পাতা:গল্পগুচ্ছ (প্রথম খণ্ড).djvu/৮: সংশোধিত সংস্করণের মধ্যে পার্থক্য

JoyBot (আলোচনা | অবদান)
OCRed
 
Nirzak (আলোচনা | অবদান)
সংশোধন করলাম
ট্যাগ: মোবাইল সম্পাদনা মোবাইল ওয়েব সম্পাদনা
পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):পাতার প্রধান অংশ (পরিলিখিত হবে):
১ নং লাইন: ১ নং লাইন:

8 গল্পগুচ্ছ
ভট্টাচার্যমহাশয় ঠিক নিয়মিত সময়ে কোশাকুশি লইয়া স্বান করিতে আসিয়াছেন । মেয়েরা দুই-একজন করিয়া জল লইতে আসিয়াছে ।
{{gap}}ভট্টাচার্যমহাশয় ঠিক নিয়মিত সময়ে কোশাকুশি লইয়া স্নান করিতে আসিয়াছেন । মেয়েরা দুই-একজন করিয়া জল লইতে আসিয়াছে ।

সে বড়ে বেশি দিনের কথা নহে। তোমাদের অনেক দিন বলিয়া মনে হইতে পারে । কিন্তু আমার মনে হইতেছে, এই সেদিনের কথা । আমার দিনগুলি কিনা গঙ্গার স্রোতের উপর খেলাইতে খেলাইতে ভাসিয়া যায়, বহুকাল ধরিয়া স্থিরভাবে তাহাই দেখিতেছি— এইজন্য সময় বড়ো দীর্ঘ বলিয়া মনে হয় না। আমার দিনের আলো রাত্রের ছায় প্রতিদিন গঙ্গার উপরে পড়ে, আবার প্রতিদিন গঙ্গার উপর হইতে মুছিয়া যায়— কোথাও তাহদের ছবি রাখিয়া যায় না । সেইজন্য, যদিও আমাকে বৃদ্ধের মতো দেখিতে হইয়াছে, আমার হৃদয় চিরকাল নবীন। বহুবৎসরের স্মৃতির শৈবালভারে আচ্ছন্ন হইয়া আমার সূর্যকিরণ মারা পড়ে নাই । দৈবাৎ একটা ছিন্ন শৈবাল ভাসিয়া আসিয়া গায়ে লাগিয়া থাকে, আবার স্রোতে ভাসিয়া যায়। তাই বলিয়া যে কিছু নাই এমন বলিতে পারি না। যেখানে গঙ্গার স্রোত পৌছায় না সেখানে আমার ছিদ্রে ছিদ্রে যে লতাগুল্মশৈবাল জন্মিয়াছে তাহারাই আমার পুরাতনের সাক্ষী, তাহারাই পুরাতন কালকে স্নেহপাশে বাধিয়া চিরদিন শু্যামল মধুর, চিরদিন নূতন করিয়া রাখিয়াছে। গঙ্গা প্রতিদিন আমার কাছ হইতে এক-এক ধাপ সরিয়া যাইতেছেন, আমিও এক-এক ধাপ করিয়া পুরাতন হইতেছি।
{{gap}}সে বড়ো বেশি দিনের কথা নহে। তোমাদের অনেক দিন বলিয়া মনে হইতে পারে । কিন্তু আমার মনে হইতেছে, এই সেদিনের কথা । আমার দিনগুলি কিনা গঙ্গার স্রোতের উপর খেলাইতে খেলাইতে ভাসিয়া যায়, বহুকাল ধরিয়া স্থিরভাবে তাহাই দেখিতেছি— এইজন্য সময় বড়ো দীর্ঘ বলিয়া মনে হয় না। আমার দিনের আলো রাত্রের ছায়া প্রতিদিন গঙ্গার উপরে পড়ে, আবার প্রতিদিন গঙ্গার উপর হইতে মুছিয়া যায়— কোথাও তাহদের ছবি রাখিয়া যায় না । সেইজন্য, যদিও আমাকে বৃদ্ধের মতো দেখিতে হইয়াছে, আমার হৃদয় চিরকাল নবীন। বহুবৎসরের স্মৃতির শৈবালভারে আচ্ছন্ন হইয়া আমার সূর্যকিরণ মারা পড়ে নাই । দৈবাৎ একটা ছিন্ন শৈবাল ভাসিয়া আসিয়া গায়ে লাগিয়া থাকে, আবার স্রোতে ভাসিয়া যায়। তাই বলিয়া যে কিছু নাই এমন বলিতে পারি না। যেখানে গঙ্গার স্রোত পৌছায় না সেখানে আমার ছিদ্রে ছিদ্রে যে লতাগুল্মশৈবাল জন্মিয়াছে তাহারাই আমার পুরাতনের সাক্ষী, তাহারাই পুরাতন কালকে স্নেহপাশে বাঁধিয়া চিরদিন শ্যামল মধুর, চিরদিন নূতন করিয়া রাখিয়াছে। গঙ্গা প্রতিদিন আমার কাছ হইতে এক-এক ধাপ সরিয়া যাইতেছেন, আমিও এক-এক ধাপ করিয়া পুরাতন হইতেছি।
চক্রবর্তীদের বাড়ির ওই-যে বৃদ্ধ স্নান করিয়া নামাবলী গায়ে কঁাপিতে কঁাপিতে, মালা জপিতে জপিতে বাড়ি ফিরিয়া যাইতেছেন, উহার মাতামহী তখন এতটুকু ছিল। আমার মনে আছে, তাহার এক খেলা ছিল, সে প্রত্যই একটা ঘৃতকুমারীর পাতা গঙ্গার জলে ভাসাইয়া দিত ; আমার দক্ষিণবাহুর কাছে একটা পাকের মতো ছিল, সেইখানে পাতাটা ক্রমাগত ঘুরিয়া ঘুরিয়া বেড়াইত, সে কলসী রাখিয়া দাড়াইয়া তাহাই দেখিত। যখন দেখিলাম, কিছুদিন বাদে সেই মেয়েটিই আবার ডাগর হইয়া উঠিয়া তাহার নিজের একটি মেয়ে সঙ্গে লইয়া জল লইতে আসিল, সে মেয়েও আবার বড়ো হইল, বালিকারা জল ছুড়িয়া দুরন্তপনা করিলে তিনিও আবার তাহাদিগকে শাসন করিতেন ও ভদ্রোচিত ব্যবহার শিক্ষা দিতেন, তখন আমার সেই ঘৃতকুমারীর নৌকাভাসানে মনে পড়িত ও বড়ো কৌতুক বোধ হইত।

{{gap}}চক্রবর্তীদের বাড়ির ওই-যে বৃদ্ধ স্নান করিয়া নামাবলী গায়ে কাঁপিতে কাঁপিতে, মালা জপিতে জপিতে বাড়ি ফিরিয়া যাইতেছেন, উহার মাতামহী তখন এতটুকু ছিল। আমার মনে আছে, তাহার এক খেলা ছিল, সে প্রত্যই একটা ঘৃতকুমারীর পাতা গঙ্গার জলে ভাসাইয়া দিত ; আমার দক্ষিণবাহুর কাছে একটা পাকের মতো ছিল, সেইখানে পাতাটা ক্রমাগত ঘুরিয়া ঘুরিয়া বেড়াইত, সে কলসী রাখিয়া দাঁড়াইয়া তাহাই দেখিত,যখন দেখিলাম, কিছুদিন বাদে সেই মেয়েটিই আবার ডাগর হইয়া উঠিয়া তাহার নিজের একটি মেয়ে সঙ্গে লইয়া জল লইতে আসিল, সে মেয়েও আবার বড়ো হইল, বালিকারা জল ছুঁড়িয়া দুরন্তপনা করিলে তিনিও আবার তাহাদিগকে শাসন করিতেন ও ভদ্রোচিত ব্যবহার শিক্ষা দিতেন, তখন আমার সেই ঘৃতকুমারীর নৌকাভাসানো মনে পড়িত ও বড়ো কৌতুক বোধ হইত।