সুনির্মল বসুর শ্রেষ্ঠ কবিতা/জলের পথে: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Mahir256 (আলোচনা | অবদান)
"{{শীর্ষক | শিরোনাম = ../ | লেখক = সুনির্মল বসু | বছর = ১৯২৭ | ট..." দিয়ে পাতা তৈরি
(কোনও পার্থক্য নেই)

০৩:২১, ১৬ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

জলের পথে

আমরা চলি খালের জলে নৌকা চড়িয়া,
ডাইনে বামে আঁধার নামে ভুবন ভরিয়া;
শিরশিরিয়ে বইছে হাওয়া, কাঁপন লাগালো,
দিকে দিকে ঝরা-পাতার গানটি জাগালো।

মাঘের বেলা শেষ হয়ে যায়, আঁধার নামে যে,
আকাশখানি বিভোর হ’ল রঙের আমেজে;
ঝোপড়া গাছের ফাঁক দিয়ে ঐ আকাশতলেতে
সোনার আলো পড়ছে ঝরে খালের জলেতে।

ঝিমিয়ে আসে মাঘের বেলা ফুরায় আয়ু রে,
হাই তোলে ঐ বনের মাঝে সঁঝের বায়ু রে;
খালের ধারে বাঁশের ঝাড়ে গান কে জুড়েছে।
শিরীষ গাছের শুকনো পাতা হাওয়ায় উড়েছে।

আমরা চলি নৌকা বেয়ে শীতের বিকালে,
জলতরঙের ছন্দ বাজে শুনিস্ নি খালে?
বন-মেহেদির গন্ধ মিহি আসছে ভাসিয়া,
ঝোপের আড়ে দুলাল-চাঁপা উঠছে হাসিয়া।

হিম-বাতাসে অচিন পাখী কাতর নাকি রে?
কাঁপাগলায় চাঁপা গাছে উঠছে ডাকি’রে।
পার হয়ে যাই পারুলডাঙা জারুল-তলাতে,
গান ধরেছে উদাস মাঝি ভরাট গলাতে।

গাজন-তলার হাট ভেঙেছে দেখছি চাহিয়া,
ফিরছে লোকে নানান গাঁয়ে নৌকা বাহিয়া;
কাদের মেয়ে জল ভরে ঐ ঘাটের কিনারে,
পরনে তার খড়কে-ডুরে, মুখটি চিনা রে।

পথ চলেছে রাখালছেলে হল্লা তুলি’ রে,
গরুর ক্ষুরে উড়ছে ধূলো, সাঁঝ-গোধূলি রে;
ঝিকমিকিয়ে হীরের মতো জ্বলছে ও কারা।
সন্ধ্যাপূজার দীপ জ্বেলেছে জোনাক-পোকারা।

ঝাপসা হ’ল এপার ওপার, আঁধার ঘিরেছে,
এই যে মোদের গাঁয়ের ঘাটে নৌকা ভিড়েছে॥