বেলুনে পাঁচ সপ্তাহ/ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ
ঊনবিংশ পরিচ্ছেদ
অজ্ঞাত জনপদ
রজনী নির্ব্বেঘ্নে অতিবাহিত হইল। প্রভাতেই মরুসূর্য্য প্রখর কিরণজাল বিস্তার করিয়া উদিত হইল। ফার্গুসন্ সুবাতাসের অপেক্ষায় রহিলেন। সমস্ত দিবস কাটিয়া গেল। দুর্ব্বল শরীর ধীরে ধীরে সুস্থ ও সবল হইয়া উঠিল। লুপ্ত-শক্তি ফিরিয়া আসিল। শক্তির সঙ্গে সঙ্গে ভরসা এবং ভরসার সঙ্গে সাহস আসিয়া দেখা দিল। মানুষ অল্পেই অতীতের কথা বিস্মৃত হয়। ক্রমে সন্ধ্যা হইল। উজ্জ্বল নক্ষত্রখচিত আকাশের দিকে চাহিয়া চাহিয়া পর্যটকত্রয় কত কি চিন্তা করিতে লাগিলেন।
পরদিন প্রভাতেও আকাশের কোনো পরিবর্ত্তন লক্ষিত হইল না। বাতাস অতি ধীরে বহিতেছিল। ফার্গুসন্ ক্রমেই চঞ্চল হইতে লাগিলেন। ভাবিলেন, জলের অভাবে মরিতে বসিয়াছিলাম। জল যদি পাইলাম, তবে কি খাদ্যের অভাবে মরুপ্রান্তরে প্রাণ যাইবে!
মধ্যাহ্নে ফার্গুসন্ যাত্রার আয়োজন করিলেন। আবশ্যক মত জল তুলিয়া লওয়া হইল। খানিকটা ভার ফেলিয়া দিয়া বেলুনকে আরো হাল্কা করা হইল। এবার সোণার ভার ফেলিতে জো’র বড় কষ্ট হইতেছিল! কিন্তু উপায় ছিল না। ভার না ফেলিলে বেলুনের উঠিবার সম্ভাবনা ছিল না।
যাত্রার আয়োজন করিয়া ফার্গুসন্ বসিয়া রহিলেন। রজনী শেষে প্রবল ঝটিকা দেখা দিল। ঝড়ের মুখে বেলুন ছুটিতে লাগিল। প্রভাতে স্থানে স্থানে বৃক্ষলতাদির অস্তিত্ব সূচিত হইতে লাগিল। কোন কোন স্থানে শরবণ দেখা যাইতে লাগিল। দূরে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পর্ব্বতগাত্রে গুল্মাদি দেখিয়া ফার্গুসন্ কহিলেন—
“আমরা মরুভূমি পার হয়েছি।”
সঙ্গীরা আনন্দে করতালি দিল। ভিক্টোরিয়া তখন একটা ক্ষুদ্র হ্রদের উপর দিয়া যাইতেছিল। হ্রদের তীরে সবলকায় ষণ্ডগুলি ঘন ঘাসের মধ্যে বিচরণ করিতেছিল। ধূসর, কালো এবং কপিশ বর্ণের বৃহদাকার হস্তিগণ দলবদ্ধ হইয়া বৃক্ষাদি ভগ্ন করিয়া ইতস্ততঃ বিচরণ করিতেছিল।
কেনেডি আনন্দে অধীর হইয়া কহিলেন—“দেখ, দেখ, কি সুন্দর হাতী। যদি নামতে পারতেম——এমন শিকার চলে’ যাচ্ছে!”
বেলুন চলিতে লাগিল। পর্ব্বতের কানন-সমাকুল অংশে অগণিত ক্ষুদ্র বৃহৎ জলধারা প্রবাহিত হইয়া হ্রদ মধ্যে পতিত হইতেছিল। হরিৎ, পীত, নীল, লাল, সবুজ, শ্বেত, নানাবর্ণের বিহঙ্গমগণ কলরব করিতে করিতে বৃক্ষ হইতে বৃক্ষান্তরে, শৈল হইতে শৈলান্তরে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়িয়া যাইতেছিল।
দ্বাদশ ঘণ্টা অতিবাহিত হইল। ভিক্টোরিয়া তখন একটী নদীবিধৌত জনপদে আসিয়া উপনীত হইয়াছিল। বহু দূরে অলণ্টিকা পর্ব্বতের চূড়া তখন দৃষ্টিগোচর হইতেছিল। ফার্গুসন্ বলিলেন—
“কোন য়ুরোপীয় এ পর্য্যন্ত ওই পর্ব্বতের উপর যেতে পারে নাই। শুনা যায় অলণ্টিকা পর্ব্বতের গা থেকেই আফ্রিকার পশ্চিমাংশের নদ নদী জন্মলাভ করেছে।”
বেলুন ক্রমেই সম্মুখে অগ্রসর হইতেছিল। সন্ধ্যার প্রাক্কালে মিনিক্ পর্ব্বতের দুইটি শৃঙ্গ দেখা গেল। ফার্গুসন্ একটি উচ্চ বৃক্ষশিরে বেলুন আবদ্ধ করিলেন। প্রবল ঝড়ে উহা এমন দুলিতে লাগিল যে, মনে হইতে লাগিল তাঁহারা বেলুন হইতে নিশ্চয়ই ভূতলে নিক্ষিপ্ত হইবেন। বেলুনে অবস্থান তখন একান্ত বিপজ্জনক ও কষ্টকর হইয়া উঠিয়াছিল।
পরদিন পর্য্যন্ত অল্প ঝড় ছিল। বেলুন নিরাপদে চলিতে লাগিল। বায়ুপ্রবাহ বেলুনকে মিনিক্ পর্ব্বতের দিকে লইয়া যাইতেছিল। ফার্গুসন্ কিছুতেই বেলুনের গতি ফিরাইতে পারিলেন না! চ্যাড-হ্রদ এবং নাইগার নদীর মধ্যস্থলে মিনিক্ পর্ব্বত একটি দূরতিক্রম্য প্রাকারের ন্যায় অবস্থিত। অল্পকাল মধ্যেই ভিক্টোরিয়া মিনিক্ শৈলের নিকটবর্ত্তী হইল। ফার্গুসন্ গ্যাসে তাপ দিতে লাগিলেন। বেলুন ৮০০০ ফিট উপরে উঠিল। দারুণ শীত বোধ হইতে লাগিল। তাঁহারা কম্বলে শরীর আচ্ছাদন করিয়া বসিলেন। পর্ব্বত অতিক্রম করিয়া ফার্গুসন্ সন্ধ্যার পূর্ব্বে একটি মুক্ত প্রান্তর মধ্যে নোঙ্গর করিলেন।
পরদিন যখন তাঁহারা মোসেইয়া নগরের নিকটবর্ত্তী হইলেন, তখন প্রভাত হইয়াছে।
দুইটি উচ্চ পর্ব্বতের মধ্যে মোসেইয়া নগর অবস্থিত! একদিকে কানন ও অপর দিকে কর্দ্দমপূর্ণ বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র। এতদুভয়ের মধ্য দিয়া মোসেইয়া নগর প্রবেশের একটি মাত্র পথ ছিল। মোসেইয়ার প্রধান শেখ তখন সদলবলে সেই পথে নগরে প্রবেশ করিতেছিলেন। তাঁহার শরীররক্ষক অশ্বারোহিগণ নানা বর্ণে সুরঞ্জিত পরিচ্ছদ পরিধানপূর্ব্বক অগ্রবর্ত্তী হুইয়াছিল। তাহাদিগের পুরোভাগে একদল বাদক বংশীবাদন করিতে করিতে যাইতেছিল। বংশীবাদকদিগের অগ্রে আর একদল শস্ত্রধারী পুরুষ পথিপার্শ্বে অবস্থিত বৃক্ষাদির শাখাপ্রশাখা কাটিয়া পথ পরিষ্কার করিতে করিতে চলিয়াছিল।
এই শোভাযাত্রা দেখিবার জন্য ফার্গুসন্ অনেকটা নীচে নামিলেন। নিগ্রোগণ যখন দেখিল যে, বেলুনটি ক্রমেই বৃহদাকার হইতেছে, তখন ভয়ে পলায়ন করিল! শেখ নড়িলেন না। তাঁহার সুদীর্ঘ বন্দুকে গুলি পূরিয়া স্থিরভাবে অবস্থান করিলেন।
ফার্গুসন্ ১৫০ ফিট উপরে থাকিয়া আরব্য ভাষায় শেখকে অভিনন্দন করিলেন। স্বর্গ হইতে আহ্বান-ধ্বনি আসিতেছে শুনিয়া, শেখ সসম্ভ্রমে আপন অশ্ব হইতে অবতরণ করিলেন এবং ভূলুণ্ঠিত হইয়া প্রণাম করিলেন।
কেনেডি জিজ্ঞাসা করিলেন—“এখানে কি কোনো দিন কোনো ইংরাজ এসেছিলেন?”
ফার্গুসন্ কহিলেন—“ এসেছিলেন বৈ কি! মেজর ডেনহাম এসেছিলেন। এখানে তিনি অত্যন্ত বিপদগ্রস্ত হয়েছিলেন। তাঁর যথাসর্ববস্ব লুণ্ঠিত হয়েছিল। একটা ঘোড়ার পেটের নীচে লুকিয়ে তিনি কোনো প্রকারে জীবন রক্ষা করেছিলেন।”
“আমরা এখন কোন্ দিকে যাচ্ছি, ফার্গুসন্?”
আমরা বার্ঘিমি রাজ্যের দিকে অগ্রসর হয়েছি। ভোগেল সেখানে গিয়েছিলেন। কেউ বলে, তিনি সেখানেই নিহত হয়েছিলেন, কেউ বলে, বন্দী অবস্থায় ছিলেন।”
“সম্মুখে যে উর্ব্বর প্রদেশটা দেখছি, এটা কোন্ দেশ? বাঃ কি সুন্দর ফুল ফুটেছে! এখানে দেখছি তুলার আবাদ হয়। নীলও দেখতে পাচ্ছি।”
“এর নাম মাণ্ডারা। ডাক্তার বার্থ এ প্রদেশের যে বর্ণনা করেছেন, তা’ দেখছি অক্ষরে অক্ষরে সত্য। ওই যে নদী দেখছ—কতকগুলি ঢোঙ্গা ভেসে আসছে—ওর নাম সারি নদী।”
অল্পকাল মধ্যেই বায়ুর বেগ মন্দীভূত হইয়া আসিল দেখিয়া ফার্গুসন্ কহিলেন—“আমরা কি এখানে আট্কে যাব না কি?”
“জলের ত আর অভাব নাই। যদি আট্কাই, তবেই বা এত ভয় কি?”
“জলের জন্য নয় ডিক্, মানুষের ভয় আছে!”
অদূরে একটী নগর দেখিয়া জো বলিল—“ওই যে নগর দেখা যাচ্ছে, ওর নাম কি?”
“ওটা কান্যাক্। এই খানেই হতভাগ্য পর্য্যটক টুলির বলি হয়েছিল! এ দেশকে য়ুরোপের সমাধিক্ষেত্র বল্লেও চলে।”
বেলুন কার্ন্যাকের উপর আসিল। পর্য্যটকগণ দেখিলেন, নিগ্রো তন্তুবায়গণ বৃক্ষশাখায় নবনির্ম্মিত বস্ত্র ঝুলাইয়া পিটিতেছে। নগরের বিস্তৃত রাজপথ এবং পথিপার্শ্বে নাগরিকদিগের শ্রেণীবদ্ধ গৃহাদি বেশ সুস্পষ্ট দেখা যাইতেছিল। একটী স্থানে দাসগণ বিক্রীত হইতেছিল। বেলুন দেখিয়া নিগ্রোগণ বিকট চীৎকার করিয়া উঠিল এবং পরক্ষণেই পলায়ন করিল।
ফার্গুসন্ আরো নিম্নে বেলুন নামাইলেন। দেখিলেন, নগরকোতোয়াল একটি নীল পতাকা হস্তে গৃহের বাহিরে আসিলেন। বাদকগণ ভীমনাদে বাদ্য করিতে লাগিল। শিঙ্গার শব্দে দিঙ্মণ্ডল প্রতিধ্বনিত হইয়া উঠিল। কতকগুলি নিগ্রো আসিয়া তাঁহাকে ঘিরিয়া দণ্ডায়মান হইল। নাগরিকদিগের ললাট উচ্চ, কেশদাম কুঞ্চিত, নাসিকা সুদীর্ঘ। তাহাদিগকে দেখিয়া বুদ্ধিমান্ এবং গর্ব্বিত বলিয়া মনে হইতে লাগিল। দেখা গেল, সৈন্যসমাবেশ হইতেছে। ফার্গুসন্ বুঝিলেন, বেলুনের সঙ্গে যুদ্ধ করাই তাহাদের উদ্দেশ্য।
জো নানা বর্ণের রুমাল লইয়া নানা ভাবে নাড়িতে লাগিল। তাহার ইচ্ছা সঙ্কেতে সন্ধির প্রস্তাব করে। উহারা সে সঙ্কেত বুঝিল না। কান্যাক-কর্ত্তা সমবেত জনমণ্ডলীকে কি যেন বলিলেন। ফার্গুসন্ এইটুকু মাত্র বুঝিলেন যে, নিগ্রোগণ তাঁহাদিগকে স্থান ত্যাগ করিতে বলিতেছে।
দুর্জ্জনের সঙ্গ ত্যাগ করিবার জন্য ফার্গুসন্ সর্বদাই প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু তাঁহাকে বহিবার মত বাতাস ছিল না। বেলুন চলিল না!
কাফ্রিরা অত্যন্ত কুপিত হইয়া উঠিল! কোতোয়ালের পারিষদবর্গ রোষে গর্জ্জন করিতে আরম্ভ করিল।
পারিষদদিগের পরিচ্ছদ অভিনব। তাহারা প্রত্যেকে পাঁচ ছয়টি করিয়া জামা গায়ে দিয়াছিল। ফার্গুসন্ বলিলেন—
“বৃহৎ উদর এবং পরিহিত জামার সংখ্যাই পারিষদদিগের ভিন্ন ভিন্ন রাজপদ সূচিত করে। যাহার উদর বৃহৎ নহে, সে নানাবিধ কৌশল অবলম্বনে বৃকোদররূপে সকলের সম্মুখে উপস্থিত হয়!”
তাহারা যখন দেখিল যে, ভয়-প্রদর্শনেও দৈত্য নড়িল না, তখন কাফ্রি তীরন্দাজগণ শ্রেণীবদ্ধ হইয়া দণ্ডায়মান হইল। বেলুন তখন অল্পে অল্পে উপরে উঠিতেছিল। কোতোয়াল স্বয়ং একটি বন্দুক লইয়া বেলুন লক্ষ্য করিতেছে দেখিয়া, কেনেডি অব্যর্থ সন্ধানে গুলি চালনা করিয়া তাহার বন্দুক ভাঙ্গিয়া দিলেন। এই আকস্মিক বিপদ্ দর্শনে যুদ্ধার্থী কাফ্রিগণ ঊর্দ্ধশ্বাসে পলায়ন করিল।
রাত্রি আসিল। তখনো বায়ুর বেগ বর্দ্ধিত হইল না। ফার্গুসন্ নগরের ৩০০ ফিট উচ্চে ভাসিতে লাগিলেন। নগরে আলোক মাত্র জ্বলিল না—শব্দমাত্র হইল না।
রজনী দ্বিপ্রহর হইল। অকস্মাৎ তাঁহারা দেখিলেন, সমগ্র কার্ন্যাক্ নগরে একটা বিপুল অগ্নিকাণ্ড উপস্থিত হইয়াছে। চারিদিক্ হইতে অসংখ্য অগ্নিমুখ খধূপ ঊর্দ্ধে উঠিতেছে। ভীষণ চিৎকার ও ঘন ঘন বন্দুকের ধ্বনির মধ্যে খধূপগুলি যেন বেলুন লক্ষ্য করিয়াই উপরে উঠিতেছিল।
অল্পক্ষণ মধ্যেই ফার্গুসন্ বুঝিলেন, যাহা তিনি খধূপ মনে করিয়াছিলেন, তাহা খধূপ নহে—পারাবত। শত সহস্র পারাবতের পুচ্ছে দাহ্য পদার্থ বাঁধিয়া দিয়া কাফ্রিরা বেলুন আক্রমণ করিবার জন্য উড়াইয়া দিয়াছিল। পারাবতগণ বেলুন দেখিয়া ভীত হইয়া তীর্য্যগ্ ভাবে উড়িতেছিল। মনে হইতেছিল, অন্ধকার আকাশ গাত্রে শত সহস্র অগ্নিরেখা তীর্য্যগ্ ভাবে ঘুরিতেছে। পারাবতগুলি ক্রমে বেলুনের চতুদ্দিক্ ঘিরিয়া ধরিল। বেলুন সেই অনল-সমুদ্রে ভাসিতে লাগিল।
ফার্গুসন্ তন্মুহূর্ত্তেই কিছু ভারা নিক্ষেপ করিয়া অনেক উপরে উঠিয়া গেলেন। পারাবতগুলি প্রায় দুই ঘণ্টা পর্য্যন্ত শূন্যে ভ্রমণ করিয়া শেষে নামিয়া পড়িল।
ফার্গুসন্ বলিলেন—“এখন আর চিন্তা নাই। এস, ঘুমানো যাক। এদের কৌশলটা বেশ। যুদ্ধের সময় ওরা অমনি করে’ শত্রুর গৃহে অগ্নি সংযোগ করে।”
নির্বিঘ্নে রজনী প্রভাত হইল। প্রভাতে ফার্গুসন্ বলিলেন—
“আমাদের কপাল ফিরেছে, ডিক্। আমরা বোধ হয়, আজই আবার চ্যাড হ্রদ দেখতে পাব।”
“এতদিন পাহাড়, প্রান্তর, কানন, মরুভূমির উপর দিয়ে এসেছি। এখন জলের উপর দিয়ে গেলে একটু নূতন হ’বে বটে।”
“আমরা ১৮ই এপ্রিল জান্জিবার ছেড়েছি। আজ ১২ই মে। বেলুনের উপরই ত এ কয়দিন কেটে গেল! আর দশ দিনেই আমরা পৌঁছে যাব।”
“কোথায়?”
“তা’ জানি না।”
ভিক্টোরিয়া তখন সারি নদীর উপর দিয়া যাইতেছিল। নদীর উভয় তীর বৃক্ষসমাচ্ছন্ন। নানা বর্ণের নানা রকমের লতা সেই সকল বৃক্ষ আশ্রয় করিয়া উঠিয়া নদীতীর অতি মনোরম করিয়া তুলিয়াছিল। যে দিকে দৃষ্টি চলে সেই দিকেই বন—সেই দিকেই গন্ধ, সেই দিকেই শোভা। স্থানে স্থানে দুই একটা কুম্ভীর গা ভাসাইয়া রৌদ্র পোহাইতেছিল—কোথাও বা তীব্র জলোচ্ছ্বাস করিয়া ডুব দিতেছিল।
বেলা নয়টার সময় বেলুন চ্যাড হ্রদের দক্ষিণ তীরে আসিয়া উপনীত হইল।