পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/১৯১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

Hrishikesbot (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থা-পরিবর্তন অউব্রা ব্যবহার করে
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
বেশী ঘর বাসিন্দা ছিলেন না—তখন ঘরবাড়ি সেখানে বেশি ছিল না, শুধু বড় বড় বাগান ও জমি ছিল। তার অধিকাংশের মালিক ছিলেন টি পালিত। তিনিই লোক বসাতে লাগলেন, আবাদ করতে লাগলেন বালিগঞ্জে—নিজের বাগান টুকরো করে করে বেচে বন্ধু-বান্ধবের কাছে। আমরা কাশিয়াবাগান থেকে যে ২৬নং বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে উঠে এসেছিলাম সেটা যদু মল্লিকের সম্পত্তি ছিল—পরে ৩নং সানি পার্কি আমাদের নিজের বাড়ি হল। ৬নং সানি পার্কে আশু চৌধুরী বাড়ি করলেন, ১৯নং স্টোর রোডের উপর তৈরি পুরানো বাড়ি মেজ মামা কিনলেন—কে জি গুপ্ত ৬নং স্টোর রোডে বাড়ি করলেন, ইন্দিরার বিয়ে হলে প্রথম প্রথম ১৪নং বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে রইল, পরে ব্রাইট স্ট্রীটে নিজের বাড়িতে গেল। দিদি প্রথমে ঝাউতলা রোডে বাড়ি করলেন, পরে হাজরা রোডে এলেন। এই রকমে বালিগঞ্জ ময়দানের আশেপাশে ও কাছাকাছি আমাদের আত্মীয় ও বন্ধুর্গের একটি বইৎ কলনি স্থাপিত হল। ইঙ্গ-বঙ্গ বন্ধুদের সবাই প্রায় পূর্ববঙ্গের লোক। তাঁদের সকালে বাঙ্গাল দেশীয় ব্যঞ্জনসহ ভাত খাওয়া ছাড়া আর সব বিষয়ে পুরো সাহেবিয়ানার সঙ্গে চাক্ষুষ হল। তাই দেখে আমার প্রাণ তাঁদের ভিতর কতক পরিমাণে স্বদেশীয়তা ঢোকাবার জন্যে পথ খুঁজে নিলে। কপালে টিপ পরা, পায়ে আলতা পরা ত ধরালুমই —তার উপর বাঙলার দেশীয় পালপার্বণগুলিকে সাহেবী রূপ দিয়ে এঁদের গ্রহণোপযোগী করলুম। শ্রীপঞ্চমীর দিন নিমন্ত্রণ পত্রের উপর পৃষ্ঠায়—“বসন্তোৎসব” লিখে ভিতর পৃষ্ঠায় চা খাওয়ার নিমন্ত্রণ করলাম। তার ফুটনোটে এক লাইন টোকা রইল—“মেয়েদের বাসন্তী রঙের শাড়ি বা ব্লাউজ ও পুরুষদের পরিচ্ছদের কোথাও না কোথাও একটুখানি বাসন্তী রঙের আভাস ধারণ বাঞ্ছনীয়।” মেয়েরা ত বাসন্তী রঙের সুন্দর সুন্দর শাড়ি-জামা পরে এলেনই—পুরুষরাও এলেন ধুতি-চাদরের সঙ্গে ফিকে বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবী পরিধান করে, এবং যাঁরা কোটপ্যান্ট পরে এলেন তাঁরাও কণ্ঠে বাসন্তী রঙের নেকটাই ধারণ করলেন বা বাদামী রঙের রেশমী রুমাল তাঁদের বুক পকেট থেকে উঁকি মারতে লাগল। সন্ধ্যে হলে ঘরের ভিতর এসে গান-বাজনা হতে লাগল। আমার
বেশী ঘর বাসিন্দা ছিলেন না—তখন ঘরবাড়ি সেখানে বেশি ছিল না, শুধু বড় বড় বাগান ও জমি ছিল। তার অধিকাংশের মালিক ছিলেন টি পালিত। তিনিই লোক বসাতে লাগলেন, আবাদ করতে লাগলেন বালিগঞ্জে—নিজের বাগান টুকরো করে করে বেচে বন্ধু-বান্ধবের কাছে। আমরা কাশিয়াবাগান থেকে যে ২৬নং বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে উঠে এসেছিলুম—সেটা যদু মল্লিকের সম্পত্তি ছিল—পরে ৩নং সানি পার্কে আমাদের নিজের বাড়ি হল। ৬নং সানি পার্কে আশু চৌধুরী বাড়ি করলেন, ১৯নং স্টোর রোডের উপর তৈরি পুরানো বাড়ি মেজ মামা কিনলেন—কে জি গুপ্ত ৬নং স্টোর রোডে বাড়ি করলেন, ইন্দিরার বিয়ে হলে প্রথম প্রথম ১৪নং বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে রইল, পরে ব্রাইট স্ট্রীটে নিজের বাড়িতে গেল। দিদি প্রথমে ঝাউতলা রোডে বাড়ি করলেন, পরে হাজরা রোডে এলেন। এই রকমে বালিগঞ্জ ময়দানের আশেপাশে ও কাছাকাছি আমাদের আত্মীয় ও বন্ধুবর্গের একটি বৃহৎ কলনি স্থাপিত হল। ইঙ্গ-বঙ্গ বন্ধুদের সবাই প্রায় পূর্ববঙ্গের লোক। তাঁদের সকালে বাঙ্গাল দেশীয় ব্যঞ্জনসহ ভাত খাওয়া ছাড়া আর সব বিষয়ে পুরো সাহেবিয়ানার সঙ্গে চাক্ষুষ হল। তাই দেখে আমার প্রাণ তাঁদের ভিতর কতক পরিমাণে স্বদেশীয়তা ঢোকাবার জন্যে পথ খুঁজে নিলে। কপালে টিপ পরা, পায়ে আলতা পরা ত ধরালুমই —তার উপর বাঙলার দেশীয় পালপার্বণগুলিকে সাহেবী রূপ দিয়ে এঁদের গ্রহণোপযোগী করলুম। শ্রীপঞ্চমীর দিন নিমন্ত্রণ পত্রের উপর পৃষ্ঠায়—“বসন্তোৎসব” লিখে ভিতর পৃষ্ঠায় চা খাওয়ার নিমন্ত্রণ করলুম। তার ফুটনোটে এক লাইন টোকা রইল—“মেয়েদের বাসন্তী রঙের শাড়ি বা ব্লাউজ ও পুরুষদের পরিচ্ছদের কোথাও না কোথাও একটুখানি বাসন্তী রঙের আভাস ধারণ বাঞ্ছনীয়।” মেয়েরা ত বাসন্তী রঙের সুন্দর সুন্দর শাড়ি-জামা পরে এলেনই—পুরুষরাও এলেন ধুতি-চাদরের সঙ্গে ফিকে বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবী পরিধান করে, এবং যাঁরা কোটপ্যান্ট পরে এলেন তাঁরাও কণ্ঠে বাসন্তী রঙের নেকটাই ধারণ করলেন বা বাদামী রঙের রেশমী রুমাল তাঁদের বুক পকেট থেকে উঁকি মারতে লাগল। সন্ধ্যে হলে ঘরের ভিতর এসে গান-বাজনা হতে লাগল। আমার
{{Block center|<poem>“হে সুন্দর বসন্ত বারেক ফিরাও

::আজি মধুর অতীত কাল”</poem>}}
{{C|“হে সুন্দর বসন্ত বারেক ফিরাও}}
{{C|আজি মধুর অতীত কাল”}}

গান এই উপলক্ষে রচিত হয়ে প্রথমে গীত হল।
গান এই উপলক্ষে রচিত হয়ে প্রথমে গীত হল।


{{nop}}
{{nop}}