যোগাযোগ/২১: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
WikitanvirBot I (আলোচনা | অবদান)
বট কসমেটিক পরিবর্তন করছে
fix using AWB
৫ নং লাইন:
|next = [[যোগাযোগ/২২|২২]]
|notes =
|author =
|author =রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর}}
|year =
|notes =
|portal =
|authorcategories =রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর}}
<div style="padding-left:2em;font-size:1.3em">
রাজা উপাধি পাওয়ার পর থেকে কলকাতায় ঘোষালবাড়ির দ্বারে নাম খোদা হয়েছে "মধুপ্রাসাদ'। সেই প্রাসাদের লোহার গেটের এক পাশে আজ নহবত বসেছে, আর বাগানে একটা তাঁবুতে বাজছে ব্যান্ড। গেটের মাথায় অর্ধচন্দ্রাকারে গ্যাসের টাইপে লেখা "প্রজাপতয়ে নমঃ"। সন্ধ্যাবেলায় আলোকশিখায় এই লিখনটি সমুজ্জ্বল হবে। গেট থেকে কাঁকর-দেওয়া যে পথ বাড়ি পর্যন্ত গেছে তার দুই ধারে দেবদারুপাতা ও গাঁদার মালায় শোভাসজ্জা; বাড়ির প্রথম তলার উঁচু মেজেতে ওঠবার সিঁড়ির ধাপে লাল সালু পাতা। আত্মীয়বন্ধুর জনতার ভিতর দিয়ে বরকনের গাড়ি গাড়িবারান্দায় এসে থামল। শাঁখ উলুধ্বনি ঢাক ঢোল কাঁসর নহবত ব্যান্ড সব একসঙ্গে উঠল বেজে-- যেন দশ-পনেরোটা আওয়াজের মালগাড়ির এক জায়গাতে পুরো বেগে ঠোকাঠুকি ঘটল। মধুসূদনের কোন্‌-এক সম্পর্কের দিদিমা, পরিপক্ক বুড়ি, সিঁথিতে যত মোটা ফাঁক তত মোটা সিঁদুর, চওড়া-লাল-পেড়ে শাড়ি, মোটা হাতে মোটা মোটা সোনার বালা এবং শাঁখার চুড়ি, একটা রুপোর ঘটিতে জল নিয়ে বউয়ের পায়ে ছিটিয়ে দিয়ে আঁচলে মুছে নিলেন, হাতে নোয়া পরিয়ে দিলেন, বউয়ের মুখে একটু মধু দিয়ে বললেন, "আহা, এতদিন পরে আমাদের নীল গগনে উঠল পূর্ণচাঁদ, নীল সরোবরে ফুটল সোনার পদ্ম।" বরকনে গাড়ি থেকে নামল। যুবক-অভ্যাগতদের দৃষ্টি ঈর্ষান্বিত। একজন বললে, "দৈত্য স্বর্গ লুট করে এনেছে রে, অপ্সরী সোনার শিখলে বাঁধা।" আর-একজন বললে, "সাবেক কালে এমন মেয়ের জন্যে রাজায় রাজায় লড়াই বেধে যেত, আজ তিসিচালানির টাকাতেই কাজ সিদ্ধি। কলিযুগে দেবতাগুলো বেরসিক। ভাগ্যচক্রের সব গ্রহনক্ষত্রই বৈশ্যবর্ণ।"