পালামৌ/তৃতীয় প্রবন্ধ: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

বিষয়বস্তু বিয়োগ হয়েছে বিষয়বস্তু যোগ হয়েছে
Faisal Hasan (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
Faisal Hasan (আলোচনা | অবদান)
সম্পাদনা সারাংশ নেই
১৩ নং লাইন:
 
একদিন এই স্থানে সুখে বসিয়া চারিদিক দেখিতেছি, হঠাৎ একটি লতার উপর দৃষ্টি পড়িল; তাহার একটি ডালে অনেক দিনের পর চারি-পাঁচটি ফুল ফুটিয়াছিল। লতা আহ্লাদে তাহা গোপন করিতে পারে নাই, যেন কাহারে দেখাইবার জন্য ডালটি বাড়াইয়া দিয়াছিল; একটি কালো কালো বড় গোছের ভ্রমর তাহার চারিদিকে ঘুরিয়া বেড়াইতেছিল; আর এক-একবার সেই লতায় বসিতেছিল। লতা তাহাতে নারাজ, ভ্রমর বসিলেই অস্থির হইয়া মাথা নাড়িয়া উঠে। লতাকে এইরূপ সচেতনের ন্যায় রঙ্গ করিতে দেখিয়া আমি হাসিতেছিলাম, এমত সময়ে আমার পশ্চাতে উচ্চারিত হইল :
<blockquote>'রাধে মন্যুং পরিহর হরিঃ পাদমূলে তবায়ম্।'</blockquote> আমি পশ্চাতে ফিরিলাম, দেখিলাম কেহই নাই, চারিদিক চাহিলাম কোথায়ও কেহ নাই। আমি আশ্চর্য হইয়া ভাবিতেছি, এমত সময় আর-একদিকে শব্দিত হইল :
</blockquote>'রাধে মন্যুং' ইত্যাদি।'</blockquote>
</blockquote> 'রাধে মন্যুং' ইত্যাদি</blockquote> আমার শরীরে রোমাঞ্চ হইল, আমি সেই দিকে কতক সভয়ে, কতক কৌতুহলপরবশে গেলাম। সেদিকে গিয়া আর কিছুই শুনিতে পারিলাম না। কিয়ৎ পরেই 'কুমারী'র ডাল হইতে সেই শ্লোক আবার উচ্চারিত হইল, কিন্তু শ্লোকের স্পষ্টতা আর পূর্বমতো বোধ হইল না। কেবল সুর আর ছন্দ শুনা গেল। 'কুমারী'র মূলে আসিয়া দেখি, হরিয়াল ঘুঘুর ন্যায় একটি পক্ষী আর একটির নিকট মাথা নাড়িয়া এই ছন্দে আস্ফালন করিতে করিতে অগ্রসর হইতেছে, পক্ষিণী তাহাকে ডানা মারিয়া সরিয়া যাইতেছে, কখনো কখনো অন্য ডালে গিয়া বসিতেছে। এবার আমার ভ্রান্তি দূর হইল, আমি মন্দাক্রান্তাচ্ছন্দের একটি মাত্র শ্লোক জানিতাম; ছন্দটি উচ্চারণ মাত্রেই শ্লোকটি আমার মনে আসিল, সঙ্গে সঙ্গে কর্ণেও তাহার কার্য হইয়াছিল; আমি তাহাই শুনিয়াছিলাম 'রাধে মন্যুং!' কিন্তু পক্ষী বর্ণ উচ্চারণ করে নাই, কেবল ছন্দ উচ্চারণ করিয়াছিল।
</poem>
</div>