পাতা:চোখের বালি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১২: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

JoyBot (আলোচনা | অবদান)
rh, replaced: </noinclude> → {{rh| |চোখের বালি| }} </noinclude> (2)
Vedbas (আলোচনা | অবদান)
পাতার অবস্থাপাতার অবস্থা
-
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
+
মুদ্রণ সংশোধন করা হয়নি
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
2 օԵ চোখের বালি
১৮ চোখের বালি
হঠাৎ চোখে আলাে লাগাতে মুখের সামনে একটু হাতের আড়াল করিয়া নতনেত্রে বিনােদিনী বলিল , কী জানি ভাই । তােমার সঙ্গে কথায় কে পারিবে । এখন যাই , কাজ আছে । ” যহে হঠাৎ তাহার হাত চাপিয়া ধরিয়া কহিল , “ বন্ধন যখন স্বীকার করিয়াছ , তখন বাইবে কোথায় । " বিনােদিনী কহিল , “ ছি ছি ছাড়াে । যাহার পালাইবার রাস্তা নাই , তাহাকে আবার আঁখিবার চেষ্টা কেন । ” বিনােদিনী জোর করিয়া হাত ছাড়াইয়া লইয়া প্রস্থান করিল । মহে সেই বিছানায় সুগন্ধ বালিশের উপর পড়িয়া রহিল , তাহার বুকের মধ্যে রক্ত তােলপাড় করিতে লাগিল । নিস্তব্ধ সন্ধ্যা , নির্জন ঘর , নববসন্তের বাতাস দিতেছে , বিননাদিনীর মন যেন ধরা দিল - দিল- উম্মাদ মহেন্দ্র আপনাকে আর ধরিয়া রাখিতে পারিবে না এমনই বােধ হইল । তাড়াতাড়ি আলাে নিবাইয়া ঘরের প্রবেশদ্বার বন্ধ করিল , তাহার উপরে শাসি আঁটিয়া দিল , এবং সময় হইতেই বিছানার মধ্যে গিয়া শুইয়া পড়িল । এও তাে সে পুরা বিছানা নহে । চার - পাঁচখানা তােশকে শয্যাতল পূর্বের চেয়ে অনেক নরম । আবার একটি গ- সে অগুরুর কি খসখসের কি কিসের ঠিক বুঝা গেল না । মহেন্দ্র অনেকবার এপাশ - ওপাশ করিতে লাগিল- কোথায় যেন পুরাতনের কোনাে - একটা নিদর্শন খুঁজিয়া পাইয়া তাহা আঁকড়াইয়া ধরিবার চেষ্টা । কিন্তু কিছুই হাতে ঠেকিল না । রাত্রি নটার সময় রুদ্ধ দ্বারে ঘা পড়িল । বিনােদিনী বাহির হইতে কহিল , ঠাকুরপাে , তোমার খাবার আসিয়াছে , দুয়ার খােলাে । ” তখনই দ্বার খুলিবার জন্য মহেন্দ্র ধড়ফড় করিয়া উঠিয়া শাসির অর্গলে হাত লাগাইল । কিন্তু খুলল না-- মেঝের উপর উপুড় হইয়া লুটাইয়া কহিল , “ না না , আমার ক্ষুধা নাই , আমি খাইব না । ” বাহির হইতে উদবিগ্ন কণ্ঠের প্রশ্ন শােনা গেল , “ অসুখ করে নি তাে ? জল আনিয়া দিব ? কিছু চাই কি । মহেন্দ্র কহিল , “ আমার কিছুই চাই না কোনাে প্রয়ােজন নাই । ” বিনােদিনী কহিল , “ মাথা খাও , আমার কাছে ভাড়াইয়ো না । আচ্ছা , অসুখ না থাকে তাে একবার দরজা খােলাে । ” মহেন্দ্র সবেগে বলিয়া উঠিল , “ না , খুলিব না ; কিছুতেই না । তুমি যাও । ”
হঠাৎ চোখে আলো লাগাতে মূখের সামনে একটু হাতের আড়াল করিয়া নতনেত্রে বিনোদিনী বলিল, “কী জানি ভাই । তোমার সঙ্গে কথায় কে পারিবে । ७थन घोहे, कांज यां८छ् ।*
মহেন্দ্র হঠাৎ তাহার হাত চাপিয়া ধরিয়া কহিল, “বন্ধন যখন স্বীকার করিয়াছ, তখন যাইবে কোথায় ।”
বিনোদিনী কহিল, “ছি ছি ছাডো। যাহার পালাইবার রাস্তা নাই, তাহাকে আবার বাধিবার চেষ্টা কেন ।”
বিনোদিনী জোর করিয়া হাত ছাড়াইয়া লইয়া প্রস্থান করিল। মহেক্স সেই বিছানায় স্বগন্ধ বালিশের উপর পড়িয়া রহিল, তাহার বুকের মধ্যে রক্ত তোলপাড় করিতে লাগিল । নিস্তব্ধ সন্ধ্যা, নির্জন ঘর, নববসন্তের বাতাস দিতেছে, বিনোদিনীর মন যেন ধরা দিল-দল— উন্মাদ মহেন্দ্র আপনাকে আর ধরিয়া রাখিতে পারিবে না এমনই বোধ হইল। তাড়াতাড়ি আলো নিবাইয়া ঘরের প্রবেশদ্বার বন্ধ করিল, তাহার উপরে শাসি আটিয়া দিল, এবং সময় না হইতেই বিছানার মধ্যে গিয়া শুইয়া পড়িল ।
এও তো সে পুরাতন বিছানা নহে। চার-পাচখানা তোশকে শয্যাতল পূর্বের চেয়ে অনেক নরম । আবার একটি গন্ধ— সে অগুরুর কি খসখসের কি কিসের ঠিক বুঝা গেল না। মহেন্দ্র অনেকবার এপাশ-ওপাশ করিতে লাগিল— কোথায় যেন পুরাতনের কোনো-একটা নিদর্শন খুজিয়া পাইয়া তাহা আঁকড়াইয়া ধরিবার চেষ্টা। কিন্তু কিছুই হাতে ঠেকিল না ।
রাত্ৰি মটার সময় রুদ্ধ দ্বারে ঘা পড়িল । বিনোদিনী বাহির হইতে কহিল, “ঠাকুরপো, তোমার খাবার আসিয়াছে, দুয়ার খোলো।”
তখনই দ্বার খুলিলার জন্য মহেন্দ্র ধড়ফড় করিয়া উঠিয়া শাসির আর্গলে হাত লাগাইল । কিন্তু খুলল না-- মেঝের উপর উপুড় হইয়া লুটাইয়া কহিল, “না না, আমার ক্ষুধা নাই, আমি খাইব না।”
বাহির হইতে উদবিগ্ন কণ্ঠের প্রশ্ন শোনা গেল, “অমুখ করে নি তো ? জল জানিয়া দিব ? কিছু চাই কি ৷”
মহেন্দ্ৰ কহিল, “আমার কিছুই চাই না— কোনো প্রয়োজন নাই ।” বিনোদনী কহিল, “মাথা খাও, আমার কাছে ভাড়াইয়ো না । আচ্ছা, অস্থখ
না থাকে তো একবার দরজা খোলো ৷”
মহেন্দ্ৰ সবেগে বলিয়া উঠিল, “না, খুলিব না ; কিছুতেই না। তুমি যাও।”