পাতা:মাধবীকঙ্কণ - রমেশচন্দ্র দত্ত.pdf/৪০: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

সম্পাদনা সারাংশ নেই
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
হস্তিশ্রেণী প্রদর্শিত হইল। হস্তিগণ কর উত্তোলন করিয়া বাদশাহকে “তস লীম” করিয়া চলিয়া গেল। পরে হরিণ, বৃষ, মহিষ, গণ্ডার, ব্যঘ্র প্রভৃতি সকল জন্তু ও তৎপরে নানারূপ পক্ষী একে একে প্রদর্শিত হইল। সম্রাটের বর্মধারী অশ্বারোহিগণ, তৎপরে বহু রণদর্শী কয়েক শত পদাতিক, তৎপরে অন্যান্য সেনাগণ একে একে সম্রাটের সম্মুখ দিয়া চলিয়া গেল, তাহাদিগের পদভরে মেদিনী কম্পিত হইল।
হস্তিশ্রেণী প্রদর্শিত হইল। হস্তিগণ কর উত্তোলন করিয়া বাদশাহকে “তস্‌লীম” করিয়া চলিয়া গেল। পরে হরিণ, বৃষ, মহিষ, গণ্ডার, ব্যঘ্র প্রভৃতি সকল জন্তু ও তৎপরে নানারূপ পক্ষী একে একে প্রদর্শিত হইল। সম্রাটের বর্মধারী অশ্বারোহিগণ, তৎপরে বহু রণদর্শী কয়েক শত পদাতিক, তৎপরে অন্যান্য সেনাগণ একে একে সম্রাটের সম্মুখ দিয়া চলিয়া গেল, তাহাদিগের পদভরে মেদিনী কম্পিত হইল।


{{gap}}প্রদর্শন সমাপ্ত হইলে পর বাদশাহ দরখাস্ত গ্রহণ করিতে লাগিলেন। কি নীচ, কি উচ্চ, সকলেই আসিয়া রাজাধিরাজ ভারতবর্ষের সম্রাটের নিকট আপন আপন দুঃখ জানাইতে লাগিল সম্রাট দুই একটি আদেশ দিয়া সকলকের দুঃখ মোচন করিতে লাগিলেন। সম্রাট যে বিষয়ে যে কথা বলিলেন, তৎক্ষণাৎ সকল প্রধান প্রধান ওমরাহগণ “কেরামৎ”, “কেরামৎ” বলিয়া ধন্যবাদ দিতে লাগিলেন।
{{gap}}প্রদর্শন সমাপ্ত হইলে পর বাদশাহ দরখাস্ত গ্রহণ করিতে লাগিলেন। কি নীচ, কি উচ্চ, সকলেই আসিয়া রাজাধিরাজ ভারতবর্ষের সম্রাটের নিকট আপন আপন দুঃখ জানাইতে লাগিল সম্রাট দুই একটি আদেশ দিয়া সকলকের দুঃখ মোচন করিতে লাগিলেন। সম্রাট যে বিষয়ে যে কথা বলিলেন, তৎক্ষণাৎ সকল প্রধান প্রধান ওমরাহগণ “কেরামৎ”, “কেরামৎ” বলিয়া ধন্যবাদ দিতে লাগিলেন।
৭ নং লাইন: ৭ নং লাইন:
{{gap}}নরেন্দ্র গোসলখানার পশ্চাতে উচ্চ প্রাচীর দেখিতে পাইলেন, তাহার ভিতরে অনেক হর্ম্য ও প্রাসাদ আছে। গজপতি কহিলেন,—“ঐ প্রাচীরের পশ্চাতে রাজবাটীর বেগমদিগের ভিন্ন ভিন্ন মহল আছে। শুনিয়াছি সে সমস্ত মহল অতিশয় চমৎকার, প্রত্যেক বেগমের মর্মর-প্রাসাদের চারিদিকে উদ্যান ও কুঞ্জবন, গ্রীষ্মকালে দিবায় থাকিবার জন্য মৃত্তিকার অভ্যন্তরে ঘর এবং নিশায় শয়নের জন্য প্রস্তর নির্মিত উচ্চ উচ্চ ছাদ আছে। কিন্তু সম্রাট্ ভিন্ন অন্য পুরুষের নয়ন সে সৌন্দর্য কখনও দেখে নাই, পুরুষের পদচিহ্নে সে রম্যস্থান অঙ্কিত হয় নাই।
{{gap}}নরেন্দ্র গোসলখানার পশ্চাতে উচ্চ প্রাচীর দেখিতে পাইলেন, তাহার ভিতরে অনেক হর্ম্য ও প্রাসাদ আছে। গজপতি কহিলেন,—“ঐ প্রাচীরের পশ্চাতে রাজবাটীর বেগমদিগের ভিন্ন ভিন্ন মহল আছে। শুনিয়াছি সে সমস্ত মহল অতিশয় চমৎকার, প্রত্যেক বেগমের মর্মর-প্রাসাদের চারিদিকে উদ্যান ও কুঞ্জবন, গ্রীষ্মকালে দিবায় থাকিবার জন্য মৃত্তিকার অভ্যন্তরে ঘর এবং নিশায় শয়নের জন্য প্রস্তর নির্মিত উচ্চ উচ্চ ছাদ আছে। কিন্তু সম্রাট্ ভিন্ন অন্য পুরুষের নয়ন সে সৌন্দর্য কখনও দেখে নাই, পুরুষের পদচিহ্নে সে রম্যস্থান অঙ্কিত হয় নাই।


{{gap}}নরেন্দ্রনাথের পূর্বরাত্রির কথা সহসা স্মরণ হইল। তাঁহার বোধ হইল, ঐ প্রাচীরের পশ্চাতে বেগমদিগের প্রাসাদসমূহের সৌন্দর্য তাঁহার নয়ন দর্শন করিয়াছে, তাঁহার পদচিহ্নে সে রম্যস্থান অঙ্কিত হইয়াছে। কিন্তু সে পূর্বরাত্রির বিস্ময়কর কথা তিনি গজপতির নিকট প্রকাশ করিলেন না, আপনিও ঠিক বুঝিতে পারিলেন না।
{{gap}}নরেন্দ্রনাথের পূর্বরাত্রির কথা সহসা স্মরণ হইল। তাঁহার বোধ হইল, ঐ প্রাচীরের পশ্চাতে বেগমদিগের প্রাসাদসমূহের সৌন্দর্য তাঁহার নয়ন দর্শন করিয়াছে, তাঁহার পদচিহ্নে সে রম্যস্থান অঙ্কিত হইয়াছে। কিন্তু সে পূর্বরাত্রির বিস্ময়কর কথা তিনি গজপতির নিকট প্রকাশ করিলেন না, আপনিও ঠিক বুঝিতে পারিলেন না।


{{ডান|॥ চৌদ্দ ॥}}
{{ডান|॥ চৌদ্দ ॥}}


{{gap}}দুইজনে দুর্গ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া বহির্ভাগে বিস্তৃত প্রাঙ্গণে আসিয়া পড়িলেন, সেস্থান তখনও জনাকীর্ণ। বড় বড় লোক কেহ শিবিকায়, কেহ হস্তির উপর, কেহ অশ্বারোহী হইয়া এদিকে-ওদিকে যাতায়াত করিতেছে এবং শত শত ব্যবসায়ী লোক
{{gap}}দুইজনে দুর্গ হইতে নিষ্ক্রান্ত হইয়া বহির্ভাগে বিস্তৃত প্রাঙ্গণে আসিয়া পড়িলেন, সেস্থান তখনও জনাকীর্ণ। বড় বড় লোক কেহ শিবিকায়, কেহ হস্তির উপর, কেহ অশ্বারোহী হইয়া এদিকে-ওদিকে যাতায়াত করিতেছে এবং শত শত ব্যবসায়ী লোক