পাতা:চোখের বালি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২১৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বট পরিষ্কার করছে, কোন সমস্যা?
 
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
৩ নং লাইন: ৩ নং লাইন:
{{gap}}একদিন এলাহাবাদ স্টেশনে দুইজনে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করিতে ছিল। কোনো আকস্মিক কারণে ট্রেন আসিতে বিলম্ব হইতেছে। ইতিমধ্যে অন্যান্য গাড়ি যত আসিতেছে ও যাইতেছে, বিনোদিনী তাহার যাত্রীদের ভালো করিয়া নিরীক্ষণ করিয়া দেখিতেছে। পশ্চিমে ঘুরিতে ঘুরিতে চারিদিকে চাহিয়া দেখিতে দেখিতে সে হঠাৎ কাহারো দেখা পাইবে, এই বোধ করি তাহার আশা। অন্তত, রুদ্ধ গলির মধ্যে জনহীন গৃহে নিশ্চল উদ্যমে নিজেকে প্রত্যহ চাপিয়া মারার চেয়ে এই নিত্যসন্ধানপরতার মধ্যে, এই উন্মুক্ত পথের জনকোলাহলের মধ্যে শান্তি আছে।
{{gap}}একদিন এলাহাবাদ স্টেশনে দুইজনে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করিতে ছিল। কোনো আকস্মিক কারণে ট্রেন আসিতে বিলম্ব হইতেছে। ইতিমধ্যে অন্যান্য গাড়ি যত আসিতেছে ও যাইতেছে, বিনোদিনী তাহার যাত্রীদের ভালো করিয়া নিরীক্ষণ করিয়া দেখিতেছে। পশ্চিমে ঘুরিতে ঘুরিতে চারিদিকে চাহিয়া দেখিতে দেখিতে সে হঠাৎ কাহারো দেখা পাইবে, এই বোধ করি তাহার আশা। অন্তত, রুদ্ধ গলির মধ্যে জনহীন গৃহে নিশ্চল উদ্যমে নিজেকে প্রত্যহ চাপিয়া মারার চেয়ে এই নিত্যসন্ধানপরতার মধ্যে, এই উন্মুক্ত পথের জনকোলাহলের মধ্যে শান্তি আছে।


{{gap}}হঠাৎ এক সময়ে স্টেশনে একটি কাঁচের বাক্সের উপর বিনোদিনার দৃষ্টি পড়িতেই সে চমকিয়া উঠিল। এই পোস্ট্ আপিসের বাক্সের মধ্যে, যে-সকল লোকের উদ্দেশ পাওয়া যায় নাই তাহাদের পত্র প্রদর্শিত হইয়া থাকে। সেই বাক্সে সজ্জিত একখানি প্রত্রের উপরে বিনোদিনী বিহারীর নাম দেখিতে পাইল। বিহারীলাল নামটি অসাধারণ নহে; পত্রের বিহারীই যে বিনোদিনীর অভীষ্ট বিহারী, এ কথা মনে করিবার কোনো হেতু ছিল না― তবু বিহারীর পুরা নাম দেখিয়া সেই একটিমাত্র বিহারী ছাড়া আর-কোনো বিহারীর কথা তাহার মনে সন্দেহ হইল না। পত্রে লিখিত ঠিকানাটি সে মুখস্থ করিয়া লইল। অত্যন্ত অপ্রসন্নমুখে মহেন্দ্র একটা বেঞ্চের উপর বসিয়া ছিল; বিনোদিনী সেখানে আসিয়া কহিল, “কিছুদিন এলাহাবাদেই থাকিব।”
{{gap}}হঠাৎ এক সময়ে স্টেশনে একটি কাঁচের বাক্সের উপর বিনোদিনার দৃষ্টি পড়িতেই সে চমকিয়া উঠিল। এই পোস্ট্ আপিসের বাক্সের মধ্যে, যে-সকল লোকের উদ্দেশ পাওয়া যায় নাই তাহাদের পত্র প্রদর্শিত হইয়া থাকে। সেই বাক্সে সজ্জিত একখানি প্রত্রের উপরে বিনোদিনী বিহারীর নাম দেখিতে পাইল। বিহারীলাল নামটি অসাধারণ নহে; পত্রের বিহারীই যে বিনোদিনীর অভীষ্ট বিহারী, এ কথা মনে করিবার কোনো হেতু ছিল না― তবু বিহারীর পুরা নাম দেখিয়া সেই একটিমাত্র বিহারী ছাড়া আর-কোনো বিহারীর কথা তাহার মনে সন্দেহ হইল না। পত্রে লিখিত ঠিকানাটি সে মুখস্থ করিয়া লইল। অত্যন্ত অপ্রসন্নমুখে মহেন্দ্র একটা বেঞ্চের উপর বসিয়া ছিল; বিনোদিনী সেখানে আসিয়া কহিল, “কিছুদিন এলাহাবাদেই থাকিব।”
{{nop}}
{{nop}}