পাতা:জীবনের ঝরাপাতা.pdf/২৩২: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

(কোনও পার্থক্য নেই)

১৫:৫৭, ১৮ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে সংশোধিত সংস্করণ

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

দেবী—ইঁহারাও বহু বার ঐ প্রদেশে গিয়া সত্যেন্দ্রনাথের সঙ্গে বসবাস করেন। সরলা দেবীর আত্মকথা এবং অন্যান্য রচনা হইতে ঐ অঞ্চল ও অঞ্চলবাসীদের সম্বন্ধে অনেক কথা জানা যায়।

 সত্যেন্দ্রনাথ স্ত্রীশিক্ষা, স্ত্রীস্বাধীনতা এবং স্ত্রীজাতির সর্বপ্রকার উন্নতির পক্ষপাতী ছিলেন। পত্নী জ্ঞানদানন্দিনীকে যুগোপযোগী পূর্ব-সংস্কার বর্জিত উন্নতিমূলক কার্য সম্পাদনে এবং নূতন আচার-অনুষ্ঠান প্রবর্তনে বিশেষ উৎসাহ দান করিতেন। তিনি পুত্র ও কন্যাকে প্রচলিত রীতি না মানিয়া মেম ও পাদ্রীদের স্কুলে পড়িতে দেন। সত্যেন্দ্রনাথ ১৮৯৬ সনে সরকারী কর্ম হইতে অবসর গ্রহণ করেন। ১৮৯৭ সনে রাজশাহীর নাটোরে অনুষ্ঠিত বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনে তিনি সভাপতি হন। সত্যেন্দ্রনাথ সংস্কৃত সাহিত্যে সুপন্ডিত ছিলেন। তিনি বাংলা সাহিত্যেরও সেবা করিয়া গিয়াছেন। সাময়িক পত্রাদিতেও তাঁহার বহু রচনা প্রকাশিত হয়। সতেন্দ্রনাথ লিখিত ‘আমার বাল্যকথা ও আমার বোম্বাই প্রবাস’ পুস্তকখানি বাংলা সাহিত্যের একটি উৎকৃষ্ট গ্রন্থ।


 সুরেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৭২-১৯৪০) : সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের একমাত্র পুত্র। প্রথম দিক্‌কার বিপ্লব আন্দোলনের সঙ্গে সুরেন্দ্রনাথের নানাভাবে যোগসাধন হয়। তিনি কলিকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ হইতে ১৮৯৩ সনে বি-এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। বঙ্গদেশে সমবায় জীবনবীমা ও ব্যাঙ্কিং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠার সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ঠরূপে যুক্ত ছিলেন। হিন্দুস্থান লাইফ এস্যুরেন্স কোম্পানীর তিনি ছিলেন অন্যতম কর্ণধার। রবীন্দ্র-সাহিত্যের সহিত তাঁহার পরিচয় অত্যন্ত নিবিড়।


 বিবি : ইন্দিরা দেবী (১৮৭৩) সত্যেন্দ্রনাথের একমাত্র কন্যা। তিনিও উচ্চ শিক্ষিতা। ‘লরেটো হাউস’ হইতে তিনি এন্ট্রান্স পরীক্ষা পাস করেন। পরে, গৃহে বসিয়া শিক্ষালাভ করেন এবং বি-এ পরীক্ষায় উওীর্ণ হন। প্রমথ চৌধুরীর (‘বীরবল’) সঙ্গে তাঁহার বিবাহ হয়। ইন্দিরা দেবী রবীন্দ্রসঙ্গীতে পারদর্শিনী। বাংলা সাহিত্যের সেবায়ও তিনি তৎপর। ‘ভারতী’ ও অন্যান্য পত্রপত্রিকায় তাঁহার বহু রচনা প্রকাশিত হইয়াছে। তিনি সাময়িকভাবে বিশ্বভারতী ইউনির্ভাসিটির ‘উপাচার্য’ পদে বৃত হইয়াছিলেন।


 ইলবার্ট বিল : বড়লাট লর্ড রিপনের সময়ে তাঁহার পরিষদ আইন-সদস্য সার্ কোর্টনে ইলবার্ট এই বিলটি ১৮৮৩ সনে ব্যবস্থা পরিষদের বিবেচনার জন্য উপস্থাপিত করেন বলিয়া ‘ইলবার্ট বিল’ নামকরণ হইয়াছে। এই বিলটির মর্ম ছিল এই যে, ইউরোপীয় ও দেশীয় সিবিলিয়ন কর্মচারী ইউরোগীয় অপরাধীদের বিচারে সম-অধিকারসম্পন্ন হইবেন। বড়লাট লর্ড রিপন বিলটির সপক্ষে ছিলেন। এই বিলের ঘোর বিরোধিতা করেন ভারতবর্ষস্থিত ইউরোপীয় সম্প্রদায়। বলা বাহল্য, ভারতবাসীরা সর্বান্তঃকরণে বিলটি সমর্থন করেন। এই সময় হইতে ভারতবাসীদের মধ্যে যে আন্দোলন উপস্থিত হয় তা নাশনাল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠার মূলে কম রসদ জোগায় নাই।


 কামিনী দিদি : কবি কামিনী রায় (১৮৬৪-১৯৩৩) সে যুগের বিখ্যাত সাহিত্যিক চণ্ডীচরণ সেনের কন্যা এবং স্ট্যাটুটারি সিবিলিয়ান কেদারনাথ রায়ের পত্নী। সরলা দেবী ১৮৮০, জানুয়ারী মাসে বেথুন কলেজে ভর্তি হন। এই সনে কামিনী সেন এন্ট্রান্স পরীক্ষা প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। সংস্কৃতে দ্বিতীয় শ্রেণীর অনার্স সহ এই স্কুলের কলেজ-বিভাগ হইতে বি-এ ডিগ্রী লাভ করেন। ইলবার্ট বিল আন্দোলন ও সুরেন্দ্রনাথের কারাবরণের সময় কামিনী সেন স্বতঃই বেথুন

২১৫