পাতা:বিষাদ-সিন্ধু - মীর মোশার্‌রফ হোসেন.pdf/২৪৭: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বট পরিষ্কার করছে, কোন সমস্যা?
বট পরিষ্কার করছে, কোন সমস্যা?
 
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:
পাঠাইয়াছিস্‌। ওরে অর্থলােভী পিশাচেরা, ধর্ম্মভয় বিসর্জ্জন দিয়া আমার বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করিয়াছিস্‌; আয় দেখি, কে সাহস করিয়া আমার অস্ত্রের সম্মুখে আসিবি, আয়। আর বিলম্ব কেন? যাহার পক্ষে ইহজগৎ ভার বােধ হইয়াছে যে হতভাগ্য আপন মাতাকে অকালে পুত্রশোকে কঁদাইতে ইচ্ছা করিয়াছে, যৌবনে কুলস্ত্রীর বৈধব্য কামনা যাহার অন্তরে উদয় হইয়াছে, শীঘ্র আয়! আর আমার বিলম্ব সহ হইতেছে না।”
পাঠাইয়াছিস্‌। ওরে অর্থলােভী পিশাচেরা, ধর্ম্মভয় বিসর্জ্জন দিয়া আমার
বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করিয়াছিস্‌; আয় দেখি, কে সাহস করিয়া আমার অস্ত্রের
সম্মুখে আসিবি, আয়। আর বিলম্ব কেন? যাহার পক্ষে ইহজগৎ ভার বােধ
হইয়াছে যে হতভাগ্য আপন মাতাকে অকালে পুত্রশোকে কঁদাইতে ইচ্ছা
করিয়াছে, যৌবনে কুলস্ত্রীর বৈধব্য কামনা যাহার অন্তরে উদয় হইয়াছে,
শীঘ্র আয়! আর আমার বিলম্ব সহ হইতেছে না।”


{{gap}}এজিদ-পক্ষীয় সর্বশ্রেষ্ঠ যােদ্ধা আবদুর রহ্‌মান; হােসেনের সহিত যুদ্ধ করিতে তাহার চিরসাধ! অশ্বপৃষ্ঠে আরােহণ করিয়া সেই আবদুর রহ্‌মান অসি চালনা করিতে করিতে হােসেনের সম্মুখে আসিয়া বলিতে লাগিল, “হােসেন! তুমি আজ শােকে তাপে মহাকাতর; বােধ হয়, আজ দশ দিন তােমার পেটে অন্ন নাই, পিপাসায় কণ্ঠতালু বিশুদ্ধ; এই কয়েক দিন যে কেন বাঁচিয়া আছ বলিতে পারি না। আর এই কষ্টভােগ করিতে হইবে না, শীঘ্রই তোমার মনের দুঃখ নিবারণ করিতেছি। বড় দর্পে অশ্বচালনা করিয়া বেড়াইতেছ; এই আবদুর রহ্‌মান তােমার সম্মুখে দাঁড়াইল! যত বল থাকে, অগ্রে তুমিই আমাকে আঘাত কর। লােকে বলিবে যে, ক্ষুৎ-পিপাসাকুল, শােক-তাপবিদগ্ধ, পরিজন-দুঃখকাতর উৎসাহহীন বীরের সহিত কে না যুদ্ধ করিতে পারে? এ দুর্নাম আমি সহ্য করিব না—তুমিই অগ্রে আঘাত কর। তােমার বল বুঝিয়া দেখি; যদি আমার অস্ত্রাঘাত সহ্য করিবার উপযুক্ত হও, আমি প্রতিঘাত করিব; নতুবা ফিরিয়া যাইয়া তােমার ন্যায় হীন, ক্ষীণ, দুর্ব্বল যােদ্ধাকে খুঁজিয়া তােমার সহিত যুদ্ধ করিবার জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠাইয়া দিব।”
{{gap}}এজিদ-পক্ষীয় সর্বশ্রেষ্ঠ যােদ্ধা আবদুর রহ্‌মান; হােসেনের সহিত
যুদ্ধ করিতে তাহার চিরসাধ! অশ্বপৃষ্ঠে আরােহণ করিয়া সেই আবদুর
রহ্‌মান অসি চালনা করিতে করিতে হােসেনের সম্মুখে আসিয়া বলিতে
লাগিল, “হােসেন! তুমি আজ শােকে তাপে মহাকাতর; বােধ হয়,
আজ দশ দিন তােমার পেটে অন্ন নাই, পিপাসায় কণ্ঠতালু বিশুদ্ধ; এই
কয়েক দিন যে কেন বাঁচিয়া আছ বলিতে পারি না। আর এই কষ্টভােগ
করিতে হইবে না, শীঘ্রই তোমার মনের দুঃখ নিবারণ করিতেছি। বড়
দর্পে অশ্বচালনা করিয়া বেড়াইতেছ; এই আবদুর রহ্‌মান তােমার
সম্মুখে দাঁড়াইল! যত বল থাকে, অগ্রে তুমিই আমাকে আঘাত কর।
লােকে বলিবে যে, ক্ষুৎ-পিপাসাকুল, শােক-তাপবিদগ্ধ, পরিজন-দুঃখকাতর
উৎসাহহীন বীরের সহিত কে না যুদ্ধ করিতে পারে? এ দুর্নাম আমি
সহ্য করিব না—তুমিই অগ্রে আঘাত কর। তােমার বল বুঝিয়া দেখি;
যদি আমার অস্ত্রাঘাত সহ্য করিবার উপযুক্ত হও, আমি প্রতিঘাত করিব;
নতুবা ফিরিয়া যাইয়া তােমার ন্যায় হীন, ক্ষীণ, দুর্ব্বল যােদ্ধাকে খুঁজিয়া
তােমার সহিত যুদ্ধ করিবার জন্য যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠাইয়া দিব।”


{{gap}}হােসেন বলিলেন, “এত কথার প্রয়ােজন নাই। আমার বংশমধ্যে কিংবা জাতিমধ্যে অগ্রে অস্ত্র নিক্ষেপের রীতি থাকিলে তুমি এত কথা কহিবার সময় পাইতে না। হারামজাদা! বেঈমান্‌! কাফের! শীঘ্র যে কোন অস্ত্র হয়, আমার প্রতি নিক্ষেপ কর। সময়ক্ষেত্রে আসিয়া বাগ্‌বিতণ্ডার দরকার কি? অস্ত্রই বল—পরীক্ষার প্রধান উপকরণ। কেন বিলম্ব করিতেছিস্‌? যে কোন অস্ত্র হউক, একবার নিক্ষেপ
{{gap}}হােসেন বলিলেন, “এত কথার প্রয়ােজন নাই। আমার বংশমধ্যে
কিংবা জাতিমধ্যে অগ্রে অস্ত্র নিক্ষেপের রীতি থাকিলে তুমি এত কথা
কহিবার সময় পাইতে না। হারামজাদা! বেঈমান্‌! কাফের! শীঘ্র
যে কোন অস্ত্র হয়, আমার প্রতি নিক্ষেপ কর। সময়ক্ষেত্রে আসিয়া
বাগ্‌বিতণ্ডার দরকার কি? অস্ত্রই বল—পরীক্ষার প্রধান উপকরণ।
কেন বিলম্ব করিতেছিস্‌? যে কোন অস্ত্র হউক, একবার নিক্ষেপ