগুলিও বড় কাহিল। তাই একটু বিশ্রামের জন্য এখানে আসিয়াছি। এখন যেমন অনুমতি করেন তাহাই করি।’ এ কথায় রাবণ খুশি হইয়া সারথিকে হাতের বালা পুরস্কার দিয়া বলিল, ‘শীঘ্র যুদ্ধেব জায়গায় চল্। শত্রুকে না মারিয়া আমি ঘরে ফিরিব না!’ কাজেই সারথি আবার যুদ্ধের জায়গায় রথ ফিরাইয়া আনিল।
তখন মাতলি রামকে বলিল, আপনি ব্রহ্মাস্ত্র ছাডুন, নিশ্চয় রাবণ মরিবে। এই অস্ত্র রাম অগস্ত্য মুনির কাছে পাইয়াছিলেন; ইহার সমান অস্ত্র আর জগত নাই।

সে অস্ত্র ধনুকে জুড়িবার সময় পৃথিবী অবধি কাপিত লাগিল, জীবজন্তুরা ত ভয় পাইতেই পারে। সেই ভয়ঙ্কর অস্ত্র ছুড়িবামাত্রই তাহা রাবণের বুক ভেদ করিয়া একেবারে মাটির ভিতরে ঢুকিয়া গেল। এবার রাবণের মৃত্যু আটকায় কার সাধা! মাথা কাটা গেলেও তাহার মাথা যোড়া লাগিয়াছিল, কিন্তু ব্ৰহ্মাস্ত্রের ঘা খাইয়া আর তাহাকে বাচিয়া থাকিতে হইল না। যে রাবণের তেজে দেবতারা পর্যন্ত অস্থির, সেই রাবণকে মুহুর্তের মধ্যে বধ করিয়া, রামের অস্ত্র তাহার তুণে ফিরিয়া আসিল।
{{gap}}এবারে যে যুদ্ধ হইল তাহাই শেষ যুদ্ধ। কিন্তু রাবণ সহজে মরে নাই। মাথা কাটিলেও যে মরিতে চাহেনা, তাহাকে মারা সহজ কি করিয়া হইবে? এক-একবার রাবণের মাথা কাটা যায়, আবার তখনই তাহার জায়গায় আর-একটা মাথা উঠে। এইরূপ করিয়া রাম একশত বার তাহার মাথা কাটিলেন, কিন্তু তাহাতেও তাহার মৃত্যু হইল না।
রাবণের মৃত্যুতে সকলে কিরূপ সুখী হইল, বানরেরা কিরূপ লাফালাফি করিল আর লেজ নাড়িল, দেবতারাই বা কেমন করিয়া দু ভি বাজাইলেন আর পুষ্পবৃষ্টি করিলেন, সেসকল আর বেশি করিয়া বলিবার প্রয়োজন নাই। তখন যে একটা আনন্দের ঘটা হইয়াছিল, তাহা সহজেই মনে করিয়া লইতে পারি।

অবশ্য রাক্ষসেরা রাবণের জন্য অনেক দুঃখ করিয়াছিল। যে বিভীষণ তাহার নিকট অপমান পাইয়া এত বাগের ভরে চলিয়া আসিয়াছিল, সে বিভীষণও কি কাদে নাই? বিভীষণই সকলের আগে কাদিয়াছিল। হাজার হউক, ভাই তা রাগ যতই থাকুক, রাবণের
{{gap}}তখন মাতলি রামকে বলিল, আপনি ব্রহ্মাস্ত্র ছাড়ুন, নিশ্চয় রাবণ মরিবে। এই অস্ত্র রাম অগস্ত্য মুনির কাছে পাইয়াছিলেন; ইহার সমান অস্ত্র আর জগতে নাই।

{{gap}}সে অস্ত্র ধনুকে জুড়িবার সময় পৃথিবী অবধি কাঁপিত লাগিল, জীবজন্তুরা ত ভয় পাইতেই পারে। সেই ভয়ঙ্কর অস্ত্র ছুঁড়িবামাত্রই তাহা রাবণের বুক ভেদ করিয়া একেবারে মাটির ভিতরে ঢুকিয়া গেল। এবার রাবণের মৃত্যু আটকায় কার সাধ্য! মাথা কাটা গেলেও তাহার মাথা যোড়া লাগিয়াছিল, কিন্তু ব্রহ্মাস্ত্রের ঘা খাইয়া আর তাহাকে বাঁচিয়া থাকিতে হইল না। যে রাবণের তেজে দেবতারা পর্যন্ত অস্থির, সেই রাবণকে মুহূর্তের মধ্যে বধ করিয়া, রামের অস্ত্র তাঁহার তূণে ফিরিয়া আসিল।

{{gap}}রাবণের মৃত্যুতে সকলে কিরূপ সুখী হইল, বানরেরা কিরূপ লাফালাফি করিল আর লেজ নাড়িল, দেবতারাই বা কেমন করিয়া দুন্দভি বাজাইলেন আর পুষ্পবৃষ্টি করিলেন, সেসকল আর বেশি করিয়া বলিবার প্রয়োজন নাই। তখন যে একটা আনন্দের ঘটা হইয়াছিল, তাহা সহজেই মনে করিয়া লইতে পারি।

{{gap}}অবশ্য রাক্ষসেরা রাবণের জন্য অনেক দুঃখ করিয়াছিল। যে বিভীষণ তাহার নিকট অপমান পাইয়া এত রাগের ভরে চলিয়া আসিয়াছিল, সে বিভীষণও কি কাঁদে নাই? বিভীষণই সকলের আগে কাঁদিয়াছিল। হাজার হউক, ভাই ত! রাগ যতই থাকুক, রাবণের